আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: স্বামীহারা রানী বেগম (৫৫)। ১০ বছর আগে মার যান তিন সন্তানের পিতা। সম্প্রতি মাগুরার মহাম্মদপুরের জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৩৭ নম্বর ঘরটি বরাদ্দ হয়েছে তার নামে। এ যেন সোনার ডিম পাড়া হাঁস। দুই শতক জমির উপরে নির্মীত এ ঘর যেন শুধু মাথা গোঁজার ঠাই নয়, যা ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনবে।
বুধবার (২০ জুলাই) মাগুরার মহাম্মদপুরের জাঙ্গালিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পেয়ে হেসে হেসে এই প্রতিবেদকের কাছে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, গত ২০ বছর ধরে অন্যের বাড়িতে কাজ করার সুবিধায় থাকতে। দিতে হতো কিছু ভাড়াও। দুই মেয়ে বিয়ে দিলেও স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় এখন থাকছেন মায়ের সঙ্গে। ঘর পাওয়ায় তাদের কদর কিছুটা বেড়েছে। ছেলে মেয়েকে নিয়ে সুখে নিন কাটাতে চান তিনি।
অপর স্বামীহারা সকিনা বেগম (৭০)। ২০০১ সালে স্বামী মারা গেলে এক ছেলে ও তিন ছেলে নিয়ে চোখে অন্ধাকর নেমে আসে। বিপাকে পরেন তিনি। তিন সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। মানুষের বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে টিকেছিলেন তিনি। নতুন ঘর পেয়ে উচ্ছসিত তিনি। ঘর পাওয়ার আনন্দে কেঁদে ফেলে দু’হাত তুলে দোয়া করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
অন্যের বাড়িতে থেকে ও স্টিলের দোকানে কাজ করে দিন পাড় করছিলেন মো. মাসুদ রানা( ৩৩)। হঠাৎ করেই তার বুকে সমস্যা ধরা পরে এখন আর আগের মতো কাজ করতে পারেন না তিনি।
স্ত্রী রত্না পার্শ্ববর্তী একটি স্কুলে কাজ করে মাসে আয় করেন তিন হাজার টাকা। অন্যের দোকানে কাজ করা আয় ও স্ত্রীর আয় দিয়ে সংসার চলছিল।
ঘর পেয়েছেন তিনি। এখন আর তাকে কষ্টের ২ হাজার টাকা আর অন্যকে ভাড়া হিসেবে দিতে হবে না। ভাড়ার টাকা দিয়ে মায়ের চিকিৎসা ও সন্তানকে লেখাপড়া করিয়ে মানুষ করার কাজে ব্যয় করাতে পাবেন। এখন তিনি স্বপ্ন দেখেন তার সন্তান ও একদিন সারের মতো (ইউএনও) বড় মানুষ হবে।
নর সুন্দরের কাজ করেন সুমন সরকার। স্ত্রী টুম্পা সরকার সরকারিভাবে তিন মাসের প্রশিক্ষণও নিয়েছেন সেলাইয়ের। বাপ ও দাদারা অনের বাড়িতে কাজ করে জীবীকা নির্বাহ করতেন। ছিলনা কোনো জমি ছিল না নিজের বাড়ি। ভুমি ও জমিহীন সুমন ঘর পেয়ে আনন্দীত। এখন স্বপ্ন দেখেন সন্তানদের উজ্বল ভবিষ্যতের।
-এটি