আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ঝালকাঠিতে বিষখালী নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিকেলে জোয়ারের পানির চাপে জেলার কাঠালিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকার বিষখালী নদী তীরের বাঁধের একটা অংশ ভেঙে পানি ঢুকে গ্রামসহ তলিয়ে গেছে ফসলের মাঠ। এতে আতঙ্কে রয়েছেন ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দারা।
বিশেষ করে কাঠালিয়া সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বড় কাঠালিয়া, পূর্ব কচুয়া, লতাবুনিয়া, রঘুয়ার দড়ির চর, সোনার বাংলা, আওরাবুনিয়া, জাঙ্গালিয়া, ছিটকী ও আমুয়াসহ বিষখালী নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পনেরোটির অধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও রাজাপুর উপজেলার চর পালট এলাকার কয়েকটি গ্রাম, বাদুরতলা, বড়ইয়া ও মানকীরচর এলাকার গুচ্ছগ্রামসহ আরও দশটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বিষখালী নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, ঝড়-বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে আমরা খুবই আতঙ্কে থাকি। বিশেষ করে রাতে ছেলেমেয়ে নিয়ে বসে থাকি। কখন বাড়ি-ঘর ভেঙে নদীতে চলে যায়। গতকাল বিকেলে হঠাৎ করে জোয়ারের তোড়ে নদীর বাঁধ ভেঙে যেভাবে পানি উঠছে বাতাসের গতি বাড়লে উপজেলার দক্ষিণাংশ পুরোটাই ডুবে যাবে।
কাঠালিয়া লঞ্চঘাট এলাকার জহিরুল ইসলাম লিমন জানান, লঞ্চঘাট এলাকার বাঁধ ভেঙে নদীতে বিলীন হয়েছে অনেক আগেই। গত বছর লঞ্চঘাটে ৩শ মিটার এলাকায় বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা হয়েছিল। কিন্তু লঞ্চঘাটের উত্তর দিকে কিছুই ফেলা হয়নি। পানি স্রোতের চাপে প্রতিদিন নদী ভাঙছে। গতকাল বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে আমাদের এলাকা তলিয়ে গেছে। ফলে আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। তাই দ্রুত এ বাঁধটি মেরামত করা জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানাই।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ঝালকাঠিতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার চার উপজেলায় চারটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৫৯টি সাইক্লোন সেল্টারসহ ৪৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া ৩৭টি মেডিকেল টিম গঠন, নগদ এক কোটি তেরো লাখ টাকা, দুইশত বান্ডিল টিন ও দুইশত টন চাল মজুত রাখা হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, সকাল থেকে আমি রজাপুর ও কাঠালিয়ার প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ঝড়ের ফলে মৃদু বাতাস থাকলেও বৃষ্টি না থাকার কারণে নতুন করে কোন এলাকা প্লাবিত হয়নি। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতসহ সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসন।
এনটি