রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


মুরাদনগরে ৩ শতাধিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মিল্লার মুরাদনগরে তিন শতাধিক অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। বুধবার দিনভর উপজেলার ধামঘর ইউনিয়নের ভুবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্যন্ত প্রায় ১৬শ ফুট অবৈধ গ্যাস লাইন অপসারণ করা হয়।

তবে অবৈধ গ্যাস লাইন প্রদানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ অভিযান পরিচালনা করেন এক্সিকউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিন। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নে বাখরাবাদের প্রায় ৩০ জন শ্রমিক অংশ নেয়।

দড়িকান্দি গ্রামের গ্রাহক কফিল উদ্দিন ও সহিদ মিয়াসহ ১০-১২ জন বলেন, ২০১৫ সালে আমরা ৮১ হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে প্রতিটি রাইজার দিয়েছেন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ঠিকাদার হারুন অর-রশিদ।

গ্যাস কর্তৃপক্ষ অবৈধভাবে যারা গ্যাস সংযোগ দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু লাইন বিচ্ছিন্ন করে গ্রাহকদের হয়রানি করছে। আমরা অবিলম্বে অবৈধ গ্যাস সংযোগকারীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলশিক্ষকসহ একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও দালাল চক্র বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন দেবিদ্বার জোনাল অফিস ও জেলা অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজোসে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট উপজেলার ভুবনঘর, দড়িকান্দি, দুলারামপুর ১১ হাজার ফুট।

বোড়ারচর জাহাপুর ৩০ হাজার ফুট, দড়িকান্দি ১ কিলোমিটার, করকটিয়া ও সোনাপুর ২ কিলোমিটার, সুবিলারচর ২ কিলোমিটার, কোম্পানীগঞ্জ ৩ কিলোমিটার, রানীমুহুরী, বড়ইয়াকুড়ি, বোরারচর ৬ কিলোমিটার, নোয়াকান্দি ৯শ ফুট, ধামঘর ৩৫০ ফুট, পালাসুতা ৬ হাজার ফুট, পায়ব ২ কিলোমিটার, শুশুন্ডা ৩ কিলোমিটার, কুলুবাড়ি, বাখরনগর ৫ কিলোমিটার, মধ্যনগর, করিমপুর ৩ কিলোমিটার, নবীপুর ৩ কিলোমিটার, নগরপাড় দেড় কিলোমিটার, গুঞ্জর ৩ কিলোমিটার, পৈয়াপাথর দেড় কিলোমিটার ও নহল, রামনগর, ধামঘর ৩ হাজার ৬০০ ফুট গ্যাস লাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে গ্যাসের আবাসিক সংযোগ দিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। অবৈধ গ্যাস সংযোগের একটি তালিকাসহ বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন, পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ঠ দফতরে অভিযোগ দেওয়া হয়।

যার পরিপ্রেক্ষতে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন ও পেট্রোবাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে পৃথক দুইটি তদন্ত দল সরেজমিনে তদন্ত করে অবৈধ গ্যাস সংযোগ লাইনের সত্যতা পায়। এবং সংশ্লিষ্ঠ দফতরে তদন্ত রির্পোট প্রদান করে। কিন্তু অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ গ্যাস লাইনগুলোর বিষয়ে কোনো প্রকার পদক্ষেপ না নেওয়ায় জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

অভিযুক্ত ঠিকাদার হারুন অর-রশিদ বলেন, আমি কোনো ঠিকাদার নই। আমার নামে কোনো লাইসেন্স নেই। ভুবনঘর থেকে দড়িকান্দি পর্যন্ত গ্যাস লাইনটি করিমপুর গ্রামের মৃত. মতি মিয়ার ছেলে আজিজুর রহমান রনির স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মের্সাস মতি এন্টারপ্রাইজ কাজ করেছে। আমি শুধু মধ্যস্থতা হিসেবে কাজ করেছি।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কুমিল্লা দফতরের ভিজিলেন্স শাখা জানান, দুজন উপ-মহাব্যবস্থাপকের উপস্থিতিতে এ অভিযানে ১৩টি রাইজার ও এক হাজার ফুট পাইপ জব্দ করা হয়েছে।

আরও প্রায় অর্ধশতাধিক রাইজার ছিল, এ অভিযানের খবর পেয়ে গ্রাহকরা রাইজারগুলো সরিয়ে ফেলে। সব অবৈধ গ্যাস লাইন পর্যায়ক্রমে বিচ্ছিন্ন করা হবে। এবং নিয়মিত এ অভিযান চলবে। অবৈধ সংযোগ যারা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ