শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা

ইন্টারনেটের ক্ষতি থেকে সমাজকে বাঁচাতে তিন খতিবের পরামর্শ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।মোস্তফা ওয়াদুদ।।
নিউজরুম এডিটর।।

ইন্টারনেট পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। বিশ্বায়নের এই যুগে জীবনের সব ক্ষেত্রে এখন ইন্টারনেটের ব্যবহার ছাড়া কল্পনা করা যায় না! খোলা আকাশের মতো ইন্টারনেটও সবার জন্য অবারিত। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছোট-বড় বয়সের কোন বিধিনিষেধ নেই। প্রযুক্তির ব্যবহার খারাপ নয়। তবে ব্যবহারের ওপরই এর ভাল-মন্দ নির্ভর করে। ইন্টারনেটের সুফল বলে শেষ করা যাবে না। মুহূর্তের মধ্যে যোগাযোগ, তথ্য আদান-প্রদান, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সব ক্ষেত্রে মানুষের জীবনযাপন আগের থেকে সহজ করে দিয়েছে ইন্টারনেট। ফলে পৃথিবী আগের থেকে অনেক বেশি দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে চারপাশ।

তবে কথায় আছে, ‘প্রদীপের নিচে অন্ধকার থাকে।’ ইন্টারনেটের অপব্যবহারও মানুষের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমাজে মন্দ লোকের অভাব নেই। ফেসবুক, ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইমোসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদ পেতে নানা কৌশলে টার্গেট ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতারকচক্র হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সমাজে অনেক ধরনের ক্ষতি ছড়াচ্ছে এ ইন্টারনেট। তবে ইন্টারনেটের ক্ষতি থেকে সমাজকে বাঁচাতে পরামর্শ দিয়েছেন দেশের তিনজন খতিব।

ইন্টারনেটের ক্ষতিগুলো চিহ্নিত করে সমাধান বের করতে হবে
মুফতি আব্দুল কাইউম সোবহানী, খতীব: সেগুনবাগিচা জামে মসজিদ

সবার আগে ইন্টারনেট থেকে সমাজ কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? সমাজের তরুণ-তরুণীরা কিভাবে এর দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে? সে বিষয়টা বের করতে হবে। তারপর এর থেকে উত্তরোণ কিভাবে সম্ভব হবে-সে পথ খুঁজে বের করতে হবে। বিশেষত ইন্টারনেটের ক্ষতি সম্পর্কে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ইন্টারনেটে নারী ও কিশোর-কিশোরীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে।

ইন্টারনেটের অবাধ ব্যবহারে অশ্লীলতা বাড়ছে, বাড়ছে অনলাইনে জুয়া খেলা। ইন্টারনেটের মাত্রাতিরিক্ত আসক্তিতে সামাজিক ও পারিবারিক টানাপোড়েন বাড়ছে, বাড়ছে নৈতিকতার অবক্ষয়। ইন্টারনেট আসক্তি মাদকাসক্তির মতো। মাদক যেমন একটি পরিবারকে ধ্বংস করে দেয়, ইন্টারনেটের অপব্যবহারও জীবনকে শেষ করে দেয়। নেশা, জঙ্গীবাদ, দেশদ্রোহ ও অপরাধ প্রবণতায় ইন্টারনেটকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এসব ক্ষতিগুলো যখন চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। তখনই এর থেকে সমাধানের পথ খোঁজে বের করা সম্ভব হবে। তবে এর জন্য অপরিণত বয়সীদের ইন্টারনেট থেকে দূরে রাখা উচিত। পরিবারের মা-বাবাকে খেয়াল রাখতে হবে-পরিবারের সন্তান কিভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে, কোন কোন সাইট ব্যবহার করছে, কোথায় যাচ্ছে। পরিবারকে এ ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেই ইন্টারনেটের ক্ষতি থেকে সমাজকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

ইন্টারনেটকে ভালো কাজে ব্যবহার করলে ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব
মুফতি মাকসুদুল হক, খতীব:উত্তর শাহজাহানপুর জামে মসজিদ

ইন্টারনেট থেকে কীভাবে তরুণেরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, এর প্রতিকারই বা কী ইত্যাদি বিষয় চিহ্নিত করা জরুরি বলে মনে করি। কেননা ইন্টারনেট একটা বিশাল ক্ষেত্র। তরুণেরা আমাদের থেকে অনেক বেশি জানেন, বেশি বোঝেন। তারা মনে করেন, ইন্টারনেটের খারাপ দিকের তুলনায় ভালো দিক অনেক বেশি।

তাছাড়া ইন্টারনেটের ইতিবাচক ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো মানুষ তার জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারেন। আমাদের তরুণেরা নিশ্চয়ই ইন্টারনেটের ইতিবাচক ব্যবহারের মাধ্যমে এগিয়ে যাবেন। ইন্টারনেট তাদের জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। যখন সুন্দর, যুৎসই, ও ইন্টারনেটকে ভালো কাজে ব্যবহার করা হবে, তখনই ইন্টারনেটের ক্ষতি থেকে সমাজকে বাঁচানো সম্ভব হবে।

ইন্টারনেটে অতিরিক্ত স্বাধীনতাই সমাজের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিচ্ছে
মুফতি ইসমাঈল বোখারী, খতিব: দক্ষিণ কমলাপুর জামে মসজিদ

আমরা সবক্ষেত্রে স্বাধীনতা চাই। ইন্টারনেটও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে অতিরিক্ত স্বাধীনতাই আমাদের অন্যায় করতে উদ্বুদ্ধ করে। যেমন অ্যান্টিবায়োটিক খেলে অসুখ সারে। কিন্তু অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক শরীরের ক্ষতি করে। ওই পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহার করব, যেটা আমাদের জীবনের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক হয়। নিয়ন্ত্রণহীন ইন্টারনেট এই সমাজকে, জীবনকে বিপর্যস্ত করে দেয়। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতনতার উদ্যোগ নিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে অভিভাবকদের ভূমিকা রয়েছে।

ইন্টারনেটের কারণে এখনকার শিশুরা খেলাধুলা করে না। আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে না। সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে বসে থাকে। এদের ভবিষ্যৎ জীবন কেমন হবে এখনো বুঝতে পারছি না। বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, শিশুরা ইন্টারনেট আমাদের থেকে ভালো জানে। তারা কোনটা ভালো কোনটা মন্দ দুটোই জানে। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ইন্টারনেটের ভালো-মন্দ নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে। এরপর সে মোতাবেক যদি তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাহলেই সমাজ ইন্টারনেটের ক্ষতি থেকে মুক্ত থাকবে।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ