মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


বাগেরহাটে পানিবন্দি শতশত পরিবার, ঝুঁকিতে ষাটগম্বুজ মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: বাগেরহাটে প্রবহমান ‘কুড়ির খাল’ দখল করে মাছের ঘের করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। ফলে গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে বিশ্ব ঐতিহ্য ষাটগম্বুজ মসজিদ ঝুঁকিতে পড়াসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বলছে এভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলে হুমকিতে পড়বে ষাটগম্বুজ মসজিদ। আর ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুফল মেলেনি।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা এলাকায় কয়েকজন স্থানীয় প্রভাবশালী প্রবহমান ‘কুড়ির খাল’ দখল করে মাছের ঘের করেছে। ফলে গত কয়েকদিনের বর্ষণে হজরত খানজাহান আলী নির্মিত বিশ্ব ঐতিহ্য (ওয়ার্ড হ্যারিটেজ) ষাটগম্বুজ মসজিদসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

ষাটগম্বুজ মসজিদের মুসল্লি শেখ আব্দুল হালিম জানান, যুগযুগ ধরে ‘কুড়ির খাল’ দিয়ে এই অঞ্চলের পানি নদীতে চলে গেছে। একটি প্রভাবশালী মহল সেই খালে অবৈধ ভাবে ৫ থেকে ৭টি বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের করেছে।

বৃষ্টি হলেই মসজিদের তিন পাশে পানি জমে। এতে মসজিদের দেয়ালে শেওলা পড়ে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তিনি দ্রুত দখলদারদের হাত থেকে খাল মুক্ত করার দাবি জানান।

ষাটগম্বুজ মসজিদের ইমাম মাওলানা হেলাল উদ্দীন মাতব্বর বলেন, মসজিদের ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই ভাল। কিন্তু যে খাল দিয়ে পানি সরে যাবে সেই ‘কুড়ির খাল’ দিয়ে এখন আর পানি সরতে পারছে না। খালে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করায় সামান্য বৃষ্টি হলেই ষাটগম্বুজ মসজিদের তিন পাশে এবং পার্শ্ববর্তী ফুল বাগানে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

এতে মসজিদের দেয়ালের নিচের দিকে ড্যাম উঠে শেওলা পড়েছে। মসজিদের মেঝে স্যাঁতসেঁতে হয়ে ব্যবহার অনুপযোগী হতে চলেছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।

বাগেরহাট প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ষাটগম্বুজ মসজিদের কাস্টডিয়ান মো. যায়েদ বলেন, বৃষ্টি হলেই ষাটগম্বুজ মসজিদের তিন পাশে অনেক পানি জমে। যার ফলে মসজিদের দেয়ালের নিচের দিকে ফাঙ্গাসের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ষাটগম্বুজ মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জলাবদ্ধতার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

সুন্দরঘোনা গ্রামের বৃদ্ধ শেখ ওয়াজেদ আলী জানান, দীর্ঘদিন ‘কুড়ির খাল’ দিয়ে এই অঞ্চলের পানি সরে যেত। সেই খালটি কয়েক জন দখল করেছে। ফলে এখন সবার বাড়ি ঘরে পানি ওঠায় বসবাস করতে কষ্ট হচ্ছে।

কৃষক সাইদুল মলঙ্গী বলেন, এই খালটি কয়েকজন প্রভাবশালী দখল করে মাছের ঘের করার পর এখন আর পানি সরে না। প্রায় ৫০ ফুট খাল দখল করে এক ফুট ছোট একটা নালা কেটে দিয়েছে। তাও আবার বাঁধ দিয়ে দিয়ে পানি যাতে না সরতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছে।

বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বলেন, ভারী বর্ষণ হলে বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। কিছু কিছু স্থানে অবৈধভাবে সরকারি খাল প্রভাবশালীরা দখল করেছে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। অচিরেই সব খাল অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ