হাছিব আহমদ ।।
ভাষা আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক রুপ কথার মত যেখানে মিশে আছে আমাদের মত শত শত ছাত্রের ত্যাগ। যে ভাষার শৈল্পিক কারুকাজে বিচিত্র দৃশ্যের বিজয় অর্জিত হয়েছে শুধু সাত সাগরের ঐ মাঝির মুখের বাটিয়ালি সুরে তাই ইতিহাসবিদদের মতে, ভাষা আন্দোলনের সূচনা ১৯৪৭ সালে তবে রাষ্ট্র ভাষার পক্ষে বাস্তব আন্দোলন শুরু হয়ে ১৯৪৮ সালের মার্চ মাস থেকে পর্যায়ক্রমে ১৯৫০ সালে এই আন্দোলন জাতীয় রুপে প্রকাশ পায় ১৯৫২র ফেব্রুয়ারিতে, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পরিপূর্ণ ভাষা আন্দোলনের রুপ পায়, এ সময়ে একটাই শুধু স্লোগান ছিল, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই। দেশের সবখানে ছিল একই স্লোগান।
এই স্লোগান শেষ পর্যন্ত জাতি-রাষ্টের ইঙ্গিত বহন করে। গনতান্ত্রিক অধিকারের দাবি প্রতিফলিত হয়ে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে, ছাত্র যুবকদের ঘোষিত কর্মসূচিকে বানচাল করতে ঢাকা প্রশাসন তৎপর। এর আগের দিন বিকেলে ঢাকা শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের সিদ্ধান্ত হয়ে।
১৪৪ ধারা ভেন্গে মেডিকেল হোস্টেলের দিকে বেরিয়ে যাওয়া। প্রথমে ১০ জনের ছোট মিছিলে কঁাদানো গ্যাস ছোরা হয়ে, এরপর গুলি চালানো হয়ে, এসময়ে ঢাকা শহর হয়ে উঠে এক প্রতিবাদের শহর।
গুলিতে প্রান যায় সালাম, রফিক, বরকত,জব্বার সহ নাম না জানা কত শহীদের। সেই থেকে শুরু হয়ে শহীদ মিনারের।রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই স্লোগান থেকে রুপান্তরিত হয়ে। শহীদ স্মৃতি অমর হোক স্লোগানে। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজনীতি মনস্ক ছাত্ররা মেডিকেল কলেজের হোস্টেল প্রাঙ্গনে এক রাতের শ্রমে নির্মাণ করে ১০ ফুট উচু ও ৬ ফুট চওড়া পাকা এক শহীদ মিনার।
কিন্তুু ২৬ ফেব্রুয়ারী বিকেলে পুলিশ সেই শহীদ মিনার ভেঙে ফেলে, কিন্তুু তারা জানেনা শহীদ মিনার তো মরেনা। আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ২১ শে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলতে পারি।
দেশের আপামর মানুষের কন্ঠে উঠে এল এই চিরস্মরণীয় গানটি। এই শহীদ মিনার গনতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রেরণা হিসেবে স্বীকৃত। শহীদ মিনার প্রতীকি তাৎপর্য ধরা পড়েছে শহীদদের জন্য।
এছাড়া অনাচারী শাষক শক্তির বিরুদ্ধে ঘৃণা ও প্রতিবাদের প্রতিকী আন্দোলন ছিল এটি। ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সাক্ষী আঃ রশীদ তর্কবাগীশ তার সৃতিচারণে উল্লেখ করেছিলেন, ভাষা আন্দোলনের রুপ ধারন করে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সে সময়ে আন্দোলনের সংবাদ পাশের দেশ শুধু ভারত নয় বরং সাড়া পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে।
সমস্ত প্রক্রিয়াটি প্রাকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। সুতরাং অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষায় রুপান্তরিত হয়েছে। এটা জাতির জন্য গৌরবের। এই অবদানের জন্য যাদের ভুমিকা রয়েছে, তাদের স্বরনে তো গেয়ে উঠতে হয়, ছালাম,বরকত,রফিক,জব্বার তোমরা মোদের ভাই / তোমাদের সেই ত্যাগের দিনটি আমরা ভুলি নাই।
লেখক: শিক্ষার্থী, মানারাত ইন্টারন্যাশনা ইউনিভার্সিটি
-এটি