আব্দুর রহমান আশরাফি: একজন মুসলমান হিসেবে সম্পদ অর্জনে আল্লাহর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং দুনিয়ার জীবনসামগ্রী মানুষকে আরও বেশি কৃতজ্ঞ বান্দায় পরিণত করে থাকে।
অনেকেই মনে করেন, দুনিয়ার জীবনে মুসলমানদের গরিবি অবস্থায় জীবনযাপন করতে হবে। কারণ, মানুষ দুনিয়ায় দুই দিনের মুসাফির! এটা নিয়ে অনেক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণও আছে। আসলে বিষয়টি এমন?
আল্লাহ তা'য়ালা ইরশাদ করেন ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও এবং তার দিকে ফিরে এসো, তাহলে তিনি একটি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তোমার উত্তম জীবনসামগ্রী দেবেন এবং অনুগ্রহ লাভের যোগ্য প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার অনুগ্রহ দান করেন।’ সুরা হুদ (আয়াত-৩)
আয়াতে বলা হয়েছে, মুসলমানেরা ধনসম্পদ, সচ্ছল ও সুখি-সমৃদ্ধ হতে পারে। অর্থাৎ দুনিয়ায় তাদের অবস্থান করার জন্য যে সময় নির্ধারিত রয়েছে সেই সময় পর্যন্ত খারাপভাবে নয় ভালোভাবেই থাকবে।
আল্লাহর নিয়ামতগুলো নিয়মিত তাদের ওপর বর্ষিত হতে থাকবে। তারা বরকত ও প্রাচুর্যলাভে ধন্য হবে। সচ্ছল ও সুখি-সমৃদ্ধ থাকবে। শান্তিময় ও নিরাপদ জীবনযাপন করবে। কোনো প্রকার লাঞ্ছনা, হীনতা ও দীনতার সঙ্গে নয় বরং সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে থাকবে।
এ বিষয়ে সূরা নাহলের ৯৭ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহকারে সৎকাজ করবে, সে পুরুষ বা নারী হোক, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব। ’
সমাজে সাধারণভাবে এমন একটি বিভ্রান্তিকর দর্শন ছড়িয়ে আছে যে, আল্লাহভীতি, সাধুতা ও দায়িত্বানুভূতির পথ অবলম্বন করলে মানুষ আখেরাতে লাভবান হবে; কিন্তু এর ফলে তাকে বৈষয়িক বিষয় থেকে বঞ্চিত থাকতে হবে। অর্থাৎ সমাজে যারা ইবাদত-বন্দেগি করবেন, দ্বীনের কাজ করবেন, ইসলাম পালন করবেন- তাদের জীবনে দারিদ্র্য, অভাব ও অনাহার অনিবার্য বিষয়।
আল্লাহতায়ালা এমন ধারণার প্রতিবাদ করে উল্লিখিত আয়াতে বলেন, সঠিক পথ অবলম্বন করলে তোমাদের শুধু আখেরাতে নয়- দুনিয়ায়ও সমৃদ্ধ হবে। আখেরাতের মতো এ দুনিয়ায় যথার্থ মর্যাদা ও সাফল্য ও এমন লোকদের জন্য নির্ধারণ করেন, যারা আল্লাহর প্রতি যথার্থ আনুগত্যসহকারে সৎ জীবনযাপন করে, যারা পবিত্র ও ত্রুটিমুক্ত চরিত্রের অধিকারী হয়, যাদের ব্যবহারিক জীবনে ও লেনদেনে কোনো ক্লেদ ও গ্লানি নেই, যাদের ওপর প্রত্যেকটি বিষয়ে ভরসা করা যেতে পারে, যাদের থেকে প্রত্যেক ব্যক্তি কল্যাণের আশা পোষণ করে এবং কোনো ব্যক্তি বা জাতি যাদের থেকে অকল্যাণের আশঙ্কা করে না।
লেখক: তরুণ আলেম, লেখক
-এটি