আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি চার শতাধিক। তাদের মধ্যে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীও রয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ৩৩ জনের লাশ এসেছে। লাশগুলো হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। সকাল ৯টার পর যে লাশগুলো আনা হয়েছে, সেগুলো চেনার উপায় নেই। পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ টেস্ট করা লাগতে পারে।’
দগ্ধ রোগী এবং স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেলে কলেজ (চমেক) এলাকা। যাদের স্বজন নিহত হয়েছেন তাদের কান্নায় হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। তাদের পরিবার-পরিজনকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা কারো জানা নেই। তবে যেসব ঈমানদার অগ্নিকাণ্ড বা কোনো দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করে, তাদের জন্য নবীজির সুসংবাদ রয়েছে।
রাসুলুল্লাহ (স.) আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে শহীদ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে জাবের তাঁর বাবার সূত্রে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (স.) তাঁর বাবা জাবের (রা.)-কে তাঁর রোগশয্যায় দেখতে গেলেন। তাঁর কাছে গিয়ে দেখলেন নারীরা কেঁদে কেঁদে বলছে, আমরা মনে করেছিলাম, তুমি আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে মৃত্যুবরণ করবে।
তখন মহানবী (স.) বলেন, আল্লাহর রাস্তায় শহীদ না হলে তোমরা কাউকে শহীদ মনে করো না? এমন হলে তো তোমাদের শহীদের সংখ্যা অতি অল্পই হবে। আল্লাহর রাস্তায় নিহত ব্যক্তি শহীদ, পেটের পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, আগুনে পুড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ, পানিতে ডুবে মৃত ব্যক্তি শহীদ, কোনো কিছুর নিচে চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি শহীদ, নিউমোনিয়াজাতীয় কঠিন পীড়ায় মৃত ব্যক্তি শহীদ, যে নারী গর্ভাবস্থায় মৃত্যুবরণ করে সেও শহীদ...। (আবু দাউদ: ৩১১১)
মানুষের মৃত্যু অবধারিত। তবে কারো মৃত্যু যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা বা কঠিন রোগে হয়, আল্লাহ তার বিনিময়ে তাকে শাহাদাতের মতো অতি সম্মানের মর্যাদা দিয়ে দেন।
আল্লাহ তাআলা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের শহীদি মর্যাদা দান করুন। আহতদের সুস্থতা দান করুন। তাদের পরিবার-পরিজনকে ধৈর্যধারণের তাওফিক দান করুন এবং তাদের উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমিন।
এনটি