আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পূর্ব লাদাখের গোগরা-হটস্প্রিংস সীমান্ত থেকে সরতে শুরু করেছে চীনা ও ভারতীয় সেনারা। এই সীমান্তে প্রাণঘাতী সংঘাতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক খারাপ হওয়ার দুই বছর পর সেখানকার মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরতে শুরু করল দুই পক্ষ।
রয়টার্স বলছে, আগামী সপ্তাহে উজবেকিস্তানে এক বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যোগ দিবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার আগে হিমালয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থান থেকে সরে যাচ্ছে দুই দেশের সেনারা।
উভয় পক্ষই বলেছে, সমন্বিত ও ‘পরিকল্পিত’ পথে সেনা সরানোর কাজ চলছে। এটি সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) নামে পরিচিত দুই দেশের কার্যকর সীমান্ত বরাবর হাজার হাজার সেনা মোতায়েন থাকলেও ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মুখোমুখি অবস্থানের অবসান ঘটছে। বাহিনীগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তাদের মোতায়েন করা হচ্ছে না ফের।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, শান্ত এলএসির দিকে এটি প্রথম পদক্ষেপ।
শুক্রবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উভয়পক্ষের সেনারা ‘সমানতালে ও পরিকল্পিভাবে’ অবস্থান থেকে সরতে শুরু করেছে। সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও শান্ত অবস্থা বজায় রাখতে এটি সহায়ক হবে।
চীন ও ভারতের মধ্যে অনির্ধারিত ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী দীর্ঘদিন ধরে এই সীমান্তে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত আছে তারা।
উল্লেখ্য, ২০২০ এর জুনে হিমালয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় লাদাখের গালওয়ান সীমান্তে দুই পক্ষের সেনাদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘাতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সেনা ও ৪ চীনা সেনা নিহত হয়। প্রায় হাতাহাতি এ লড়াইয়ে বিভিন্ন ধরনের অপ্রচলিত অস্ত্র ব্যবহৃত হলেও কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহৃত হয়নি। এ ঘটনার পর এশিয়ার এ দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী শক্তির মধ্যে প্রবল উত্তেজনা দেখা দেয়।
এরপর থেকে দুই দেশের ঊর্ধ্বতন সামরিক কমান্ডারদের মধ্যে ১৬ রাউন্ড বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে উত্তেজনা হ্রাস ও মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়।
-এএস