আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ভারতে বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশে মুসলিম ফকিরদের জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিতে বাধ্য করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের কান ধরে উঠবসও করানো হয়েছে।
উত্তর প্রদেশের গোন্ডায় তিন মুসলিম ফকিরের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। এখানে এক যুবক লাঠি উঁচিয়ে তাদের জোর করে ‘জয় শ্রী রাম’বলতে বাধ্য করে। কানপুরের সহিংসতার কথা উল্লেখ করে তাদেরকে সন্ত্রাসীও বলা হয় এবং কান ধরে উঠবসও করানো হয়।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, এরা কোনো ফকির নয়, বরং মুসলিম যুবক, যারা ফকিরদের ছদ্মবেশে গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তবে বিরোধ চরমে উঠলে পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের গোন্ডার খড়গুপুর ডিঙ্গুর গ্রামের, যেখানে দুই যুবক ও একজন বুজুর্গ ভিক্ষার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। এ সময়ে এক যুবক তাদের থামায়। প্রথমে তাদের নাম-ঠিকানা জিজ্ঞেস করে। এবং ‘আধার কার্ড’দেখাতে বলে। ওই ফকিররা তা দেখাতে রাজি না হলে ক্ষিপ্ত হয় ওই যুবক। একটা লাঠি উঁচিয়ে ফকিরদের কান ধরে উঠবস করতে থাকে। যুবকটি তাদের ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিতে বাধ্য করে এবং গ্রামে না ঘুরতেও হুমকি দেয়। গ্রামের অন্য লোকজনকেও যুবককে সমর্থন করতে দেখা যায়। ওই ঘটনার ভিডিও করে গ্রামেরই কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) গণমাধ্যমে প্রকাশ, গ্রামটিতে মুসলিম ফকিরদের সাথে একজন যুবক শুধু দুর্ব্যবহার করেনি, ভিডিওতে অনেককে তাদের গালিগালাজ করতে দেখা যায়। অনেক মানুষের কণ্ঠস্বর স্পষ্ট শোনা যায়। শুধু তাই নয়, ফকিরদের গ্রাম থেকে বিতাড়িত করা হয়।
২০২১ সালের ১০ অগাস্ট কানপুরের বাররা এলাকায় জোর করে একজন মুসলিম ই-রিকশা চালককে ‘জয় শ্রী রাম’ধ্বনি দিতে বাধ্য করা হয়। ওই ঘটনায় সেসময়ে উগ্রহিন্দুত্ববাদী ‘বজরং দল’-এর নাম উঠে এসেছিল। ঘটনার পর প্রায় একমাস ধরে এলাকায় উত্তেজনার পরিবেশ ছিল।
২০২১ সালের ১২ জুলাই উন্নাওতে, মাদ্রাসার শিশুদের ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দেওয়ানোর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এখানে মাদ্রাসার ছাত্ররা বিকেলে নামাজ পড়ার পর ক্রিকেট খেলতে যায়। এ সময় চারজন তাদেরকে মারধর করে এবং ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। ওই ঘটনায় শিশুদের জামাকাপড় ছিঁড়ে দেওয়া হয় এবং তাদের সাইকেল ভাঙচুর করা হয়। সূত্র: পার্স টুডে।
-কেএল