আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কার একবার যাকে দেওয়া হলো তাকে লোকে চিনে না। সম্প্রতি যাকে দেওয়া হলো তিনি এক অদ্ভূত লোক। তিনি নাকি খুনের মামলার আসামি ছিলেন। তাকে মরণোত্তর দেওয়া হলো সেটি নিয়ে তদন্ত চলছে। মোট কথা হচ্ছে সাহিত্যকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে 'রবীন্দ্র নজরুল সুকান্তর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি' শীর্ষক আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবর্তন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এর আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রের সভাপতি এ এস এম কামাল উদ্দিন।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা যেটি এখন দেখতে পাচ্ছি। আমরা একসময় আমাদের কবিদের বীর হিসেবে দেখতাম। বীরের অভাব ছিল আমাদের। সাহিত্য সে জায়গাটি পূরণ করতে পারছে না। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে সাহিত্যের গভীর একটি বিপদ চলছে। নোবেল পুরস্কার দেওয়ার মত লোক পাওয়া গেল না, বব ডিলান তিনি গান লিখেন, একজন সঙ্গীতজ্ঞ। তাকেই দিতে হলো। তিনি নিতে চাচ্ছিলেন না। আবার এক বছর দেওয়াই গেল না, নির্বাচনী বোর্ডের গোলযোগের কারণে।
তিনি বলেন, সাহিত্যের শত্রু হচ্ছে ঐ পুঁজিবাদ। পুঁজিবাদ বিনোদনে বিশ্বাস করে, মুনাফাকে বিশ্বাস করে। পুঁজিবাদ মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে। সাহিত্য মানুষকে যুক্ত করে, সংযুক্ত করে। সে সংযোজনের বিরুদ্ধে এই পুঁজিবাদ। কিন্তু সাহিত্যকে অবমূল্যায়ন করে আমরা এগিয়ে যেতে পারব না। আমরা যে সংলগ্নতা, সংযোজন চাই সেটি সাহিত্যই দিতে পারে। সেই সাহিত্য দিতে পারে যার মধ্যে গভীরতা আছে। যে গভীরতা রবীন্দ্রের ছিল, নজরুলের ছিল, সুকান্তর ছিল। যেটা আজকে সাহিত্য রচনার মধ্যে আমরা পাচ্ছি না।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কামাল উদ্দিন বলেন, একটি জাতি সাংস্কৃতিকভাবে যদি মারা যায়, সে জাতি উন্নত হতে পারে না। স্বাধীনতার পর আমার যে সকল অপসংস্কৃতি পাচ্ছি। সেখান থেকে নিজেদের সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। উপনিবেশে যেভাবে ভিন্ন সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই হীনমন্যতা থেকে বের হতে হবে।
আলোচনা শেষে বিবর্তনের পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এনটি