রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


হি’জা’ব পরায় ছাত্রীদের পে’টালে’ন শিক্ষিকা আমো’দিনী পাল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: নওগাঁর মহাদেবপুরে স্কুলে হিজাব পরে আসায় বিশজন ছাত্রীকে গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এক হিন্দু শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

গত ৬ এপ্রিল (বুধবার) দুপুরে উপজেলার দাউল বারবারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আমোদিনী পাল বিশজন ছাত্রীকে পিটিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা।

এর জেরে কয়েকশ’ অভিভাবক গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ওই স্কুলে গিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান।

ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আফরিন অভিযোগ করে বলেন, বুধবার দুপুরে জাতীয় সঙ্গীতের পর লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা আমোদিনী পাল কেন হিজাব পরে স্কুলে এসেছি জিজ্ঞাসা করেই ইউক্যালিপ্টাস গাছের ডাল দিয়ে পেটাতে থাকেন।

সাদিয়া বলেন, শিক্ষিক তাদেরকে বলেছেন, ‘স্কুলে কোনো পর্দা চলবে না। ঢং করে আসছ। বাসায় গিয়ে কি বোরকা পরে থাক? যখন তোমরা মহাদেবপুর বাজারে যাবে তখন পর্দা করবে। স্কুলে এলে মাথার কাপড় ফেলে আসবে। তিনি ছাত্রীদের হিজাব খুলে ফেলার জন্য টানাটানি করেন। যারা হিজাব ছাড়া শুধু মাস্ক পরে এসেছিল তাদের মাস্কও খুলে দেন। তিনি হুমকি দেন যে, কাল থেকে যদি হিজাব ও মাস্ক পরে আসো তাহলে পিটিয়ে তোমাদের পিঠের চামড়া তুলে নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থী সাদিয়া আরও বলেন, লাইনের কয়েকজন ছাত্রীকে মারতে মারতে তার কাছে এসে তাকে মারতে থাকলে লাঠি ভেঙে যায়। এছাড়াও দশম শ্রেণির ছাত্রী ঐশি, সুমাইয়া, তিথি, লাকি, নবম শ্রেণির মোনাসহ কমপক্ষে ২০ জন ছাত্রীকে পেটানো হয়।

সাদিয়ার মা সাবেরা বেগম জানান, তার মেয়ে স্কুল থেকে এসে কান্নাকাটি করে বলে যে, হিজাব পরার জন্য ম্যাডাম মেরেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের মেয়েরা বড় হয়েছে। তারা তো পর্দা করবেই। স্কুলে গিয়েই ভদ্রতা শিখবে। তা না শিখিয়ে যদি এরকম মারপিট করে তাহলে আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা কোথায়? সন্তানদের নিরাপত্তার স্বার্থে অভিযুক্ত শিক্ষিকার অপসারণ দাবি করেন।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ধরণী কান্ত বর্মণ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্কুলে হিজাব পরে আসায় শিক্ষিকা আমোদিনী পাল ৫/৬ জন ছাত্রীকে মারধর করেছেন। ঘটনার দিন তিনি স্কুলের কাজে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে এসে বিষয়টি জেনেছেন। এ বিষয়ে তাকে শোকজ করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান হিজাব পরায় স্কুলছাত্রীদের পেটানোর কথা স্বীকার করে বলেন, আগে তাকে শোকজ করা হবে। তারপর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজম উদ্দিন মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি খুবই সেনসেটিভ। এ বিষয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।

-এএ


সম্পর্কিত খবর