রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

হাইয়াতুল উলইয়া বাদ দিয়ে, কওমি মাদরাসা নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন কমিটি নয়: মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

কওমি মাদ্রাসার সিলেবাসে আধুনিকায়ন নিয়ে বিবিসি বাংলার করা এক প্রতিবেদনে সৃষ্ট পরিস্থিতির ওপর বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশের সহ-সভাপতি, তাহাফফুজে মাদারিসে কওমিয়া বাংলাদেশের যুগ্ম আহ্বায়ক ও দারুল উলুম রামপুরার মোহতামিম মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ।

৫ জুলাই (সোমবার) ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ বক্তব্য দেন তিনি।

ভিডিও বার্তায় দেওয়া বক্তব্যে মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু বক্তব্য তুলে ধরছি। প্রথমে আমি বলতে চাই কওমী সনদের স্বীকৃতি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারো চাপে পড়ে দেননি। বরং তারা স্বপ্রণোদিত হয়ে আন্তরিকতার সাথে এই সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। এক্ষেত্রে কারো কোন হস্তক্ষেপের' ফাঁকফোকর রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আজ থেকে চার পাঁচ দিন আগে বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন হয়েছে, তা আমি নিজেও পড়েছি,  এতে আমার মনে হয়েছে এ বিষয়টি পুরোপুরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সরকারের ঊর্ধ্বতন যারা আন্তরিকভাবে কওমী সনদের স্বীকৃতির ব্যাপারে ভূমিকা রেখেছেন তাদের নলেজের বাইরে হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিবেদনে শিক্ষা উপমন্ত্রী কিছু কথা বলেছেন, এটা তার ব্যাক্তিগত কথা, একে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কথা বলে আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। কারণ প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত সদিচ্ছায় এই সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন, এক্ষেত্রে তার দৃষ্টিভঙ্গি ছিল স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি দেশে ইসলামী সেক্টরগুলোর দখল করে রেখেছে , কিন্তু যারা অসাম্প্রদায়িক ও দেওবন্দের চেতনা লালনকারী তাদেরকে কেন এসব সেক্টর থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে?- এই মর্মবেদনা থেকে প্রধানমন্ত্রী স্বীকৃতি দিয়েছেন।

ভিডিও বার্তায় তিনি আরো বলেন, কওমি সনদের স্বীকৃতির প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়টি স্পষ্ট রয়েছে যে, কওমি মাদ্রাসাগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে চলবে। সরকারের পক্ষ থেকে এখানে কোনো হস্তক্ষেপ চলবে না; তবে এতটুকু রয়েছে যে মাঝে মাঝে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে হায়াতুল উলিয়া তাদের কার্যক্রম অবহিত করবে। তাই হাইয়াকে বাদ দিয়ে কওমি মাদরাসার নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন কমিটি গঠন হবে তা হতে পারে না।

‘এছাড়া হাইয়ার পক্ষ থেকে তো চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয় থাকার কারণে আমরা মিটিংয়ে যোগ দিতে অপারগ । সুতরাং এ নিয়ে ওলামা ও তালাবাদের দুশ্চিন্তার কিছু আছে বলে আমি মনে করি না’ বলেন মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ।

‘কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষার প্রতি উদ্বুদ্ধকরণ ও কর্মমুখী করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে ’-শিক্ষা উপমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, মাননীয় উপমন্ত্রী কওমি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা না করলেও চলবে। আবহমান কাল ধরে কওমি শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে কখনো সরকারের কাছে রুটি-রুজির জন্য ধরনা দেয়নি। ইতিহাসে কোথাও এটা পাওয়া যায় না যে, রুটি-রুজির জন্য কওমি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের উন্নয়নের জন্য কর্মপন্থা অবলম্বন করতে পারি, সেটা আমাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তাই কওমি শিক্ষার্থীদের রুটি-রুজির জন্য তাদের ভাবতে হবে না, এতদিন তারা কোথায় ছিলেন? প্রশ্ন তোলে তিনি বলেন, কওমি শিক্ষার্থীরা দেশে প্রতিষ্ঠিত এবং এতদিন তারা কখনও সরকারের কাছে বোঝা হননি।

তবে মন্ত্রী কারিগরি শিক্ষার অধীনে এনে কওমি শিক্ষার্থীদের কর্মমুখী করার যে পন্থার কথা বলেছেন তার জন্য মন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এসব নিয়ে মন্ত্রীর ভাবার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।

বিবিসির প্রতিবেদনে কওমি শিক্ষার আধুনিকায়ন করার যে বিষয় তুলে ধরা হয়েছে সে প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি আরো বলেন, এ বিষয়টি পুরো অবান্তর ও অবাস্তব, কারণ কওমি শিক্ষার মূল সিলেবাস হলো কুরআন।  কুরআন অপরিবর্তনীয় আর কুরআনের আরেকটি রূপ হল হাদিস, এটাও অপরিবর্তনীয়।

তিনি বলেন, কুরআন ও হাদিস চির নবীন, এর মাঝে সংযোজন বিয়োজনের চিন্তা, চিন্তার বাতুলতা ছাড়া আর কিছু নয়।

তিনি আরো যোগ করেন, এমপি, মন্ত্রী, সচিব, প্রফেসর যারা কওমি সিলেবাসে আধুনিকায়নের কথা বলেন তাদের এ বিষয়ে কথা বলার কোন অধিকার আছে বলে আমি মনে করি না, কারণ তারা কুরআন বিষয়ে কোনো জ্ঞান রাখেন না। যারা কওমি সিলেবাসে আধুনিকায়নের কথা বলেন তাদের প্রতি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন-যারা দোয়ায়ে কুনুত, দোয়া ইউনুস শুদ্ধভাবে পড়তে পারে না, কুরআন কি জিনিস তা বুঝেন না তারা কিভাবে কওমি সিলেবাস এর আধুনিকায়ন করবেন? এটা কখনো সম্ভব নয়।

বর্তমানে সরকার ও আলেম-উলামাদের মাঝে বিব্রতকর কিছু পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে একটি মহল এ পরিস্থিতির তৈরি করেছে, তবে শিগগির এ পরিস্থিতি দূর হবে এবং সবকিছু স্বাভাবিক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ