আবদুল্লাহ তামিম: আল্লাহ তায়ালা মানুষকে একমাত্র তার ইবাদাতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। এজন্য কিছু বিধান আরোপ করেছেন, যাতে সকল কার্যকলাপ ইবাদত হয়ে যায়। খেলাধুলা’র উদ্দেশ্য যদিও বিনোদন তবুও খেলাতে যদি শরীর চর্চা অথবা মেধা বিকাশের মাধ্যমে থাকে তাহলে ইসলাম খেলার অনুমতি দিয়েছে।
হাদিসে লক্ষ্যভেদ অর্জন ও সাঁতার অনুশীলনকে উত্তম খেলা বলা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে খেয়াল করতে হবে যেন ফরজ, ওয়াজিব ছুটে না যায় এবং অধিক সময় খেলায় ব্যায় করা না হয়। সতর না খোলা হয়।
অন্যের হকের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। পরস্পরে বাক-বিতন্ড, কটুবাক্য, গালাগালি, রাগারাগি ইত্যাদি আচরণ যেন না হয় এবং কোনো ধরনের অশ্লীলতার মিশ্রণ না ঘটে। যথা- নাচ-গান বাদ্য-বাজনা ইত্যাদি। কারণ এসব গর্হিত কাজ তা ইবাদত থেকে গাফেল রাখে। তেমনি সমাজে অশ্লীলতা, বেলাল্লাপনার দ্বার উম্মোচন করে। আর এসব গর্হিত কাজে সমাজের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে।
খেলার জন্য পুতুল কেনার বিধান
নির্ভরযোগ্য মত হলো, খেলার উদ্দেশেও ছোট ছেলে মেয়েদের কোনো প্রাণীর পুতুল (চাই মাটির তৈরি হোক বা প্লাস্টিকের) কিনে দেয়া জায়েজ নেই।(আদ-দুররুল মুখতার-৫/২২৬, জাওয়াহিরুল ফিকহ ৩/২৬৬-২২৭)
ক্রিকেট খেলার বিধান
যে কোনো ধরনের খেলা নিম্ন প্রদত্ত শর্তসাপেক্ষে জায়েজ আছে।১. খেলার একমাত্র শরীর চর্চা ও মানসিক প্রফুল্লতার উদ্দেশ্যে হওয়া। ২. খেলাধুলাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ না করা। ৩. খেলায় জুয়া না থাকা। জয়ী পক্ষকে পরাজিত পক্ষ হতে কোন ধরনের অর্থ প্রদানের শর্ত করা। ৪. শরয়ী সতরের সীমারেখা লংঘন না করা। ৫. শারীরিক ক্ষতি বা অঙ্গহানির আশঙ্কা না থাকা উল্লিখিত শর্তাবলী পাওয়া না গেলে কোনো খেলাই জায়েজ নেই। আর বর্তমানে প্রচলিত ক্রিকেট খেলায় উপরোক্ত শর্তসমূহ পাওয়া গেলে তা জায়েজ হবে। (আল-মাওসূয়াতল ফিক্বহিয়্যা-৩৫/২৬৮, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া- ২৯/২৬৯)
খেলায় জয়লাভের জন্য দুয়া করার বিধান
বর্তমান ক্রিকেট বা ফুটবল খেলায় একাধিক শরীয়ত বিরোধী কাজ থাকায় তা নাজায়েজ। আর শরীয়তে নাজায়েজ কাজের প্রার্থনা করাও নাজায়েজ। তাই খেলায় কোনো এক পক্ষ জেতার দুয়া করাও নাজায়েজ হবে।(ফাতাওয়া শামী-৯/৫৬৫, আল-মাওসূয়াতল ফিক্বহিয়্যা-২/২৬৫)
দাবা খেলার বিধান
হানাফী মাযহাব মতে দাবা খেলা জায়েজ নেই (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৫২)
ক্যারাম বোর্ড খেলার বিধান
যে সমস্ত কাজে দুনিয়া, আখেরাত ও স্বাস্থ্যগত কোনো উপকার নেই, ঐ সমস্ত অনর্থক কাজে সময় ব্যয় করা শরীয়তে নিষেধ। ক্যারাম বোর্ড খেলায় কোনো ধরণের উপকারিতা না থাকায় তা নাজায়েজ। (আল বাহরুর রায়েক-৮/১৮৯, ফাতাওয়া শামী-৬/৩৯৫)
প্রাণীর খেলা দেখানোর বিধান
সাপ, বেজি, বানর ইত্যাদির খেলা দেখা, দেখানো এবং বিনিময় দেয়া ও নেয়া জায়েজ নেই।(ফাতাওয়া শামী-৬/৩৪৯, আহসানুল ফাতাওয়া- ৮/২০৭)
-এটি