কবি মুসা আল হাফিজ।।
আলী ইমাম ভাইয়ের প্রায় বিশটা বই প্রকাশ করে ঝিঙেফুল। ২০১৪ থেকে আমার বইও আনতে শুরু করে এ প্রকাশনী। ঝিঙেফুলেই তাঁর সাথে পরিচয় এবং ক্রমেই অন্তরঙ্গতা।
আমি এই গুণী লেখকের কথাশিল্পের বিমোহিত পাঠক ছিলাম কৈশোরেই। তিনি আমার কৈশোরকে পাখির ডাক, পাতা ঝরার করতালি, বুনোফুলের গন্ধ আর রহস্যময় আলো-অন্ধকার দিয়ে মাতিয়ে রেখেছিলেন।
আলী ইমামকে জানিয়েছিলাম সেই মুগ্ধতার কথা। তিনি হেসেছিলেন। যেন এটি ঘটেছে, আগ থেকেই তিনি জানতেন। আমরা কথা বলতাম কথাশিল্প নিয়ে, শিশুসাহিত্য নিয়ে, কখনো কবিতা নিয়েও! শিশুদের বিজ্ঞান সিরিজের অনেকগুলো বই লিখেছেন তিনি। বিজ্ঞান সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি এবং মুসলিম সভ্যতার লিগ্যাসি নিয়েও কথা হতো।
শেখ সাদী, হুসাইন ইবনে মনসুর হাল্লাজ, জালালুদ্দীন রুমী, আবদুর রহমান জামী প্রমুখকে নিয়ে আমার কাজগুলোর প্রতি তাঁর আন্তরিক মূল্যায়নকে তিনি গোপন রাখেননি।
ক‘দিন আগে ঝিঙেফুলের কর্ণধার গিয়াস উদ্দীন এলেন। বললাম আলী ইমাম কেমন আছেন? জানালেন খুব অসুস্থ।
কোন দিন দেখতে যাবো, কীভাবে যাবো, এ নিয়ে কথা হলো। কিন্তু আর দেখতে যাওয়া হলো না। তিনি চলে গেলেন। বাংলা কথাশিল্পের এক সম্পন্ন শিল্পী। তার জমিদারির এরিয়া ফুলের গন্ধে আর চিরল চিরল পত্রাবলীর বিরল নৃত্যে প্রাণচঞ্চল। এরই মধ্যে মালার বৃত্ত তৈরী করে উড়ে যাচ্ছে একপাল সরালি হাস। প্রান্তরে গাইছে নীলকণ্ঠ পাখি, কাঁপছে নীলিমা! মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতবাসী করুন। আমীন।
-এটি