আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ গঠিত একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের দখলকৃত ভূখণ্ড 'পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে' নিতে চায় ইসরায়েল। গত মঙ্গলবার ১৮ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দখলদারি অবসানের কোনো ইচ্ছা ইসরায়েলের নেই। বরং পূর্ব জেরুজালেমসহ দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পুরোপুরি কবজায় নিতে পরিকল্পনা করছে দেশটি। ইসরায়েলের এ দখলদারি ও বৈষম্যমূলক নীতিকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে প্রমাণ উল্লেখ করে বলা হয়, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল ফিলিস্তিনের নির্দিষ্ট এলাকা দখলে নেয়। পরে ইসরায়েলের সঙ্গে তা যুক্ত করা হলেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সেটিকে কখনোই স্বীকৃতি দেয়নি। এর সমাধানে প্রতিবেদনে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের অবসানই যথেষ্ট নয় উল্লেখ করে ফিলিস্তিনিদেরও সমান মানবাধিকার নিশ্চিতে আরও পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।
কমিশন জানায়, দখলকৃত জায়গায় ইসরায়েলি সেটলারদের বহাল রাখতে ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়নমূলক পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে ইসরায়েল। দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের বসতিগুলোতে ৩০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনির বসবাস। তাদের মাঝে ৭ লাখের বেশি ইসরায়েলি সেটলার ওই এলাকাগুলোতে বসবাস করছেন। ইসরায়েল শুধু তাদেরকেই নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। যদিও ইহুদিদের বসবাসের জন্য নির্মিত এসব হাউজিং কমপ্লেক্স আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো নেতৃস্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলি এই নীতিকে জাতি-বিদ্বেষের সঙ্গে তুলনা করেছে। ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতে সুপারিশ করা এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রতিবেদনে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানো হয়েছে। এদিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
২০২১ সালের মে মাসে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের পর এই স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়। সে সময় ইসরায়েলি হামলায় গাজায় ২৬০ ফিলিস্তিনি ও হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১৩ জন নিহত হন। এ ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করতে কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এনটি