আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: উত্তর কোরিয়া নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ঘটনায় দেশটির ওপর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপের মার্কিন প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার চীন ও রাশিয়া ভেটো দিয়েছে। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
২০০৬ সালে উত্তর কোরিয়াকে শাস্তি দেওয়া শুরু করার পর এবারের এ ভেটো নিরাপত্তা পরিষদকে প্রথম বারের মতো প্রকাশ্যে বিভক্ত করেছে।
নিরাপত্তা পরিষদের বাকি ১৩ সদস্য-রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। খসড়ায় উত্তর কোরিয়ায় তামাক ও তেল রপ্তানি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব ছিল। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন একজন চেইন স্মোকার (ধূমপায়ী)।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে ‘লাজারাস’ হ্যাকিং গ্রুপকে কালো তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের মতে ‘লাজারাস উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এশিয়া সফরের পর এবং উত্তর কোরিয়া তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার এক দিন পর জাতিসংঘে এ ভোটাভুটি হলো। ধারণা করা হচ্ছে—উত্তর কোরীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর মধ্যে একটি দেশটির বৃহত্তম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল। উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে এ বছর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের মধ্যে এটি ছিল সর্বসাম্প্রতিক। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিরাপত্তা পরিষদ নিষিদ্ধ করেছে।
উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের নীরবতার উদাহরণ দিয়ে এর আগে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড চলতি মাসেই বলেছিলেন, ‘মৌন অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করার সময় এসেছে।’
গত ১৬ বছরে নিরাপত্তা পরিষদ ধীরে ধীরে সর্বসম্মতিক্রমে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য তহবিল বন্ধ করার লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে আসছে। নিরাপত্তা পরিষদ সর্বশেষ ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। তখন থেকেই চীন ও রাশিয়া মানবিক কারণে এসব নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য জাতিসংঘকে চাপ দিয়ে আসছে। দেশ দুটি নিরাপত্তা পরিষদের উত্তর কোরিয়া বিষয়ক নিষেধাজ্ঞা কমিটির আড়ালে কিছু পদক্ষেপকে দীর্ঘায়িত করলেও, বৃহস্পতিবারের প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটিতে প্রথম বারের মতো প্রকাশ্যে বিরোধিতা প্রকাশ পেল।
জাতিসংঘে চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জুন বৃহস্পতিবার ভোটের আগে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা মনে করি না—বাড়তি নিষেধাজ্ঞা বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া জানাতে সহায়ক হবে। এটি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।’
এ ছাড়া জাতিসংঘে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া গত বুধবার রয়টার্সকে বলেছিলেন, জাতিসংঘের পদক্ষেপ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ‘খুব সহায়ক’ হবে বলে তিনি মনে করেন না।
উত্তর কোরিয়া গত কয়েক বছরে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা স্থগিত রেখেছিল। কিন্তু, গত কয়েক মাসে দেশটি পুনরায় দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শুরু করেছে। উত্তর কোরিয়া সপ্তম পারমাণবিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে এরই মধ্যে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া।
-কেএল