শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না : মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী শীত ও শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস ফ্যাসিবাদ বারবার ফিরে আসবে, সতর্ক থাকতে হবে: গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা ‘কোনো রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেয়ার ইচ্ছা জামায়াতের নেই’ শরীরে রক্ত বাড়াতে যেভাবে পালং শাক খাবেন

করোনাকালে কেমন আছেন মাদরাসা মুহতামিমরা-২

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশ্বব্যাপী চলছে করোনা মহামারি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম নীতি মেনে চলছে পৃথিবী। বাংলাদেশ ও তার বাইরে নয়। ধাপে ধাপে লকডাউনে যাচ্ছে ৫৬ হাজার বর্গ মাইলের এ ছোট দেশ। এদিকে করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ শেষ হয়ে এখন চলছে তৃতীয় ঢেউ। বাংলাদেশ সরকার করোনা শুরু হওয়ার পর গতবছরের ১৭ মার্চ বন্ধ করে দেয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এপর সে বছরের ১২ জুন দেশের কওমি মাদরাসাগুলো খুলে দিলেও চলতি বছরের ৮ এপ্রিল আবার বন্ধ করে দেয় সব মাদরাসা। বর্তমান সীমিত পরিসরে জারী করা চলমান লকডাউন থাকবে আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত। আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত।

এ দীর্ঘ সময় জেনারেল সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের বেতন জারী থাকলেও বন্ধ রয়েছে দেশের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান, কোচিং সেন্টার ও প্রায় ৪০ হাজার কওমি মাদরাসায় খেদমাত করা শিক্ষকদের বেতন। শিক্ষকদের বেতন দিতে না পেরে চরম উৎকণ্ঠার মাঝে সময় পার করছেন মাদরাসার মুহতামিমরা। করোনাকালের এ বেদনার কথা-ই ধারাবাহিক প্রকাশিত হচ্ছে আওয়ার ইসলামে। আজ দেশের খ্যাতিমান দুইজন মুহতামিমের কথা তুলে ধরা হচ্ছে। তাদের সাথে কথা বলে ধারা প্রতিবেদনটি সাজিয়েছেনআওয়ার ইসলামের নিউজরুম এডিটর মোস্তফা ওয়াদুদ।


এবছর এখনো সব শিক্ষকদের বেতন দিতে পারিনি: মাওলানা হেলাল উদ্দিন
মুহতামিম, জামিয়া কোরআনিয়া দারুল উলুম, চরকমলাপুর মাদরাসা, ফরিদপুর

ফরিদপুর জেলা সদরে অবস্থিত জামিয়া কোরআনিয়া দারুল উলুম, চরকমলাপুর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা হেলাল উদ্দিন বলেন, আমাদের মাদ্রাসাটি ফরিদপুর শহরে অবস্থিত। তারপরেও করোনাকালে মাদ্রাসার অবস্থা তেমন ভালো নেই। ব্যক্তিগতভাবে আমি ভালো থাকলেও মাদ্রাসার দিক থেকে একটুও ভালো নেই। বিশেষত শিক্ষকদের বেতন, স্টাফ-কর্মচারীদের পারিশ্রমিক যথাযথভাবে ব্যবস্থা না হওয়ায় বেশ পেরেশানিতে আছি।

তিনি বলেন, বিশেষত আমাদের মাদ্রাসার নিয়ম মোতাবেক রমজানের পরেই সকল শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করে দেওয়া হয়। ক্লিয়ার করে দেওয়া হয় স্টাফদের পারিশ্রমিকও। কিন্তু এবছর এখনো সব শিক্ষকদের বেতন দিতে পারিনি। এর অন্যতম কারণ হলো, করোনাকালে আমাদের সেভাবে কালেকশন হয়নি। মানুষের সাধারণ দানও তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। ছাত্রদের থেকে বেতনও নেয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে করোনাকালে মাদ্রাসার দিনকাল ভালো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, একজন মুহতামিম হিসেবে যদি বলি, তাহলে মাদ্রাসাগুলো খুলে দেওয়ার আগ পর্যন্ত আমাদের এই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা অসম্ভব। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করবো, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে মাদ্রাসাগুলো খুলে দিন।

মাওলানা হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, আমার মাদ্রাসায় প্রতিবছর ৬০০ থেকে ৬৫০ ছাত্র ভর্তি হয়। এবছর করোনার কারণে ছাত্রভর্তি তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে মাদরাসা খুললে হয়তো আরও কিছু ছাত্র ভর্তি হবে ইনশাআল্লাহ।

করোনাকালে শিক্ষকদের সব বেতন পরিশোধ করতে পারিনি: মাওলানা মাকবুল এলাহী
মুহতামিম, কদমতলী মোহসেনিয়া কওমি মাদরাসা, দাউদকান্দি কুমিল্লা

কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার কদমতলী মোহসেনিয়া কওমি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মাকবুল এলাহী আওয়ার ইসলামকে বলেন, যখন থেকে করোনা শুরু হয়েছে তখন থেকেই আমরা চরম অভাবের মাঝে দিন গুজরান করছি। আমাদের শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছি না নিয়মিত। দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মাদ্রাসাগুলো বন্ধ থাকায় ছাত্রদের থেকেও কোন ধরনের বেতন তুলতে পারছি না।

সরকারের কাছে অনুরোধ করে এ মুহতামিম বলেন, যতদিন পর্যন্ত মাদরাসাগুলো বন্ধ থাকবে, কোরআনের আওয়াজ বন্ধ থাকবে ততদিন পর্যন্ত দেশ থেকে খোদায়ী গজব দূর হবে না। তাই যত দ্রুত সম্ভব দেশের কওমী মাদ্রাসাগুলো খুলে দিয়ে দেশকে আজাবের হাত থেকে বাঁচান। সেই সাথে আলেমদের যথাযথ জীবনযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ করে দিন।

সবশেষ তিনি দেশের সকল বন্ধ মাদরাসা খুলে দিয়ে ব্যাপকভাবে কুরআনুল কারীম তেলাওয়াতের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, করোনা মহামারি থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীকে হেফাজতের লক্ষে কুরআনুল কারীমের তেলাওয়াত ও বেশি বেশি ইস্তেগফার করা জরুরি।

প্রথম পর্ব পড়ুন: করোনাকালে কেমন আছেন মাদরাসা মুহতামিমগণ!

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ