আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মারিওপোলের আজভস্টাল ইস্পাত কারখানায় আটকাপড়া সৈন্য ও মিলিশিয়াদের মুক্ত করতে তুরস্কের দ্বারস্থ হয়েছে ইউক্রেন।
কিয়েভ চাইছে সৈন্য ও মিলিশিয়াদের সেখান থেকে সরে যেতে দিতে রাশিয়াকে রাজি করাতে তুরস্ক মধ্যস্থতা করুক। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সূত্রের বরাতে স্থানীয় সাংবাদিকরা এ কথা জানিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আজভস্টালে আটকাপড়া আহত সৈন্যদের সরে যেতে দেওয়ার শর্তে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে আটক রুশ যুদ্ধবন্দীদের মুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন। রাশিয়া ওই বন্দী বিনিময়ের প্রস্তাবে কোনো সাড়া দেয়নি। এ অবস্থায় ইউক্রেন বিষয়টিতে মধ্যস্থতার জন্য তুরস্ককে অনুরোধ করেছে। বর্তমানে তুরস্কের মধ্যস্থতায় আলোচনা চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, মস্কো এরইমধ্যে একাধিকবার আজভ মিলিশিয়াদের সরে যেতে দেওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকা আজভস্টালের মিলিশিয়াদের সেখান থেকে সরে যেতে দিলে বিষয়টি রাশিয়ার কূটনেতিক পরাজয় হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে মনে করছেন মস্কোর কর্মকর্তারা। তাদের মতে, এতে করে রুশ সৈন্যদের মনোবল নষ্ট হবে এবং ইউক্রেন ভবিষ্যতে নতুন নতুন শর্ত আরোপের উৎসাহ পাবে।
এদিকে ইউক্রেনের নেতৃবৃন্দ চাইছেন এরইমধ্যে হাতছাড়া হওয়া মারিওপোল শহর থেকে অন্তত কেউ মুক্তি পেয়ে ফিরে আসুক। আজভস্টালে আটক সৈন্য ও মিলিশিয়াদের যে কোনো শর্তে মুক্ত করতে পারলে তাদেরকে ইউক্রেনের প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে প্রচারমাধ্যমে উপস্থাপন করা যাবে।
পরবর্তীতে এসব সৈন্য বিদেশে গিয়ে ইউক্রেনের প্রতিরোধ যুদ্ধের দূত হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করতে পারবে এবং কিয়েভের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে ভূমিকা রাখবে।
সূত্র জানায়, আজভস্টালে আটকাপড়া সৈন্যদের যে কোনোভাবে মুক্ত করতে চাওয়ার পেছনে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার ইস্যুটিও কাজ করছে। সৈন্যদের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেছেন, স্বজনদের মুক্তির জন্য বারবার প্রেসিডেন্টের সাহায্য চেয়েও তারা সাড়া পাননি। তাদের কোনো অনুরোধ রক্ষা করা হয়নি, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য ফোরাম থেকেও তাদের নানাভাবে ব্লক করা হয়েছে।
স্পেনের দৈনিক এবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আজভ মিলিশিয়াদের ডেপুটি কমান্ডান স্ভ্যাস্লোভ পালামার বলেছেন, তার ব্যাটালিয়নের ৬০০ যোদ্ধা গুরুতর আহত অবস্থায় রয়েছেন। আহত সৈন্যের সংখ্যা আরও বাড়ছে।
তিনি বলেন, রাশিয়ার বাহিনী অনেক বেশি শক্তিশালী। কিন্তু আজভ ব্যাটালিয়ন ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিরোধ বজায় রেখেছে। আমরা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছি। সরকার বলছে তারা আমাদের যোদ্ধাদের মুক্ত করতে সবকিছু করছে। কিন্তু আমরা যে অবস্থায় রয়েছি তাতে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব কাজ। আমরা এ অসম্ভব কাজ করে যাচ্ছি। এখন সরকারকেও আমাদের জন্য অসম্ভব কিছু করতে হবে।
এর আগে ইউক্রেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভেরেশচুক বলেন, আজভস্টালে গুরুতর আহত সৈন্যদের বিনিময়ে রুশ যুদ্ধবন্দীদের মুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে কিয়েভ। এ বিষয়ে এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি।
-gcdt