বর্তমানে মহিলাদের থাইরয়েডের সমস্যা বেশি দেখা যায়। বিশেষ করে মেনোপজের সময় এবং তারপরে। তবে এখন মহিলা-পুরুষ সকলেই এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষেই একটা ধারণা থাইরয়েড কেবলমাত্র বড় বয়সেই হয়। তবে এর নির্দিষ্ট কোনও বয়স নেই। শিশুদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে ভ্রূণ অবস্থাতেই থাইরয়েড গ্রন্থির বিকাশ শুরু হয়ে যায়। অনেকের মধ্যে জন্ম থেকেই থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে শিশুর থাইরয়েড গ্রন্থি ঠিকমতো পরিণত হয় না। ফলে অপরিণত থাইরয়েড গ্রন্থি শরীরে পর্যাপ্ত থাইরয়েডের জোগানও দিতে পারে না। থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে হরমোনের নিঃসরণ স্বাভাবিক না হওয়ায় শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি সব পিছিয়ে থাকে। শিশুর মধ্যে থাইরয়েডের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে কিনা মা-বাবাকে খেয়াল রাখতে হবে।
জেনে নিন শিশুদের মধ্যে থাইরয়েডের লক্ষণ:
১. হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত শিশুরা দিনের বেশিরভাগ সময়ই ঘুমাতে থাকে এবং একেবারেই খেতে চায় না। তবে অনেক শিশুর মধ্যে থাইরয়েড না হলেও একই রকম লক্ষণ দেখা যায়
২.থাইরয়েডে আক্রান্ত কিছু নবজাতক জন্মের পর থেকে দীর্ঘস্থায়ী জন্ডিসে ভোগে।
৩. থাইরয়েডে আক্রান্ত শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধিতে ভুগতে পারে
৪. তাদের কম মাশেল টোন, ঠাণ্ডা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং স্নায়বিক বিকাশ দুর্বল থাকতে পারে। জন্মের সময় কোনও শিশুর থাইরয়েড সমস্যা থাকলে, তার স্বাভাবিক বিকাশ ব্যহত হতে পারে।
এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে থাইরয়েড পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো। প্রথম থেকে যদি এর চিকিত্সা শুরু করা যায়, তাহলে CHT(Congenital hypothyroidism) তে আক্রান্ত শিশুদের স্বাভাবিকভাবেই বিকাশ হয়। তবে এই সব লক্ষণ থাকলেই যে আপনার শিশু থাইরয়েডে আক্রান্ত, তা কিন্তু একেবারেই নয়। তবুও সতর্ক থাকা ভালো।
বাচ্চাদের মধ্যে হাইপোথাইরয়েডিজম কীভাবে নির্ণয় করবেন?
জন্মের পর শিশুদের বেশ কয়েকটি শারীরিক পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। তার মধ্যে থাইরয়েডও থাকে। চিকিৎসকদের মতে, বিভিন্ন বিপাকীয় এবং জন্মগত রোগ সনাক্ত করার জন্য শিশুর জন্মের তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে হিল প্রিক ব্লাড টেস্ট করা উচিত৷ TSH (থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন) হল একটি ট্রান্সমিটার।
যা থাইরয়েড গ্রন্থির থাইরক্সিন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। আর এর উচ্চ মাত্রাই CHT নির্ণয় করতে ব্যবহৃত হয়।
-এসআর