আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পাবনার ভাঙ্গুড়ায় রেলস্টেশনে কংক্রিট স্লিপার উত্তোলনকারী ক্রেন উল্টে বন্ধ হওয়ার পাঁচ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। রবিবার দুপুর ২টার দিকে ক্রেনটি উল্টে যাওয়ার পর তা উদ্ধারে পাকশী থেকে রওনা হওয়া উদ্ধারকারী ট্রেনও ঈশ্বরদী স্টেশন পার হয়ে লাইনচ্যুত হয়। এতে রাজধানীর সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
পরে স্থানীয়দের তৎপরতায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ ও ভাঙ্গুড়া পৌর মেয়র গোলাম হাসনায়েন রাসেলের প্রচেষ্টায়, স্থানীয় এলাকাবাসী ৫ ঘন্টা পর রেললাইন সচল করেন। ঢাকা অভিমুখে যাওয়া যাত্রীবাহী তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে চলাচল করে। রোববার (২০ জুন) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় রেল যোগাযোগ শুরু হওয়ার পর খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকা অভিমুখী আন্তঃনগর চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অন্য ট্রেনগুলো ছেড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভাঙ্গুড়া বাজার রেলস্টেশনে বেশ কিছুদিন ধরে লাইনের সংস্কার কাজ চলছে। লাইনের পুরোনো ও ক্ষতিগ্রস্ত কংক্রিট স্লিপার সরিয়ে নতুন স্লিপার বসানোর কাজ চলছিল। কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে মাটি নরম হয়ে যায় যার কারণে ভারী ক্রেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলীর অদূরদর্শিতায় উল্টে গিয়ে মূল রেললাইনের ওপর আছড়ে পড়ে। এতে রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানান, রেললাইন সংস্কারের সময় বৃষ্টির কারণে মাটি নরম ছিল। মাটি নরম থাকার ফলে ক্রেনের পায়া মাটিতে দেবে লাইনের ওপর উল্টে পড়ে। প্রধান লাইনে ক্রেনটি পড়ার কারণে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ দুপুরের পর থেকে বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি জানান, ঢাকাগামী তিনটিসহ ঢাকা থেকে আসা রাজশাহীগামী ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন আগের স্টেশনে আটকা পড়েছে। পাকশী থেকে রওনা হওয়া রিলিফ ট্রেনটি পৌঁছালে দুর্ঘটনার কবলে পড়া ক্রেনটি তুললে রেললাইন সচল হবে।
এ দিকে দুর্ঘটনাকবলিত ক্রেন উদ্ধারে ঈশ্বরদী থেকে আরেকটি ট্রেন রওনা হলে স্টেশন পার হয়ে কিছুটা পথ এসেই লাইনচ্যুত হয়। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
পরে সন্ধ্যায় পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানান, দুর্ঘটনার পর পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ এর কর্মচারী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গ্রামের লোকজন মিলে রিলিফ ট্রেনের অপেক্ষায় না থেকে ভাঙ্গুড়া পৌরসভার সহযোগিতা নেন।
পৌরসভা থেকে ভারী এস্কেভেটর দিয়ে ক্রেনটি সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হন তারা। পরে রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগের প্রকৌশলী-২ আব্দুর রহিমের নেতৃত্বে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে মেইন লাইনটি সচল করা হয়। প্রথমে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস সন্ধ্যায় চাটমোহর থেকে ঢাকার দিকে ছেড়ে যায়। পরে মুলাডুলি থেকে দ্রুতযান এক্সপ্রেস, মাঝগ্রাম থেকে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকার দিকে ছেড়ে গেছে।
এনটি