রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


যৌতুকের টাকা না পেয়ে ইফতারে বিষ খাইয়ে স্ত্রীকে হত্যা, ঘাতক স্বামী আটক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী মরিয়াম (২৫) কে ইফতারে বিষ প্রয়োগ করে হত্যার অভিযোগে আনিছুর রহমানের (৩৫) নামে এক যৌতুক লোভী পাষণ্ড স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মরিয়ামের বাবা কিনার উদ্দীন গত শুক্রবার বোদা থানায় ঘাতক স্বামী আনিছুর রহমানকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাতে অভিযান চালিয়ে আনিছুরকে উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের তার নিজবাড়ি থেকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে প্রেরণ করেছে পুলিশ।

আনিছুর উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের তেপুকুরিয়া হাজীপাড়া এলাকার মছির উদ্দীনের ছেলে। আনিছুর স্থানীয় তেপুকুরিয়া বাজারে পেশায় দর্জির কাজ করতেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন, আনিছুরের বাবা মছির উদ্দীন (৬৫), তার ভাই আশরাফুল ইসলাম (৩০), লাইলী (৩০), আনারুল ইসলাম (৩০) ও আব্দুল লতিফ (৬০)।

মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৫ই মার্চে বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের তেপুকুরিয়া হাজীপাড়া এলাকার মছির উদ্দীনের ছেলে আনিছুর রহমানের সাথে একই এলাকার কিনার উদ্দীনের মেয়ে মরিয়ামের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে কিনার উদ্দীন মেয়ের সুখের জন্য জামাতা আনিছুরকে ব্যবসায়ীক কাজে লাগানোর জন্য ১ লাখ টাকা দেন। বিয়ের ৬ মাস না পেরোতেই আনিছুর আরো ১ লাখ টাকার জন্য তার স্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে মারপিট করতো। এভাবেই পেরিয়ে যায় বছর। আনিছুর-মরিয়মের সংসারে এক কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করে। নাম রাখা হয় তাসনিন। বর্তমানে তার বয়স ১৮ মাস। পরে মরিয়াম সন্তানের কথা চিন্তা করে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করে সংসার করতে থাকেন। এরই মাঝে চলতি বছরের গত ২০ এপ্রিল (বুধবার) বিকেলে আবারো যৌতুক বাবদ ১ লাখ টাকা দাবী করে আনিছুর। পরে মরিয়াম দিতে অস্বীকার করলে তাঁর গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করে আনিছুর। পরে ওইদিন বিকেলে মরিয়ামকে তেপুকুরিয়া বাজারে তাঁর দর্জির দোকানে নিয়ে যান আনিছুর। মরিয়াম রোজা থাকায় তাঁকে ইফতার সামগ্রী কিনে দেন তিনি। পরে ইফতারের সময় হলে ইফতার গ্রহনের সাথে সাথে মরিয়ামের মুখ থেকে হালকা ফেনা বের হতে থাকে। পরে তাঁকে চিকিৎসার জন্য বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে মরিয়মের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দিবাগত গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বোদা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনজুরুল ইসলাম জানান, মামলার প্রধান আসামি আনিছুরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়েছে। আমরা আনিছুরের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছি। রোববার (২৪ এপ্রিল) আদালতে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানী হবে।

এ বিষয়ে বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাইদ চৌধুরী বলেন, আমরা মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছি। মামলার অন্য আসামিদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

এনটি


সম্পর্কিত খবর