আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: রশীদ আহমদ: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর, দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষাসচিব ও শায়খুল হাদীস,বিদগ্ধ আলেমে দ্বীন আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ আহমদ বাবুনগরী রহ:এর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা, কুরআন তেলাওয়াত এবং দুআ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
গত (২০ আগস্ট) শুক্রবার বাদ মাগরিব মাদানী একাডেমী অফ নিউইয়র্ক আয়োজিত উক্ত মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মাওলানা মুহিব্বুর রহমান।সংগঠনের জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা রশীদ আহমদ এর উপস্থাপনায় ওজনপার্কস্থ সংগঠনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মাহফিলে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহ: এর জীবন ও কর্ম নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। বক্তারা বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীরের ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,তাঁর হৃদয়বিদারক ইন্তেকালের সংবাদে দেশ-বিদেশের তাঁর ছাত্র,অগণিত ভক্ত অনুরক্তসহ আমরা সবাই বিমর্ষিত ও আহত হয়েছি।
বক্তারা আরো বলেন,হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ এর আমীর হওয়ার সুবাধে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, শিক্ষা ও সমাজ গঠনে যোগ্য নেতৃত্বের আসন অলংকৃত করেছেন। বার্ধক্য ও অসুস্থতার কারণে কখনো তিনি তার সত্য এবং ন্যায়ের আদর্শ ও মিশন থেকে এক বিঘতও পিছ পাঁ হননি।জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি মসনদে হাদিসে বুখারী শরীফের দরস দিয়েছেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক মাওলানা মুহিব্বুর রহমান বলেন,আল্লামা বাবুনগরী প্রাথমিক শিক্ষা আজিজুল উলূম বাবুনগর মাদ্রাসায় শেষ করেন। এরপর তিনি মাধ্যমিক স্তর থেকে শুরু করে দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায়। তারপর পাকিস্তানের দারুল উলূম আল্লামা বিন্নুরি টাউন মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে ইলমে হাদীসের উপর উচ্চতর ডিগ্রী অর্জন করে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
এরপর আজিজুল উলূম বাবুনগর মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে শিক্ষকতায় যোগদান করেন। ২০০৫ সালে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসায় মুহাদ্দিস পদে যোগদান করেন। ২০১৭ সালে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের শায়খুল হাদীস পদে পদোন্নতি পান।
অত:পর ২০২০ ইং সালের সেপ্টেম্বরে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রাহ.)এর ইন্তিকালের পর তিনি দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষাসচিব পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
অপরদিকে ২০১৩ সালে তিনি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসচিবের দায়িত্বপান। পরবর্তীতে শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রাহ.)এর ইন্তিকালের পর ২০২০ সালের নভেম্বরের ১৫ তারিখ হেফাজত আমীর পদে মনোনীত হন। জীবনের পুরোটা সময় ইলমে দ্বীন তথা তা'লিম তারবিয়্যাতে কাঁটিয়েছেন।বিশেষ করে তাঁর হাদীসের দারস তাদরিসের অবদান জাতি কখনো ভুলবে না।
দুআ মাহফিলে মেহমান হিসেবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন দারুল উলূম নিউইয়র্কের মুহাদ্দিস মাওলানা আজিজুর রহমান ঘোগারকুলী, ম্যানহাটনের আস সাফা ইসলামিক সেন্টারের ইমাম ও খতীব মাওলানা রফিক আহমদ রেফাহী,আল মারকাজুল হানাফী বাংলাদেশ এর পরিচালক মুফতি মাওলানা নোমান ক্বাসিমী, আমেরিকান মুসলিম সেন্টারের ইমাম ও খতীব মাওলানা আতাউর রহমান জালালবাদী, কুরআন একাডেমী বিএমএমসিসির প্রিন্সিপাল মাওলানা আহমদ আবু উবায়দা,দারুল কুরআন ও সুন্নাহ'র মুহাদ্দিস মাওলানা হাম্মাদ আহমদ গাজীনগরী, আল ফুরকান জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা আহমদ আবদুল হালিম, মাদানী একাডেমী অফ নিউইয়র্কের সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা শাহেদ আহমদ ও খয়ের উদ্দিন প্রমুখ।
এছাড়াও দুআ মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবুল খায়ের,মাওলানা নাজিম উদ্দিন,আল ফুরকান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রফিক উদ্দিন, দারুল উলূম নিউইয়র্কের শিক্ষক মুফতী মুজিবুর রহমান, আন নূর কালচারাল একাডেমী নিউইয়র্কের শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আবু তাহের,বিএমএমসিসি ইসলামিক স্কুলের শিক্ষক মাওলানা মাঈন উদ্দীন,আল আমান মসজিদের সানী ইমাম হাসান আহমদ,হাফেজ মাওলানা ইউছুফ ও মুরব্বী আবদুল মুক্তাদিরসহ অনেক উলামায়ে কেরাম ও সাধারণ মুসল্লিয়ান।আল্লামা বাবুনগরী রাহিমাহুল্লাহ এর মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন অধ্যাপক মাওলানা মুহিব্বুর রহমান।
উল্লেখ্য, আল্লামা জুনায়েদ আহমদ বাবুনগরী গত ১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রামের সিএসসিআর হাসপাতালে ইন্তিকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিঊন।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। তিনি ৫ কন্যা সন্তান ও ১ পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন।
-এটি