মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চক্রান্তের ফাঁদে না পড়ে সর্বোচ্চ ধৈর্য ধারণের আহ্বান শায়খ আহমাদুল্লাহর ভোলায় জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও স্মরণসভা চরমোনাইর বার্ষিক অগ্রহায়ণ মাহফিল বুধবার, চলছে সর্বশেষ প্রস্তুতি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান আসিফ মাহমুদের অসহায় শীতার্তের পাশে মাওলানা গাজী ইয়াকুবের তাকওয়া ফাউন্ডেশন দেশের তিন জেলায় শিক্ষক নিচ্ছে ‘আলোকিত মক্তব’ বৃদ্ধার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবন্ধীদের ধর্মীয় ও কারিগরি শিক্ষা দিতে পারলে দেশ এগিয়ে যাবে: ধর্ম উপদেষ্টা ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করার ষড়যন্ত্র সফল হবে না: মাওলানা আরশাদ মাদানী গওহরডাঙ্গা মাদরাসার ৮৯তম মাহফিল শুরু আগামীকাল

ইমরান খান অতীত থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন না!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সামরিক বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষমতায় আসার অভিযোগ ছিল পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে। অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার জন্য তিনি দায়ী করছেন সেই একই বাহিনীকে।

আবার দেশটির নতুন সরকারকে আগাম নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকেই সমর্থন প্রত্যাশা করছেন সাবেক এই কিংবদন্তি ক্রিকেট তারকা। এ নিয়ে ‘ইমরান খানের শিক্ষা’ শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক ডন।

পাঁচ বছরের মধ্যে সরাসরি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন পাকিস্তানের দ্বিতীয় কোনো প্রধানমন্ত্রী। এরা হলেন—নওয়াজ শরিফ ও ইমরান খান। দুজনই সামরিক বাহিনী প্রধানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। সরকারের পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করতে না-পারার জন্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন দ্বিতীয় জন।

আর ২০১৭ সালে অনাড়ম্বরভাবে বিদায় নিতে হয় পরমাণু শক্তিধর দেশটির তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে। তিনি ছিলেন অনেক স্পষ্টভাষী। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ভূমিকা রাখা সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের নাম বলে গেছেন তিনি।

ইমরান খানকেও ঠিক একই পথ অবলম্বন করতে দেখা গেছে। তিনি কোনো কিছুই গোপনীয় রাখছেন না। তার পতনের জন্য সেনাবাহিনীকে অকপটে দায়ী করে যাচ্ছেন।

তাদের রাজনৈতিক পথ পিচ্ছিল হওয়ার পরেও সামরিক নেতৃত্বের ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকার করেননি বলে তারা দাবি করেন। যদিও পতনের জন্য দুজনের কারণ একেবারে ভিন্ন। তারা মনে করেন—নিজেদের এখতিয়ারের প্রতি অটল থাকার খেসারত দিতে হয়েছে তাদের।

রাজনৈতিক মতাদর্শ ও শাসন নীতিতে দুই রাজনীতিবিদ ভিন্ন মেরুর। দুজনের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ধরনও ভিন্ন। বহির্বিশ্বের চাপে দেশে নিজেদের রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে পারেননি বলে অভিযোগ দুজনের। এই একটি ক্ষেত্রে তারা অভিন্ন মত দিয়েছেন।

জনগণের একটা বড় অংশকে তারা বোঝাতে পেরেছেন যে আমাদের গণতন্ত্র নাজুক—যে কোনো অগণতান্ত্রিক শক্তির বলপ্রয়োগ ও চাপের মুখে পড়তে পারে সহজেই।

‘ভোট কো ইজ্জত দো’ বা ভোটকে সম্মান করুন স্লোগানের সময়ই বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন নওয়াজ শরিফ। বিষয়টিকে সেভাবেই তিনি আত্তীভূত করতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার দলের মধ্যেই সেই বিশ্বাসের ঘাটতি আছে।

উর্দিপরা ত্রাতাদের সঙ্গে ইমরান খানের রোমান্সের ইতি ঘটেছে কিনা; তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এখনো বিষয়টি অস্পষ্টতায় ভাসাভাসা রয়েছে। কিন্তু নওয়াজ শরিফের ‘ভোটকে সম্মান করুন’ স্লোগানের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে ইমরান খানের ‘হাকিকি আজাদি’ বা সত্যিকারের স্বাধীনতার ডাকের মধ্যে। অর্থাৎ জনগণের ইচ্ছাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

কিন্তু একই সঙ্গে আগাম নির্বাচন নিশ্চিত করতে হস্তক্ষেপ চাইলেন ইমরান খান। এতে অরাজনৈতিক থাকার যে নতুন সিদ্ধান্ত সামরিক বাহিনী নিয়েছে, তাতে চাপ তৈরি হবে।

অর্থাৎ এই বাহিনী নিজেদের অঙ্গীকারের জায়গায় থাকতে পারছে না। কাজেই এসব কিছু থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের মতপার্থক্যগুলোর সমাধান করতে বেসামরিক নাগরিকদের সুযোগ করে দিন।

সংস্কার, আইন সভা ও শাসনের যে কোনো বিষয়ে বিরোধীদের সঙ্গে বসতে অনিচ্ছার কথা জানিয়েছেন ইমরান খান। যা একেবারেই লজ্জাজনক। অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে বেসামরিক নাগরিকদের সামগ্রিকভাবে রেডলাইন নির্ধারণ করে দিতে হবে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, এর মাধ্যমে নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা চাচ্ছে একটি রাজনৈতিক দল। কিন্তু যখন বিষয়টি আরও খোলাসা হবে, তখন এই পৃষ্ঠপোষকতার জন্য কি বড় ধরনের খেসারত দিতে হবে না? কিংবা এতে কি দীর্ঘমেয়াদে বিভক্তি তৈরি হবে না?

গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী নিরপেক্ষ ও অরাজনৈতিক থাকতে চায়—সব রাজনৈতিক দলগুলোকেই তা মনে রাখা দরকার। এই নীতি থেকে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বেরিয়ে আসতে চায়, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করতে হবে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ