আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে উত্তপ্ত আলোচনা হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরা হবে।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে বিএনপির সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমান যে পরিমাণ লুটপাট করেছে সেই হিসাব আমাদের কাছে রয়েছে। নির্বাচন সামনে আসতেছে তো, প্রস্তুত থাকেন। সব দেখাবো।
বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, প্রতিমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত সরকারের কথা কমপক্ষে ৫০ বার বলেছেন, যা প্রসঙ্গেই নেই। আপনি জানাবেন, বিএনপি সরকারের আমলে বিদ্যুৎ, গ্যাসের দাম কত ছিল? দায়মুক্তি কেন, ১৫ বছর ধরে কেন বজায় রেখেছেন? বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে হরিলুট ও ভয়ানক অব্যবস্থাপনা চলছে। আপনি ভূতের মুখে রামনাম গল্প শোনায়েন না।
হারুনুর রশিদ বলেন, আমি আপনার কাছে স্পষ্ট জানতে চাচ্ছি বিএনপির সরকার গ্যাসের যে চুক্তি করেছে, সেটা আছে কি না? সেটা সংসদে উপস্থাপন করবেন। বিএনপির আমলে নিত্যপণ্যের দাম কত ছিল তার উত্তর দিন। শুধু বিএনপি জোট সরকারের সময় এই হচ্ছে, ওই হচ্ছে গল্প শোনাচ্ছেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে সংসদে জ্বালানি নিয়ে আলোচনার করে প্রস্তাবে তিনি আরও বলেন, প্রশ্নোত্তর পর্ব, এ ধরনের বিবৃতি হয় না। বিদ্যুৎ খাতে কী করেছেন, সেই বিষয়গুলো বলেন। মানুষ বিদ্যুৎ নিয়ে হাহাকার করছে। জ্বালানি উপদেষ্টা বলছেন, দিনের বেলা বন্ধ রেখে রাতে বিদ্যুৎ দেবেন। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস জনগণকে দিন। এটা প্রশ্নোত্তর পর্ব। ৩০০ বিধিতে বিবৃতি নয়।
এ সময় স্পিকার, তাকে (হারুনুর রশীদ) প্রশ্ন করতে অনুরোধ করেন। পরে সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বিএনপি সরকারের সময় গ্যাস, বিদ্যুৎ ও নিত্যপণ্যের দাম কত ছিল?
জবাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সংসদ সদস্য (হারুনুর রশীদ) অনেক উত্তেজিত হয়ে গেছেন। অনেকে সত্য কথা সহজে নিতে পারেন না। আমিও চাই সংসদে সময় দেন। সেখানে জ্বালানি নিয়ে কথা বলব।
জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, নাইকো মামলা নিয়ে যে পরিমাণ প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। তাদের নেতা তারেক রহমানের বন্ধু এবিআইয়ের কাছে যে পরিমাণ ওপেন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সেগুলো আমরা দেখাবো। সেই সময় আমি তার (হারুনুর রশীদ) বক্তব্য শুনতে চাই, তিনি কী বলেন। সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্টে যে পরিমাণ টাকা চুরি করেছে, সেগুলোর প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। সেগুলোই ডকুমেন্টসহ সংসদের ভিডিও স্ক্রিনে তাদের দেখাবো।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি জোট সরকারের সময় অন্ধকারে ১৭ ঘণ্টা ছিলেন। উনি (হারুনুর রশীদ) বিদ্যুতের দামের কথা বলেন। আরে অন্ধকারে থাকার যে খরচ, সেই খরচের কথা বলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, উনি (হারুনুর রশীদ) ভুলে গেছেন। ৪৪ শতাংশ অপচয় ছিল। এটা দুর্নীতির মধ্যে পড়ে। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন কি খামোখা হয়েছে তারা। বাংলাদেশ এখন ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়। বাংলাদেশ উদাহরণ হয় বিশ্বের কাছে… সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়। আর ওনারা (বিএনপি) করেছেন দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন। আরে ভাই আপনারা তো খাদ্যই দিতে পারেন নাই। গুলি করে মানুষ মেরেছেন। আবার, দামের কথা জিজ্ঞেস করেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আপনারা ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎই দিতে পারেন নাই। কানসাটে গুলি করে মানুষ মেরেছেন। আমার এখনও খেয়াল আছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া টঙ্গীতে গেছেন বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করতে। তিনি ঢাকায় পৌঁছাতে পারেননি, সেটা বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আমি জানি না, কোন মুখে আপনারা কথা বলার সাহস করেন। হয়তো লজ্জা-শরম আপনাদের মাঝে নাই। ঘণ্টা পর ঘণ্টা বলত পারব। তথ্য না শুধু প্রমাণাদিসহ।
-এএ