বিশেষ প্রতিনিধি।।
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় টানা ৪০ দিনব্যাপী মসজিদে ‘তাকবীর উলা’র সঙ্গে জামায়াতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়কারী ২১ জন শিশু-কিশোরকে পুরস্কার হিসেবে একটি করে বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১১ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার গ্রিদান টেংগা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিজয়ী শিশুদের প্রত্যেককে একটি করে বাইসাইকেল তুলে দেন মসজিদ কমিটির সদস্যরা।
গ্রামের শিশুরা যাতে মসজিদে যেতে অভ্যস্ত হয়, নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারে এবং একত্ববাদ ও সমাজে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করতে পারে-এসব লক্ষ্যকে সামনে রেখে গ্রিদান টেংগা গ্রামের মাওলানা আব্দুল লতিফ (রহ.)-এর কাতার প্রবাসী সন্তান মাওলানা মাহমুদুল হাসানের উদ্যোগে ‘মাওলানা আব্দুল লতিফ (রহ.) ফাউন্ডেশ’ এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সহযোগী উদ্যোক্তা হিসেবে ছিলেন মাওলানা মাহমুদুল হাসানের আরো দুই ভাই কাতার প্রবাসী মাওলানা এনামুল হাসান আরিফ এবং আরেক ভাই মাওলানা নাজমুল হাসান তারিফ।
প্রতিযোগিতায় শর্ত ছিল ১২ থেকে ২৫ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের স্থানীয় গ্রিদান টেংগা জামে মসজিদে গিয়ে জামায়াতের সঙ্গে টানা ৪০ দিন ধারাবাহিকভাবে নামাজ আদায় করা এবং নামাজে অধিক প্রয়োজনীয় ১০ টি সুরা সহীহ-শুদ্ধ ভাবে মুখস্থ করা। পুরস্কার হিসেবে তাদের প্রত্যেককে একটি করে বাইসাইকেল প্রদান করা হবে।
প্রতিযোগিতায় সাড়া দিয়ে প্রথম দিকে অন্তত ৪৫ জন শিশু-কিশোর নামাজ আদায় শুরু করলেও চূড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত ২১ জন শিশু-কিশোর টিকে থেকে বিজয়ী হয়েছে। স্থানীয় ও ঢাকা থেকে আগত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বুধবার সকালে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
ব্যতিক্রমধর্মী এই আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা কাতার প্রবাসী মাওলানা মাহমুদুল হাসান জানান, বর্তমান আধুনিক যুগে অধিকাংশ শিশুরাই মোবাইল, টিভি এবং ল্যাপটপের স্ক্রীনে নিজেকে সীমাবদ্ধ করে ফেলছে। শিশুদের মোবাইল আসক্তি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় বর্তমানে বেশিরভাগ শিশুদের মধ্যেই ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে অনীহা সৃষ্টি হয়েছে।
শিশুরা যাতে নিয়মিত মসজিদে যেতে অভ্যস্ত হয়, নামাজের ফজিলত সম্পর্কে জানতে পারে এবং শিশুদের মধ্যে যাতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনে আগ্রহ সৃষ্টি হয়-এমন উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে আমাদের এমন কর্মসূচি হাতে নেওয়া। এতে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিশু অংশগ্রহণ করলেও তাদের থেকে ২১ জন বিজয়ী হয়েছে।
সহযোগী উদ্যোক্তা নাজমুল হাসান তারিফ অনুভূতি জানিয়ে বলেন, পুরস্কার হিসেবে পাওয়া সাইকেল চালিয়ে শিশুদের শারীরিক ব্যায়ামের কাজ সম্পন্ন হবে এবং শিশুরা সুন্দর সময় কাটাতে পারবে-এতে তাদের মাঝে মোবাইল, অনলাইন গেম, টিভি আসক্তি কিছুটা হলেও কমবে এবং শিশুরা শারীরিক ও মানসিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে ইনশাআল্লাহ!
সর্বোপরি নৈতিকতায় আমরা আমাদের গ্রামকে একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি-সেই থেকেই এই আয়োজন। সবার সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আমরা আরো সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ করবো-এজন্য সবার নিকট দোয়া কামনা করি।
-কেএল