আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত দেশের প্রসিদ্ধ দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া আরাবিয়া বাইতুস সালামের (বাইতুস সালাম মাদরাসা) মুহতামিম হলেন মুফতি মানসুর আহমাদ। এর আগে ৭-৮ মাস ধরে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত মুহতামিরের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে জামিয়া আরাবিয়া বাইতুস সালামের নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে মুফতি মানসুর আহমাদের ওপর থেকে ‘ভারপ্রাপ্ত’ বোঝা সরিয়ে পূর্ণ মুহতামিমের দায়িত্ব অর্পন করা হয়। বাইতুস সালাম মাদরাসার তরুণ শিক্ষক মাওলানা লোকমান হাকিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কিশোরগঞ্জের আলেমেদ্বীন মুফতি মানসুর আহমাদ ২০১২ সালে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে বাইতুস সালামে যোগদান করেন। পরে তিন বছর যাবত মাদরাসাটির নাজেমে তালীমাতের (শিক্ষা-সচিব) দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম হিসেবে তার নাম ঘোষণা করে নির্বাহী কমিটি এবং ৩০ নভেম্বর অপরাহ্ন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দায়িত্ব পালন শুরু করেন তিনি।
দায়িত্বে আসার পরই ছাত্রদের কাছে ‘কিশোরগঞ্জের হুজুর’ খ্যাত মুফতি মানসুর আহমাদ মাদরাসার শিক্ষা-দীক্ষার মানবৃদ্ধির নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং প্রতিষ্ঠানের উন্নতির লক্ষ্যে বেশকিছু যুগান্তকারী প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন।
ভারপ্রাপ্ত মুহতামিম থাকাকালীন তার কর্মকৌশল ও কর্মতৎপরতার মুগ্ধ হন মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার তাকে পূর্ণ মুহতামিমের দায়িত্ব দেয়া হলো।
বাইতুস সালামে যোগদানের আগে মুফতি মানসুর আহমাদ দেশের প্রসিদ্ধ দু’টি মাদরাসায় অধ্যাপনার দায়িত্ব পালন করেছেন; প্রথমে ২০০৫ সাল থেকে তিনি কুমিল্লার ঐতিহাসিক বরুড়া মাদরাসায় অন্তত সাত বছর এবং এরপর টঙ্গী দারুল উলুম মাদরাসায় এক বছর মুহাদ্দিস হিসেবে হাদিস শরিফের পাঠদান করেন।
উল্লেখ্য, মুফতি মানসুর আহমাদের শিক্ষাজীবনও বেশ বর্ণাঢ্য। খুব অল্প বয়সে তিনি স্কুলে ভর্তি হন এবং অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষা অর্জন করেন। তারপর ১৯৯২ সালে জামিয়া ইসলামিয়া হামিউস সুন্নাহ মেখল মাদরাসায় উর্দু জামাতে ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে তার মাদরাসাশিক্ষার শুভসূচনা হয়। এখানে তিনি জামাতে শরহে জামি/শরহে বেকায়া পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন। এরপর শিক্ষাজীবনের বাকি অংশটুকু কাটান উম্মুল মাদারিস খ্যাত চট্টলার আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামে (হাটহাজারী মাদরাসা)। হেদায়া আওয়ালাইন জামাত থেকে দাওরা, এরপর দুই বছর তাখাসসুস ফিল ইফতার কোর্স দেশের সর্ববৃহৎ এই দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই সম্পন্ন করেন। এখানেই তার প্রতিষ্ঠানিক পড়াশোনা সমাপ্ত হয়।
কেএল/