ফুযায়েল আহমদ মুমশাদ।।
যারা জীবনের মূল্য বোঝেন, সময়ের গুরুত্ব অনুধাবন করেন; যারা ইলমকে ভালোবাসেন, পঠন-লিখনের আগ্রহ রাখেন এবং আমল-ইবাদতের শওক ও জযবা দিলে লালন করেন; সঙ্গে সঙ্গে আবার পরিবারকে সময় দিতে চান, সমাজ ও মানুষের সাথে মিলেমিশে চলতে চান; তাদের জন্য এসবকিছুর সমীকরণ অনেক সময় কঠিন হয়ে যায় এবং মনের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়।
পরিবারকে সময় দেয়ার সময় মনে হয় ঐ কাজগুলো তো হচ্ছে না! ধ্যৎ সময় নষ্ট হচ্ছে! আবার ওসব কাজে মন দিলে, লেগে থাকলে মনে হয়; পরিবারকেও তো সময় দেয়া দরকার, মানুষের সঙ্গেও তো কিছুটা সময় যাপন করা উচিত! শুরু হয় অস্থিরতা! চলতে থাকে মানসিক দ্বন্দ্ব! ফলে কোনটাই আর সুন্দরভাবে, মনোযোগের সাথে করা হয়ে ওঠে না।
কিংবা হয়ে যায় বাড়াবাড়ি: হয় সামাজিকতায় ডুবে যাওয়া নয় এক কোণায় পড়ে থাকা। তো এই ক্ষেত্রেও আমাদের জন্য রয়েছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চমৎকার আদর্শ।
হাদিসে এসেছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ঘরে প্রবেশ করতেন তখন নিজের সময়কে তিন ভাগে ভাগ করতেন:
১/ আল্লাহ তায়ালার জন্য। ২/ পরিবারের জন্য। ৩/ নিজের জন্য। আর এই ভাগটাকে আবার তিনি নিজের মধ্যে এবং উম্মতের মধ্যে ভাগ করতেন। তারপর হাদিসে তৃতীয় ভাগটি যাপনের বিস্তারিত বিবরণ এসেছে। হাদিসের ভাষ্য:১
قال الحُسينُ: فسألتُ أبي عن دُخولِ النَّبِيِّ صلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ، فقال: كان إذا أَوَى إلى مَنزِلِه جزَّأ دُخولَه ثلاثةَ أجزاءٍ: جُزءًا للهِ، وجُزءًا لأهلِه، وجُزءًا لنَفْسِه، ثم جزَّأ جُزْأه بينَه وبينَ الناسِ
তো আমরা যদি নববী আদর্শকে সামনে রেখে ঘরের সময়গুলো যাপন করি তাহলে উপরোক্ত সবগুলো বিষয়ের মধ্যে খুব সুন্দর সমীকরণ হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তায়ালার জন্য নির্ধারিত সময়টি পূর্ণ মনোযোগ ও নিমগ্নতার সাথে যিকির-ইবাদতে ব্যয় করব।
পরিবারের সময়কে তাদের সাথে পূর্ণ আগ্রহ, মনোযোগ ও সওয়াবের নিয়তের সঙ্গে যাপন করবো। একই কথা তৃতীয় ভাগ সম্পর্কেও। তবে হাঁ, ভাগ করার ক্ষেত্রে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে গুরুত্বের বিচারে সময়ের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।
১. الشمائل المحمدية للترمذي
-এটি