আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: এক বছরের বেশি সময় বন্ধের পর পুনরায় উন্মুক্ত হয়েছে কাতারের দোহায় অবস্থিত দ্য মিউজিয়াম অব ইসলামিক আর্ট।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) কাতার বিশ্বকাপ উপলক্ষে আরব বিশ্বের শোকেস হিসেবে চালু হয় মধ্যপ্রাচ্যের আকর্ষণীয় ও সর্বাধুনিক এ জাদুঘর। গত বছরের মে মাসে অভ্যন্তরীণ সংস্কারকাজের জন্য জাদুঘরটি বন্ধ রাখা হয়। সংস্কারের পর তাতে ১৮টি অত্যাধুনিক গ্যালারিতে ইসলামের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও শিল্পকলা সংযুক্ত করা হয়।
গতকাল অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, কাতারের আমির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মুহাম্মদ বিন আবদুর রহিম, মিউজিয়ামের চেয়ারম্যান শাইখা আল-মায়াসা বিন খালিফা আল-সানিসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ববর্গ। দ্য পেনিনসুলা সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
জাদুঘরটির পরিচালক জুলিয়া গোনিলা বলেন, ‘এটি এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ইসলামী শিল্পকলা জাদুঘর।
তা আরববিশ্বের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। এ জাদুঘর পরিদর্শনের মাধ্যমে ইসলামী সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। এখানে বিশ্বের নানা স্থান থেকে সংগৃহীত ১৪০০ শতাব্দীর ইসলামী শিল্প ও প্রত্নতত্ত্ব প্রদর্শনী রয়েছে। ’ গোনিলা আরো বলেন, ‘আগে তা শুধু শিল্পকলাকেন্দ্রিক জাদুঘর ছিল। এখন তাতে সাংস্কৃতিক অংশ যুক্ত করা হয়েছে। আমরা চাই সব দুর্লভ দুর্দান্ত বস্তুগুলোর পেছনের গল্পগুলো দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরতে। ’
আগামী ২০ নভেম্বর থেকে আরব বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে কাতারে বিশ্বকাপ শুরু হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে দেশটিতে স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়। দর্শনার্থীদের জন্য বর্ণিল সাজে সাজানো হয় পুরো দেশকে। খেলার উৎসবকে ঘিরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও নেতৃত্ব দিতে শুরু করেছে রাজধানী দোহা। এরই অংশ হিসেবে পাবলিক আর্ট, কাতার অলিম্পিক ও স্পোর্টস মিউজিয়াম খোলা হয়।
দোহা উপসাগরের দক্ষিণ প্রান্তের কৃত্রিক উপদ্বীপে দ্য মিউজিয়াম অব ইসলামিক আর্ট বা ইসলামী শিল্পকলা জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। এখানে ইসলামী ইতিহাসের বিভিন্ন যুগ অনুযায়ী আলাদা গ্যালারিতে রয়েছে আরব ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র, শিলালিপি, তৈজসপত্র, গহনা, অস্ত্র, পাণ্ডুলিপি।
জাদুঘরের পাশাপাশি এখানে রয়েছে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার যেখানে আরবি ও ইংরেজি ভাষার দেড় লাখের বেশি বই রয়েছে। তা ছাড়া বিশ্বের প্রায় ২০০ দুর্লভ বই রয়েছে, যা আর কোথাও পাওয়া যাবে না। সেখানে শিশুদের জন্যও রয়েছে পৃথক পাঠাগার।
৪৫ হাজার বর্গমিটার স্থানজুড়ে নির্মিত পাঁচতলা জাদুঘরের ভেতরের অংশগুলো কাচ দিয়ে সাজানো। এর এক পাশ থেকে আরেক পাশে যেতে হয় কাচের তৈরি সিঁড়ি দিয়ে।
মাঝখানে রয়েছে ১৬৪ ফুট উঁচু গম্বুজ। ২০০০ সালে জাদুঘরটির নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ২০০৮ সালে তা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এর নকশা করেছেন ৯১ বছর বয়সী চীনা বংশোদ্ভূত মার্কিন স্থপতি আই এম পাই। নকশা চূড়ান্ত করার আগে তিনি বিভিন্ন মুসলিম দেশে প্রায় ছয় মাস ভ্রমণ করেন বিভিন্ন জাদুঘর ও মুসলিম স্থাপত্য ও ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। সূত্র: দ্য পেনিনসুলা
-এটি