রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

তাফসির শিক্ষার্থীদের জন্য মাওলানা আব্দুল মালেকের ১০ উপদেশ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলফিকার জাহিদ।।

কুরআনের মর্ম উদ্ধার, তা থেকে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত বিধি-নিষেধ বুঝা, অন্যের কাছে পৌঁছে দেওয়া ও তাফসির  শাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে কোরআনের তাফসির পড়তে আগ্রহীদের উদ্দেশ্যে দেশের উচ্চতর গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার আমীনুত তালীম মাওলানা আব্দুল মালেক দামাত বারকাতুহু-এর  ১০ উপদেশ তুলে ধরা হল তাফসির শিক্ষার্থীদের জন্য:

১. কুরআন মজীদের উপর ঈমানকে দৃঢ় করুন এবং পুনঃপুনঃ তার নবায়ন করুন।

২. অন্তরে কুরআনের আকর্ষণ ও ভালবাসা বৃদ্ধি করুন।

৩. বিশ্বাস রাখুন যে, কুরআন মজীদের বিধান ও শিক্ষা চিরন্তন ও শাশ্বত, যা বিশেষ স্থান বা কালের গন্ডিতে সীমাবদ্ধ নয় কিংবা বিশেষ শ্রেণী ও জনগোষ্ঠীর জন্যও প্রদত্ত নয়; বরং স্থান-কাল নির্বিশেষে গোটা মানবজাতির জন্য  অবশ্যগ্রহণীয় ও অপরিহার্যরূপে অনুসরণীয়। এর প্রতি বিশ্বাস ও ঈমান এবং এর মর্যাদা ও ইহতিরাম মানুষ মাত্রেরই অপরিহার্য কর্তব্য। বিশ্বাস রাখুন যে, ‘উন্নতি ও অগ্রগতি’র এই যুগেও সত্যিকারের উন্নতি শুধু কুরআনের পথেই অর্জিত হতে পারে এবং ‘জ্ঞান’ ও ‘আলো’র এই যুগেও প্রকৃত আলো কুরআন থেকেই পাওয়া যেতে পারে।

৪. বিশ্বাস রাখুন যে, আমাদের পূর্বসূরী সালাফে সালেহীন কুরআন আমাদের চেয়ে বেশি বুঝতেন এবং কুরআনের প্রতি ভক্তি ও ভালবাসাও তাঁদের বেশি ছিল। তেমনি জীবনের সকল অঙ্গনে কুরআনের অনুসরণ, কুরআনী বিধান বাস্তবায়ন এবং এ পথে সর্বস্ব ত্যাগের প্রেরণা ও আকাঙ্খাও তাঁদের অন্তরে বহুগুণ বেশি ছিল।

৫. ইয়াকীন করুন যে, দ্বীনের আমানত বহনকারী আলিমগণ, যারা রাতদিন কুরআন-হাদীস, সুন্নাহ ও সীরাতের পঠন-পাঠনে মশগুল তাঁরা আমাদের চেয়ে কুরআন বেশি বোঝেন। কুরআনের মর্যাদা ও ইহতিরাম তাঁদের অন্তরে আমাদের চেয়ে বেশি এবং সমাজে কুরআনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খাও তাঁদের অন্তরে প্রবল।

৬. বিশ্বাস রাখুন যে, কুরআন বোঝা, কুরআনের শিক্ষা ও বিধান মুখস্থ করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা আজকের নতুন বিষয় নয়। কুরআন নাযিলের যুগ থেকেই তা চলে আসছে। আর ইসলামের প্রথম যুগে, বিশেষত খাইরুল কুরূনে (সাহাবা-তাবেয়ীন যুগে) তা হয়েছে সম্পূর্ণ নববী তরীকায়। এজন্য কুরআনের কোনো আয়াত বা পরিভাষার এমন কোনো ব্যাখ্যা যদি কেউ করে, যা ইসলামের কোনো মুতাওয়ারাছ ও খাইরুল কুরূন থেকে চলে আসা আকীদা কিংবা ইজমায়ী ও সর্বসম্মত বিধানের পরিপন্থী তাহলে বুঝতে হবে, লোকটি হয় নিজেই  বিভ্রান্তির শিকার কিংবা পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তি সৃষ্টিতে লিপ্ত।

৭. ইয়াকীন রাখুন যে, কুরআন হল আসমানী ফরমান ও ইলাহী-নসীহতনামা, আহকামুল হাকিমীনের আইন-কানূন ও তাঁর দেওয়া বিধান-শরীয়ত। কুরআন হল আসমানী ওহীর শাশ্বত, চিরন্তন ও সুসংরক্ষিত সূত্র। কুরআন হল নূর ও জ্যোতি এবং শিফা ও উপশম। কুরআন হল সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় এবং আলো-অন্ধকারের মাঝে পার্থক্য নিরুপনকারী। হেদায়েত ও গোমরাহি এবং সুন্নত ও বিদআতের মাঝে স্পষ্ট পার্থক্যরেখা। কুরআন হল মাওলার যিকর ও স্মরণের সর্বোত্তম উপায়। যে আল্লাহকে ভালবাসে কুরআন তার প্রেম-যন্ত্রণার উপশম, যে আল্লাহকে পেতে চায় কুরআন তার সান্নিধ্য-পিপাসার ‘আবে যমযম’।

কুরআন কি শুধু জ্ঞানের সূত্র? কেবল জ্ঞানার্জনের জন্যই কি আপনার কুরআন-অধ্যয়ন? বরং কুরআনের যতগুলো গুণ কুরআনে লেখা আছে সবগুলোকে চিন্তায় হাজির রাখুন এবং সে হিসেবেই কুরআনের সাথে আস্থা ও সমর্পণের সম্পর্ক গড়ুন।

কুরআনের জ্যোতিতে শুধু চিন্তা ও মস্তিষ্ক নয়, কর্ম ও হৃদয়কেও উদ্ভাসিত করুন। আপনার সর্বসত্তা ঐ আদর্শ-মানবের অনুকরণে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন, যাঁর উপর কুরআন নাযিল হয়েছে এবং যাঁর চেয়ে অধিক অন্তরঙ্গ কুরআনের সাথে ও অধিক সমর্পিত কুরআনের প্রতি আর কেউ নেই।

৮. বিশ্বাস রাখুন যে, কুরআনের সাথে যুক্ত হতে পারা মানব-সন্তানের পরম সৌভাগ্য এবং কুরআনকে শিক্ষক ও রাহনুমা এবং বিচারক ও সিদ্ধান্তদাতা বলে গ্রহণ করতে পারা ব্যক্তি ও সমাজের চূড়ান্ত সফলতা। সুতরাং এই মহাসৌভাগ্য কিছুমাত্র অর্জিত হলেও আপনার হৃদয় যেন আনন্দে উদ্বেলিত হয় এবং যবান আল্লাহর শোকরে তরতাজা হয়।

৯. কুরআনের নূর ও হেদায়েত থেকে বঞ্চিতকারী সকল দোষ ও দুর্বলতা পরিহার করুন। বিশেষত অহঙ্কার, বিবাদ-বিসংবাদ, দুনিয়ার মোহ ও আখেরাত-বিস্মৃতির মতো ব্যধি থেকে দিল-দেমাগ ও আচরণ-উচ্চারণকে পবিত্র করুন।

১০. কুরআনের সঠিক মর্ম অনুধাবনে সহায়ক সকল গুণ ও বৈশিষ্ট্য অর্জনের চেষ্টা করুন। বিশেষত সত্যিকারের অন্বেষণ, শ্রবণ ও সমর্পণ, গাইবের প্রতি ঈমান, তিলাওয়াত ও তাদাববুর (চিন্তা-ভাবনা), আল্লাহর ভয়, তাকওয়া ও তহারাত দ্বারা কুরআনের জ্যোতি লাভের চেষ্টা করুন।

আল কাউসারের সৌজন্যে

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ