শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা ‘কোনো রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই’ শরীরে রক্ত বাড়াতে যেভাবে পালং শাক খাবেন

মাদরাসা খুললে কী হবে সিলেবাসের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

কাটছে করোনা ভীতি। দেশের স্কুলগুলোর সঙ্গে সঙ্গে খোলা হচ্ছে কওমি মাদরাসা। লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর জীবন থেকে চলে গেছে অনেকগুলো দিন। পড়ালেখার বাইরে থাকতে থাকতে ইতোমধ্যেই শিক্ষার্থীরা খেই হারিয়ে ফেলেছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর স্কুল বিষয়ক নির্দেশনার পর নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। শিগগিরই খোলা হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এমন আশার কথা সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে। কওমি বোর্ডগুলোও ভাবতে শুরু করেছে মাদরাসা খোলা নিয়ে। মাদরাসা চালু হলে কীভাবে সিলেবাস শেষ হবে তা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন দেশের বিজ্ঞ কওমি শিক্ষক ও স্কলারগণ। কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন মাসউদুল কাদির


সিলেবাস কর্মঘণ্টা ভাগ করে পড়াতে হবে: শাইখুল আদব আল্লামা সাইয়েদ আহমাদ সাঈদ

তিনটি ধাপে পড়ালে সিলেবাস শেষ করা সম্ভব। শিক্ষার্থীদের যোগ্যতাও তৈরি হবে। পরীক্ষা নিতেও সমস্যা হবে না।

প্রথমত: বোর্ড এর দায়িত্ব সিলেবাস নির্ধারণ করে দেয়া। আর তা প্রয়োগ হচ্ছে কিনা বোর্ড কর্তৃক দেখাশুনা করা।

দ্বিতীয়ত: কর্মদিবস নির্ধারণ করা। বোর্ড সিলেবাস দেয়ার পর প্রত্যেক মাদরাসা ঐ সিলেবাসকে কর্মদিবস নির্ধারণ করে বণ্টন করে তা পাঠদান করবে। যখন কর্মদিবস নির্ধারণ করে পাঠদান করা হবে তখন অল্পসময় হলেও সিলেবাস শেষ করা যাবে এবং তার ফলাফলও ভালো হবে।

তৃতীয়ত: সময়ের যথাযথ ব্যবহার করা। অন্যান্য বছরের ন্যায় ছুটি এবং বিভিন্ন প্রোগ্রাম না রাখা। পুরো সময় যদি ক্লাস করানো হয় এবং ছাত্ররা অধ্যয়নে থাকে তবে অল্প সময় হলেও ভালো ফল হবে। সিলেবাস যতটুকু দেয়া হোক তা শেষ করা সম্ভব হবে। এ জিনিসগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে যদি মাদরাসার কার্যক্রম শুরু হয় তবে সফলতার আশা করা যায় ইনশাআল্লাহ।

প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, মারকাযুস সাকাফা আল-ইসলামী, কামরাঙ্গীরচর-ঢাকা।

দরসের ক্ষেত্রে সময় নষ্ট করা যাবে না: মাওলানা মুহাম্মাদ আবু মুসা কাসেমী

আমাদের চলতি শিক্ষাবর্ষের অনেক সময় চলে গেছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মতে আগামী সেপ্টেম্বরে আমাদের মাদরাসাগুলো খুলে যাবে বলে আমরা মনে করি।

কওমি মাদরাসায় যারা অধ্যয়ন করছে তাদের শিক্ষাবর্ষের সিলেবাস অনেক বড়। আমরা যেকোনো কিতাবের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়াই এবং সারা বছর পড়াই। এ মুহূর্তে আমাদের করণীয় হবে-

১. মাদরাসা খোলার সাথে সাথে কোনো রকমের সময় নষ্ট না করা।

২. নিয়মিত দরসে উপস্থিত হয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ানো।

৩. মাবাদিয়াত ও মুকাদদিমাতের আলোচনা সংক্ষেপ করে মূল কিতাব থেকে আলোচনা শুরু করে দেয়া।

৪. শিক্ষার্থীদের তালিম তরবিয়ত ও উন্নত আখলাকের প্রতি সবিশেষ লক্ষ্য রাখা।

৫. শিক্ষার্থীদের আখিরাতমুখী করা। তালিম তরবিয়ত দাওয়াত ও তাযকিয়ার সাথে জুড়ে রাখা।

৬. শেষ রাতে আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করা।

আশাকরি এ ব্যাপারে আমাদের হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া অর্থাৎ সরকার প্রতিষ্ঠিত পরীক্ষা অথরিটি ও বেফাকসহ অন্যান্য বোর্ডের মুরুব্বিগণ গত বছরের ন্যায় এ বছরও খেয়াল রাখবেন।

শাইখুল হাদিস, জামিআ আফতাবনগর (আবদুল হাফেজ তাহসীনুল কুরআন মাদরাসা), ঢাকা

পরামর্শ সাপেক্ষে সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার চিন্তা: মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন আহমদ

শিগগিরই মাদরাসা খোলা হবে ইনশাআল্লাহ। এমন প্রত্যাশা আমাদের। ইতোমধ্যেই কয়েক মাস শিক্ষাবর্ষ থেকে বিদায় নিয়েছে। আবার মাদরাসা খোলা হলে অবশ্যই বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশসহ সব বোর্ডই সিলেবাস কতটুকু রাখা যায় তা নিয়ে আলোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আগের বছরও কয়েক মাস শিক্ষাবর্ষ থেকে করোনা মহামারির কারণে নষ্ট হয়েছিল। এবারও তা-ই হলো। আশা করছি, পরামর্শ সাপেক্ষে আমরা সিলেবাস সংক্ষিপ্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।

দারুল উলুম দেওবন্দের চিন্তা ও আদর্শে পরিচালিত আমাদের কওমি মাদরাসা। মাদরাসাগুলোতে অনেক দিন ধরে হাদিসের স্বাভাবিক চর্চা ব্যাহত হচ্ছে। বন্ধ আছে কুরআন ও হাদিসের চর্চা। আবার স্বাভাবিক গতি পেলে দেশে সবধরনের বরকতও বাড়বে ইনশাআল্লাহ। মাদরাসা খোলার আগে আগে মাদরাসা সংশ্লিষ্ট সবাইকে টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রেও চিন্তা করতে হবে। কোনো অজুহাতে যেন মাদরাসা চালুর ক্ষেত্রে বাধা না হয়।

আমাদের মুরুব্বীগণ মাদরাসা চালুর ক্ষেত্রে চেষ্টা করছেন। ইনশাআল্লাহ সফল হবেন।

সহ-সভাপতি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া

শুধু বার্ষিক পরীক্ষা হতে পারে: লাবীব আবদুল্লাহ

করোনা সংকটে দীনি মাদরাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে অনেক দিন ধরে। চলতি শিক্ষাবর্ষে এখনও নিয়মতান্ত্রিকভাবে দরস-তাদরিস ও পড়ালেখা এখনও শুরু করা সম্ভব হয়নি। কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে কোথাও কোথাও কওমী মাদরাসার নেসাব ও সিলেবাসের মাধ্যমে ইস্তেদাদ ও যোগ্যতা বিকাশ উদ্দেশ্য থাকলেও যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্যই আয়োজন করতে হয় পরীক্ষার।

এই সংকটকালে সাময়িক পরীক্ষাগুলো না নিয়ে শুধু বার্ষিক পরীক্ষা নেয়া যেতে পারে। মৌলিক কিতাবগুলোর পরীক্ষা হতে পারে শুধু ইমতিহান- পরীক্ষার একটি নির্দেশনা দ্রুত তালেবে ইলমদের জানানো সম্ভব হলে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে সহজ হবে।

নেসাবের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো পড়িয়ে রমজানের কাছাকাছি সময়ে পরীক্ষা নিলে সিলেবাস শেষ করাও সম্ভব। বোর্ড কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নিবে এই প্রত্যাশা। তালেবে ইলমকে মনে রাখতে হবে পরীক্ষার আগে ও পরে কিতাবগুলো যথাযথভাবে পড়ে আগামী দিনে যোগ্যতম ও যুগসচেতন আলেম হতে প্রত্যয়ী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ইলমে দীন হাসিল করার প্রতি মনোযোগী ও মনোনিবেশ করতে হবে। আল্লাহ সব সহজ করুন। ইলমে নাফে দিন।

পরিচালক, ইবনে খালদুন ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ