আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: উদ্বোধনের সাড়ে সাত মাস পর আগামী ১ আগস্ট থেকে ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে নিয়মিত পণ্যবাহী ট্রেন আসবে নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনে।
এ উপলক্ষে ভারতীয় রেলওয়ের দুটি ইঞ্জিন ট্রায়াল করেছে হলদীবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে চিলাহাটি স্টেশন পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে হলদীবাড়ি-রেলপথ হয়ে নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনে এসে পৌঁছায় বেলা ১২টা ৩৮ মিনিটে।
ভারতীয় রেলওয়ের ট্রায়াল ইঞ্জিন দুটি চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছালে ইঞ্জিন দুটির চালক ও গার্ড, পরিচালকসহ ১২ জনের প্রতিনিধি দলকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন বাংলাদেশ রেলওয়ে (পশ্চিমাঞ্চল) ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মৃধা ও চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার আশরাফুল ইসলাম। এ সময় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ইমিগ্রেশন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে দুপুর ১টা ৫৮ মিনিটে চিলাহাটি স্টেশন থেকে ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায় ভারতীয় ইঞ্জিন দুটি।
ভারতীয় রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ গুডস গার্ড মুকেশ কুমার সিং বলেন, ‘আগামী ১ আগস্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে পণ্যসামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশের চিলাহাটি স্টেশেন আসবে ভারতের পণ্যবাহী ট্রেন। ওই দিন ৩০টি রেল ওয়াগানে পাথর ও গম নিয়ে পণ্যবাহী ট্রেনটি চিলাহাটি আসার কথা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) আমাদের দু’টি ইঞ্জিন ট্রায়াল দিচ্ছি এই রুটে।
সকাল ১০টা ১০ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেড়ে দু’টি ইঞ্জিন নিয়ে চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছি বেলা ১২টা ৩৮ মিনিটে।’
বাংলাদেশ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের উর্দ্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতান মৃধা বলেন, ‘আগামী ১ আগস্ট থেকে হলদীবাড়ি-চিলাহাটি রুটে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দু’দেশের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সেই লক্ষ্যে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আজ এই রুট দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি-চিলাহাটি-নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন পর্যন্ত তাদের দু’টি ইঞ্জিন ট্রায়াল সম্পন্ন করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সপ্তাহে ক’দিন এবং কটি পণ্যবাহী ট্রেন আসবে তা নিয়ে দু’দেশের রেল কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত সিডিউল এখনও আমরা হাতে পায়নি। তবে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমল থেকে অবিভক্ত ভারতের এই অঞ্চলে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান রেলপথ ছিল হলদিবাড়ী-চিলাহাটি রেলপথ।
এই পথ দিয়ে দার্জিলিং থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত একাধিক পণ্যবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করত।
১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর এই রেলপথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই থেকে স্থবির হয়ে পড়ে আশপাশের জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য। তখন থেকেই ব্যবসায়ীসহ এলাকার মানুষের দাবি ছিল পুনরায় এই রেলপথ চালুকরণের।
এই দাবিতে কয়েক দশক থেকে জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে জেলা ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। ওই দাবির প্রেক্ষিতে দীর্ঘ ৫৫ বছর পর পুনরায় রেলপথটি চালুর উদ্যোগ নেয় দু’দেশর সরকার।
দীর্ঘ ৫৫ বছর বন্ধ থাকার পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর হলদীবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথে পণ্যবাহী ট্রেন এবং চলতি বছরের ২৭ মার্চ একই রুটে যাত্রীবাহি মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। তবে মহামারী করোনার কারণে বর্তমানে বন্ধ রয়েছে হলদীবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথে ট্রেন চলাচল।
এনটি