শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


আল্লাহর সাহায্য ছাড়া মুক্তির উপায় নেই: আ.খ.ম আবুবকর সিদ্দীক

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

করোনাকালে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি শিক্ষার্থীও। দিনমজুরের মজুরি না পাওয়ার মতোই দিনশেষে কোনো নতুন সবক পাচ্ছে না শিক্ষার্থীরা। করোনাকালের এ অবসরে কীভাবে সময় কাটাবে দেশের ছাত্র-ছাত্রীরা? এ বিষয়ে রাজধানী ডেমরার দারুন নাজাত সিদ্দীকিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আ.খ.ম আবুবকর সিদ্দীক গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষার্থীদের। তার সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের নিউজরুম এডিটর মোস্তফা ওয়াদুদ।।


তিনি বলেন, চলমান এ সময়ে শিক্ষার্থীরা করোনাভাইরাস থেকে মুক্তির জন্য বেশি বেশি দোয়া করবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করবে। আর নিজেদের উদ্যোগে পড়াশোনা করবে। শিক্ষার্থীদের জীবন খুবই মূল্যবান। প্রায় দেড় বছর কেটে গেল করোনায়। অনেক সময় নষ্ট হয়ে গেছে। আর নষ্ট করা যাবে না। অতএব এখন যে যেভাবে পারে সময়কে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, আশা করি আল্লাহর রহমতে এক সময় এই মহামারী থাকবে না। কিন্তু জীবনতো থেমে থাকবে না। জীবন চলতেই থাকবে। সুতরাং যাতে সময় নষ্ট না হয়, সেদিকে খুব বেশি সচেতন থাকবে। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করবে। যেহেতু আগামীবছর উপরের ক্লাসে পড়তে হবে। পরীক্ষা দিতে হবে। তাই করোনার এ সময়গুলোতে শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের সহযোগিতায় ও শিক্ষকদের পরামর্শ নিয়ে চলবে। যারা উপরের ক্লাসে আছে, তারা নিজেদের ক্যারিয়ার ও ফিউচার প্লান নিয়ে চিন্তা করবে।

শিক্ষার্থীদের থেকে যদি কেউ বিদেশে উচ্চ শিক্ষা লাভ করতে চায়, তাহলে সেসব বিষয়ের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। অথবা কেউ যদি অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পড়তে চায়, তাহলে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে। মোটকথা কারো সময় যেনো নষ্ট না হয় সে বিষয়ে এলার্ট থাকবে। সময় অমূল্য সম্পদ। এটাকে হেলায়-খেলায় করা যাবে না।

শিক্ষার্থীরা মানবিক কি কি কাজে অংশ নিতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ আ.খ.ম আবুবকর সিদ্দীক বলেন, আসলে মানবিক কাজের কথা যদি বলতে যাই, তাহলে সবার সামর্থ্য তো এক না। যার যার সামর্থ মোতাবেক কাজ করবে। তবে আমরা সবাই একটা কাজ করতে পারি, সেটা হলো সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে উৎসাহিত করতে পারি। এটা আমাদের একটি মানবিক কাজ।

আবার আমাদের মাঝে যাদের সামর্থ্য আছে, তারা এই করোনা মহামারীর কারণে যারা নানান সংকটে আছে, সেটা খাদ্য সঙ্কট হোক, চিকিৎসা সংকট হোক, বা যে কোনো ধরনের সংকট হোক-তাদের সহযোগিতা করতে পারি। আবার শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে, তারা যাদের সামর্থ্য নেই তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি।

সবশেষ এক প্রশ্নের জবাবে দারুন্নাজাত কামিল মাদরাসার এ অধ্যক্ষ বলেন, আমি আপনার মাধ্যমে দেশবাসীকে, বিশ্ববাসীকে জানাতে চাই। করোনার মতো এই মহাবিপদ আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসছে। আর আল্লাহ পাকের সাহায্য ছাড়া এ বিপদ কখনোই কাটবেনা।

সরকার যত ধরনের ব্যবস্থাই গ্রহণ করুক, সেটা উসিলা মাত্র। তবে এর সফলতা বা এর থেকে উত্তরনের মাধ্যম হলো আল্লাহর সাহায্য। এজন্য আমাদের একজন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে, রাষ্ট্রপ্রতি থেকে শুরু করে সকলের মনের ভেতর এই বিশ্বাস থাকতে হবে যে, আল্লাহ তাআলার কাছে আমাদের তাঁর অনুগ্রহ চাওয়া দরকার। তার কাছে বিনয়ীভাবে প্রার্থনা করা দরকার। এই বিপদ থেকে রক্ষার জন্য আমাদের কায়মনোবাক্যে তার কাছে ক্ষমা চাওয়া আবশ্যক।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় অন্যান্য বিষয় যেভাবে হাইলাইট হচ্ছে, যেমন করোনার স্বাস্থ্যবিধি, ভ্যাকসিন ও চিকিৎসা। সেভাবে  কিন্তু আল্লাহর অনুগ্রহ যে চাইতে হবে, অনুগ্রহ পাবার জন্য যে আল্লাহর দিকে রুজু হতে হবে। সে বিষযটি হাইলাইট হচ্ছে না।

আমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত হয়ে যাই-এমন কাজ থেকে বিরত থাকা বা আল্লাহর অনুগ্রহ পাই এরকম কাজ করা- এগুলো আমাদের মিডিয়াতে ততটা আসছে না। মিডিয়া অথবা আমাদের দায়িত্বশীলদের জবানে, মুখে বা আচরণে ওইভাবে এই বিষযগুলো হাইলাইট হচ্ছে না। এ বিষয়টি আমাকে আহত করে।

এজন্য আমি অনুরোধ করবো, আমরা যেনো বিশ্বাস করি, আমাদের জীবন-মৃত্যু, সুস্থতা-অসুস্থতা সব আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া এর থেকে আমাদের মুক্তির উপায় নেই। এজন্য আমাদের আল্লাহমুখী হওয়া দরকার। আমাদের আচরণে, চিন্তায়, কথায় ও আমাদের দোয়ায় সবকিছুতে আল্লাহমুখী হওয়া চাই। এইটাই আমি আপনার মাধ্যমে সকলের কাছে পৌঁছাতে চাই।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ