||আবদুল্লাহ তামিম||
একই মঞ্চে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের জড়ো করে বেশ আলোচনায় এসেছে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
গত ২ জানুয়ারি ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলটির জাতীয় সম্মেলন বেশ সাড়া ফেলেছে। তবে সেই মঞ্চে ইসলামি দলগুলোর উল্লেখযোগ্য কোনো প্রতিনিধিকে দেখা যায়নি । প্রশ্ন উঠেছে, শীর্ষ এই ইসলামি দলটির সম্মেলন কী কারণে আসেননি অপরাপর ইসলামি দলগুলোর নেতারা?
বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা সম্মেলনে দাওয়াত পাওয়ার কথা জানালেও যোগ না দেওয়ার পেছনে ভিন্ন ভিন্ন কারণ উল্লেখ করেছেন। আর ইসলামী আন্দোলন বলছে, তারা সবাইকে যথাযথভাবেই দাওয়াত করেছিল। তবে কারও আসা না আসা সেটা তাদের ব্যাপার। ইসলামি দলগুলোকে সঙ্গে নিয়েই তারা সামনে এগোতে চান।
ইসলামী আন্দোলনের সম্মেলনে যোগ না দেওয়া প্রসঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া আওয়ার ইসলামকে বলেন, দাওয়াত পেয়েছি কি পাইনি এটা মূল বিষয় না। দাওয়াত দিলেই যে যেতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই। প্রত্যেকটি দলেরই ভিন্ন স্বকীয়তা আছে, কর্মপন্থা আছে। তারা দাওয়াত দেওয়াকে ভালো মনে করেছেন, তাই দাওয়াত দিয়েছেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমরা এ বিষয়ে কোনো কার্ড বা দাওয়াত পাইনি। আমি তো দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
এ ব্যাপারে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমরা দাওয়াত পেয়েছি। তবে আমার ব্যক্তিগত প্রোগ্রাম আগ থেকে সেট থাকায় যেতে পারিনি।
খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী আওয়ার ইসলামকে বলেন, আমরা তো দাওয়াত পেয়েছি। দলের কোনো বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমাদের আমির অসুস্থ, তাই কোনো প্রোগ্রামে যান না। আর মহাসচিবের ব্যক্তিগত কোনো কাজের কারণে হয়ত যেতে পারেননি।
তবে সম্মেলনে সবাইকে দাওয়াত দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলন আমরা সফলভাবে শেষ করতে পেরেছি সেজন্য মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই। আমরা জাতীয় এই সম্মেলনের আগে প্রতিটি দলের প্রতিনিধির কাছে চিঠি পাঠিয়েছি। দাওয়াতনামা পাঠিয়েছি। অনেকের কাছে আমরা সরাসরি গিয়ে দাওয়াত দিয়েছি। বাংলাদেশের সরকারি দল, বিরোধী দল, জাতীয় পার্টি, এবি পার্টি, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিসহ অনেকগুলো দলের প্রতিনিধি এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, তবে কী কারণে ইসলামি দলগুলোর প্রতিনিধিরা আসেনি এটা আমি জানি না। আমরা সম্মেলনের আগে সংবাদ সম্মেলন করেও সবাইকে অবগত করেছি। যথাসাধ্য চেষ্টা আমরা করেছি সবার কাছে দাওয়াত পৌঁছাতে। দাওয়াত পৌঁছানোর পরও কেন আসেনি এটা তো আমরা বলতে পারি না। তবে হুট করে শনিবারে আমরা সম্মেলন করার অনুমতি পাওয়ায় সবার কাছে আলাদা আলাদাভাবে আরও ভালো করে দাওয়াত পৌঁছাতে পারিনি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাতীয় এই সম্মেলন থেকে উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণে ১৯ দফা প্রস্তাব এবং ১৫ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। এছাড়াও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীমকে দলের আমির এবং মাওলানা ইউনুছ আহমাদকে মহাসচিব পদে পুনঃনির্বাচিত করা হয়। সম্মেলনে ১১ সদস্যের প্রেসিডিয়াম, ৭৩ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ, ২২ সদস্যের উপদেষ্টা, মহিলাসহ ৭৩ সদস্যের নির্বাহী পরিষদ ঘোষণা করা হয়।
-এটি