রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের নতুন নির্বাচন কমিশন প্রত্যাখ্যান জাতীয় নাগরিক কমিটির

আল্লাহ তায়ালার রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আলহাজ হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আজিজুল হক।।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘ওয়া লিল্লাহিল আসমাউল হুসনা ফাদঊহু বিহা’ অর্থাৎ আল্লাহর জন্যই সব উত্তম নাম নির্ধারিত রয়েছে। অতএব তোমরা তাঁকে সেসব নামেই ডাক। (সূরাঃ আর’রাফ,আয়াতঃ ১৮০) ‘আসমায়ে হুসনা’ বা উত্তম নাম বলতে সে সমস্ত নামকে বোঝানো হয়েছে, যা গুণ-বৈশিষ্ট্যের পরিপূর্ণতার সর্বোচ্চ স্তরকে চিহ্নিত করে।

বলাবাহুল্য, কোন গুণ বা বৈশিষ্ট্যের সর্বোচ্চ স্তর যার ঊর্ব্ধে আর কোনো স্তর থাকতে পারে না, তা শুধুমাত্র মহান পালনকর্তা আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। আর আল্লাহকে ডাকার সে পদ্ধতিও বলে দেওয়া হয়েছে যে, শুধুমাত্র সেসব আসমায়ে হুসনা বা উত্তম নামে ডাকবে যা, আল্লাহর নাম বলে প্রমাণিত (মাআরিফুল কুরআন)।

উপরোক্ত আয়াতের পরবর্তী বাক্যে বলা হয়েছে, সেসব লোকদের বর্জন করুন, যারা আল্লাহ তায়ালার আসমায়ে হুসনার ব্যাপারে বাঁকা পথ অবলম্বন করে। আর বক্র পথ হচ্ছে, আল্লাহর প্রতি এমন নাম বা গুণ প্রয়োগ করা যার অনুমতি শরীয়ত দেয়নি, অথবা গাইরুল্লাহর প্রতি তার বিশিষ্ট নাম ও গুণের প্রয়োগ করা বা আসমায়ে হুসনার অপব্যাখ্যা ও অপরিবিশ্লেষণ করা।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে ব্যক্তি এসব নাম স্মরণ-আয়ত্ত করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (বুখারী, মুসলিম) (১। আল-হায়্যুঃ চিরঞ্জীব; ২। আল-কায়্যুমুঃ স্ব-প্রতিষ্ঠ; সংরক্ষণকারী। ৩। আল-হাক্কুঃ সত্য; ৪। আল-আওয়ালুঃ প্রথম অর্থাৎ অনাদি; ৫। আল-আখিরুঃ শেষ অর্থাৎ অনন্ত; ৬। আল-বাকীঃ চিরস্থায়ী; ৭। আয্-যাহিরুঃ প্রকাশ্য; ৮। আল-বাতিনুঃ গুপ্ত; ৯। আল-আলীমুঃ মহা জ্ঞানী; ১০। আল-খবীরুঃ সর্বজ্ঞ; ১১। আল-লাতীফুঃ সুক্ষèদর্শী; ১২। আল-হাকীমুঃ প্রজ্ঞাময়; ১৩। আল-ওয়াছিউঃ সর্বব্যাপী; ১৪।

আল-মালিকুঃ অধিপতি, সম্রাট; ১৫। মালিকুল মুল্কঃ সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক; ১৬। আল-মুইয্যুঃ সম্মানদাতা; ১৭। আল-মুযিল্লুঃ অপমানদাতা বা সম্মান হরণকারী; ১৮। আল-খাফিযুঃ অবনতকারী; ১৯। আর-রাফিউঃ উন্নয়নকারী; ২০। আল-ক্বাদিরুঃ শক্তিশালী; ২১। আল-মুকতাদিরুঃ পূর্ণ ও স্বয়ংক্রিয় শক্তির অধিকারী; ২২।

আল- ক্বাবিয়্যুঃ অসীম ও অটুট ক্ষমতার অধিকারী; ২৩। আল-মাতীনুঃ সুস্থিত এবং অসম ক্ষমতার অধিকারী; ২৪। আল-আযীযুঃ পরাক্রমশালী; ২৫। আল মানিউঃ প্রতিরোধকারী; ২৬। আল-কাহ্হারুঃ মহাপরাক্রান্ত; ২৭। আল-জাব্বারুঃ প্রবল বিক্রমশালী; ২৮। আস্ সামীউঃ সর্বশ্রোতা; ২৯। আল-বাছীরুঃ সম্যক দ্রষ্টা; ৩০। আল-খালিকুঃ স্রষ্টা; ৩১।

আল-মুবদিউঃ আদি স্রষ্টা; ৩২। আল-বারিউঃ উদ্ভাবনকর্তা; ৩৩। আল-মুসাওবিরুঃ আকৃতিদাতা; ৩৪। আল-বাদীউঃ নমূনাবিহীন সৃষ্টিকারী; ৩৫। আন্ নূরুঃ জ্যোতির্ময়; ৩৬। আল-হাদীউঃ পথ প্রদর্শক; ৩৭। আর-রাশীদুঃ সত্যদর্শী; ৩৮। আল-মুহ্য়ীঃ জীবনদাতা; ৩৯। আল-ওয়াহিদুঃ একক; ৪০। আল-আহাদুঃ এক অদ্বিতীয়; ৪১। আল-মুকীতুঃ আহার্যদাতা; ৪২। র্আ-রায্যাকুঃ রিযিক্দাতা; ৪৩। আল-বাসিতুঃ সম্প্রসারণকারী; ৪৪। আল-ক্বাবিযুঃ সংকোচনকারী; ৪৫। আল-ফাত্তাহুঃ উন্মুক্তকারী; ৪৬। আল-হাফীযুঃ সংরক্ষণকারী; ৪৭।

আল-মু’মিনুঃ নিরাপত্তা বিধায়ক; ৪৮। আস্-সালামুঃ নিরাপদ, শান্তিময়; ৪৯। আল-মুহাইমিনুঃ রক্ষক, নেগাহবান; ৫০। আল-ওয়ালীঃ অধিপতি; ৫১। আল-ওয়াকীলুঃ কর্মবিধায়ক; ৫২। আল-ওয়াহ্হাবুঃ মহানুভবদাতা; ৫৩। আল-কারীমুঃ উদারদাতা; ৫৪। আল-গ্যানিয়্যুঃ অভাবমুক্ত বা মুখাপেক্ষীহীন; ৫৫। আল-মুগ্নীয়ুঃ অভাব মোচনকারী; ৫৬। আল-ওয়াজিদুঃ প্রাপক; ৫৭। আন্-নাফিউঃ কল্যাণকারী; ৫৮। আয্-যাররুঃ অকল্যাণের মালিক; ৫৯। আল-র্বারুঃ নেকময়; ৬০।

আল-মুমীতুঃ মৃত্যুদাতা; ৬১। আল-ওয়ারিসুঃ স্বত্বাধিকারী; ৬২। আল-মুঈদুঃ পুনঃসৃষ্টিকারী; ৬৩। আল-বা’ইছুঃ পুনরুত্থানকারী; ৬৪। আল-জামিউঃ একত্রকরণকারী; ৬৫।

আল-হাসীবুঃ হিসাব গ্রহণকারী; ৬৬। আল-মুহ্সীঃ পুংখানুপুংখ হিসাব গ্রহণকারী; ৬৭। আশ-শাহীদুঃ প্রত্যক্ষকারী; ৬৮। আর রাকীবুঃ পর্যবেক্ষণকারী; ৬৯। আল-হাকামুঃ মীমাংসাকারী; ৭০। আল-আদ্লুঃ ন্যায়নিষ্ঠ; ৭১। আল-মুকসিতুঃ ন্যায়পরায়ণ; ৭২। আশ্ শাকূরুঃ গুণগ্রাহী; ৭৩। আল-ওয়ালিয়্যুঃ সাহায্যকারী, বন্ধু, অভিভাবক; ৭৪। যুল জালালি ওয়াল ইক্রামঃ আযমত ও জালালের অধিকারী, একরাম করনেওয়ালা; ৭৫। আল-ওয়াদূদুঃ প্রেমময়; ৭৬। আল-মুকাদ্দিমুঃ অগ্রবর্তীকারী; ৭৭। আল-মুআখ্খিরুঃ পশ্চাদবর্তীকারী; ৭৮। আল-মুনতাকিমুঃ শাস্তিদাতা; ৭৯। আস-সাবূরুঃ ধৈর্যশীল; ৮০। আল-হালীমুঃ সহিষ্ণু; ৮১। আল-আফুউঃ ক্ষমাকারী;

৮২। আল-গাফ্ফারুঃ পরম ক্ষমাশীল; ৮৩। আল-গাফূরুঃ পরম ক্ষমাকারী; ৮৪। আত-তাওয়াবুঃ তওবা কবূলকারী; ৮৫। আল-মুজীবুঃ কবূলকারী; ৮৬। আর-রহীমুঃ অতি দয়ালু; ৮৭। আর-রহ্মানুঃ অত্যন্ত দয়াময়; ৮৮। আর-রাঊফুঃ সীমাহীন দয়ালু; ৮৯। আল-কুদ্দূসুঃ পবিত্র; ৯০। আল-জালীলুঃ পূর্ণাঙ্গ মহিমাময়; ৯১। আল-মাজীদুঃ গৌরবময়; ৯২। আল-মুতাকাব্বিরুঃ সুউচ্চ, সমুচ্চ গৌরবময়তার অধিকারী; ৯৩। আল-মুতা’আলীঃ সর্বোচ্চ মর্যাদাবান; ৯৪।

আল-মাজীদুঃ এককতম মহান; ৯৫। আস্-সামাদুঃ অনপেক্ষ; ৯৬। আল-হামীদুঃ প্রশংসিত; ৯৭। আল-কাবীরুঃ সর্বাধিক বড়ত্বের অধিকারী; ৯৮। আল-আলিয়্যূঃ সর্বোচ্চ মর্যাদাবান; ৯৯। আল-আযীমুঃ সর্বোচ্চ মাহাত্মের অধিকারী;) আল্লাহ তায়ালার নিরানব্বই নাম পাঠান্তে যে উদ্দেশ্যের জন্যই প্রার্থনা করা হয়, তা কবুল হয় (তাফসীরে জালালাইন)। উল্লখ্য, পবিত্র কুরআন ও হাদীসে এ ছাড়া আল্লাহ্ তাআলার আরও কিছু গুণবাচক নামের উল্লেখ পাওয়া যায়।

যেমনঃ ১। আর-রব্বুঃ প্রতিপালক; ২। আল-মুন্ইমুঃ নেয়ামত দানকারী; ৩। আল্-মু‘তীঃ দাতা; ৪। আস্-সাদিকুঃ সত্যবাদী; ৫। আস্-সাত্তারুঃ গোপনকারী; ‘আল-আসমাউল হুসনা’-র যথাযথ বাংলা অনুবাদ হয় না। এখানে যে বাংলা অনুবাদ দেয়া হয়েছে তা ইংগিত মাত্র। আসমায়ে হুসনার মধ্য থেকে কিছু সংখ্যক গুণ আল্লাহ্র জন্য সত্তাগত, অনাদি-অনন্ত, ব্যাপক ও অসীম। আর মানুষের জন্য এগুলো আল্লাহ্ প্রদত্ত অস্থায়ী ও সীমিত।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ