আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কয়েক সপ্তাহ ধরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে স্থগিত থাকার পর ইসরায়েলি পতাকা নিয়ে মিছিলের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের চরমপন্থী ইহুদিদের এ উস্কানিমূলক পতাকা মিছিলের আয়োজনে ছিলেন দেশটির মন্ত্রী ও নেসেট সদস্যরা। ইসরায়েলের পুলিশ তাদেরকে ইসরায়েলি পতাকা হাতে নিয়ে এ মিছিল করার অনুমতি দিয়েছে। এ ধরনের উস্কানিমূলক মিছিল আয়োজন করায় ইসরায়েলের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে হামাস। তারা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভাঙ্গারও হুমকি দিয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেটৎজ শুক্রবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
হারেটৎজের প্রতিবেদন মতে, ইসরাইলিদের এ পতাকা মিছিল মঙ্গলবার শুরু হবে। শুধু তাই নয়, এ পতাকা মিছিলের আয়োজকদের পরিকল্পনা অনুসারে, এ মিছিলটি পবিত্র জেরুসালেম শহরের মুসলিম বসতির মধ্য দিয়ে যাবে। তারপর এ মিছিলটি দামেস্ক গেটে পৌঁছাবে, মূলত এ এলাকাটি ছিল ফিলিস্তিনি ও ইসরাইলি পুলিশের মধ্যেকার সঙ্ঘাতে সবচেয়ে উত্তপ্ত স্থান।
এ উস্কানিমূলক মিছিলটি দামেস্ক গেট থেকে জাফ্ফা গেট পর্যন্ত যাবে। তারপর এ মিছিলটি মসজিদ আল-আকসার পশ্চিম দেয়ালের দিকে অগ্রসর হবে।
পতাকা মিছিলের আয়োজকরা বলেন, ‘এ মিছিলটি আয়োজনে সহযোগিতা করায় আমরা ইসরাইলি পুলিশ, পুলিশ কমিশনার আর জেরুসালেম জেলার প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা খুশি যে ইসরাইলের পতাকাগুলো জেরুসালেমের সব স্থানে গর্বের সাথে উড়বে।’
হারেটৎজ সংবাদপত্রের তথ্যানুসারে ওই মিছিলের আয়োজকরা আরো বলেছেন, ‘আমরা ইসরাইলের সকল নাগরিকদের আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা মঙ্গলবার আমাদের সাথে ইসরাইলি পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। এ মিছিলের মাধ্যমে তারা ইসরাইলের বীরত্বের প্রশংসা করবেন এবং পবিত্র জেরুসালেম শহরে আনন্দের সাথে নাচবেন।’
এর আগে ইসরাইলের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে তারা পতাকা মিছিল করবেন না। তারা ভয় পাচ্ছিলেন যে এ ধরনের মিছিল করলে গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো ক্ষিপ্ত হবে। তারা এ মিছিলের জবাবে ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে রকেট হামলা করতে পারে বলে তারা শঙ্কিত ছিলেন। পরে চরমপন্থী ইহুদিদের চাপের কাছে নত হয়ে ইসরাইলি প্রশাসন এ পতাকা মিছিলের অনুমতি দেয়।
এদিকে গাজায় হামাসের সহকারী প্রধান খলিল আল হায়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘যদি বসতি স্থাপনকারীদের চরমপন্থা আর পতাকা মিছিল বন্ধ করা না হয় তাহলে এ ঠুনকো যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙ্গে পড়বে।’
একই সময়ে হামাসের সামরিক শাখা বলেছে, আমরা আল আকসা মসজিদ ও জেরুসালেমে ইসরাইলি দখলদার শক্তি ও তাদের নেতাদের উস্কানিমূলক ও আগ্রাসী পদক্ষেপগুলোর ওপর নজর রাখছি। আমরা আল-আকসার ক্ষতি করার বিষয়ে তাদের সর্তক করছি। একই সাথে জেরুসালেমের (ফিলিস্তিনি) মুক্ত রক্ষকদের অভিবাদনও জানানো হয়।
ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি পুলিশের আগ্রাসী আচরণ ও আল-আকসা মসজিদের মুসল্লিদের ওপর ইসরাইলি পুলিশের বারবার হামলায় শত শত ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ইসরাইলের এ ধরনের আগ্রাসী আচরণের কারণেই গাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠনগুলো জেরুসালেমে রকেট হামলা করে। এ কারণে ইসরাইল ১১ দিন ধরে গাজায় নৃশংস হামলা করে। ইসরাইলের এ হামলায় গাজায় ২৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৬৩ শিশু ও ৪১ নারী আছেন।
সূত্র: মিডলইস্ট মনিটর
এনটি