মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


ওমরা পালন করতে সৌদি যাচ্ছেন মাওলানা ফজলুর রহমান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম বর্তমান পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য। সাবেক মন্ত্রী ও ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতা জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান।

আজ শনিবার তিনি ওমরা করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তান ছেড়েছেন। মাওলানা ফজলুর রহমানের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

মাওলানা ফজলুর রহমান একজন পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ যিনি জমিয়ত উলামায়ে ইসলামের বর্তমান সভাপতি। ১৯৮৮ সাল থেকে বর্তমান পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের সদস্য। সাবেক মন্ত্রী ও ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন।

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
মাওলানা মুফতী ফজলুর রহমান ২১ জুন ১৯৫৩ সালে ঈদুল আজহার দিন শুক্রবার ডেরা ইসমাঈল খান জেলার আব্দুল খয়েল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মুফতি মাহমুদ ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসে একজন সদস্য এবং জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী ইসলামিক পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি এবং তার পরিবার দেওবন্দী আন্দোলনের অংশ।

শিক্ষা জীবন
মুফতী ফজলুর রহমান মুলতানে মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে মেট্রিক পাস করেন ১৯৭৩ সালে। এরপর দারুল উলুম হক্কানিয়া আকুড়াখট মাদরাসা থেকে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। ১৯৮৩ সালে তিনি ইসলামিয়তে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কায়রোতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন
মাওলানা মুফতী ফজলুর রহমান পিতার হাত ধরেই রাজনীতিতে আগমন করেন। ৯ নভেম্বর ১৯৭৯ সালে করাচির খালিকে দুনিয়া হলে প্রথম রাজনৈতিক বক্তব্যে তৎকালিন সেনাশাসক জেনারেল জিয়াউল হকের রাষ্ট্রপ্রধান পদকে চ্যালেঞ্জ করেন। ১৯৮১ সালে তিনি যখন জেনারেল জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ফলে কারাবন্দি হন এবং ঐ বছরই জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নির্বাচিত হন।[১০][১১]

জামিয়াত ওলামায়ে ইসলাম ইসলাম ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফজলের নেতৃত্বাধীন মূল দল জামিয়াত ওলামায়ে ইসলামের সাথে দুটি দলে বিভক্ত হয়।

১৯৮৮ সালের পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য হিসাবে প্রথমবারের মতো ডিআইখান আসন থেকে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

১৯৯০ সালে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের আসনে ডিআইখান আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তবে নির্বাচনে জয়লাভ করেননি।

১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের গণপরিষদ সদস্য হিসাবে দ্বিতীয়বারের মতো ডিআইখান আসন থেকে ইসলামিক জামহুরী মাহজ টিকিটে পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বেনজীর ভুট্টো দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হলে মাওলানা ফজলুর রহমান জাতীয় সংসদের পররাস্ট্র বিষয়ক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে যখন বেনজীর ক্ষমতাচ্যুত হন, তখন নওয়াজ শরীফের তদন্ত ব্যুরো সর্বশক্তি নিয়োগ করেও তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উত্থাপন করতে পারেনি।

১৯৯৭ সালে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে চতুর্থবারের মতো পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তবে নির্বাচনে জয়লাভ করেননি।

২৮ মার্চ ১৯৯৫ সালে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি আব্দুলাহ দরখাস্তির মৃত্যুর পর মাওলানা ফজলুর রহমান সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে পাকিস্তানের সবকয়টি ইসলামি দলকে সঙ্গে নিয়ে তিনি মুত্তাহিদা মজলিসে আমল (এমএমএ) নামে জোট গঠন করে পরবর্তী নির্বাচনে ৭২টি আসন লাভ করেন। তিনি দুটি আসনে জিতেছিলেন, এনএ -৪৪ এবং এনএ -২৫ পরে শূন্য ছিল। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পরে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদের সম্ভাব্য প্রার্থী হয়েছিলেন তবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

তিনি ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বিবিসি এক রির্পোটে তার সম্পর্কে পর্যালোচনা করতে গিয়ে বলেছে, ফজলুর রহমান একসঙ্গে পাঁচটি কাজ সমাধা করতে পারদর্শী। তাকে ২০০৫ সালের এশিয়ান সার্ভে রিপোর্টে এশিয়ার ৫ম ও বিশ্বের ১৯তম ধীমান রাজনীতিবিদ হিসেবে নির্ধারণ করেছে। তিনি তার রাজনৈতিক জীবনে এখন পর্যন্ত দশবার কারাবরণ করেন।

ফজলুর রহমান পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের আসন দৌড়ে ২০০৮ পাকিস্তানি সাধারণ নির্বাচনের দুই আসন থেকে মুত্তাহিদা মজলিস-ই-অমল টিকিটে ষষ্ঠ বার এনএ ২৪ আসনে এবং এনএ ২৬ আসন থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের কাশ্মীর কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালের মধ্যে তিনি নিজেকে তালিবান থেকে দূরে সরিয়ে নিজেকে মধ্যপন্থী বলে অভিহিত করেছিলেন।

২০১৪ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ তাকে কাশ্মীর সম্পর্কিত জাতীয় পরিষদের বিশেষ কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য একটি ফেডারেল মন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলেন। আগস্ট ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসি তাকে আবার একই মর্যাদা দিয়েছিলেন। ৩১ মে ২০১৮ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরেও তার ফেডারেল মন্ত্রীর পদটি বজায় ছিল।

২৭ আগস্ট ২০১৮ সালে পাকিস্তান মুসলিম লীগসহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল তাকে ২০১৮ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে মনোনীত করে। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে তিনি ১৮৪ ভোট পেয়েছিলেন। সূত্র: উইকিপিডিয়া

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ