আওয়ার ইসলাম: ব্রহ্মপুত্র নদে চীন ও ভারতের বাঁধ নির্মাণে পানির প্রবাহে বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ভূমিকম্পের আশঙ্কা বাড়বে। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে এ খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের।
জলবিদ্যুতের উৎপাদন ৩ গুণ বাড়াতে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি প্রবাহে তিব্বতে দানবাকৃতি বাঁধ বানাতে চলেছে চীন। পাল্টা চাল হিসেবে দিল্লিও এ নদের নিচের দিকে আরেকটি বাঁধ বানানোর কথা ভাবছে।
দুটি বাঁধই ভূকম্পপ্রবণ ব্রহ্মপুত্র নদের লাগোয়া এলাকায় তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাঁধ দুটির জন্য অনেক মানুষকে আশ্রয়হীন হতে হবে।
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি রয়েছে মধ্য চীনে, ইয়াংজে নদীর ওপর। তার নাম ‘থ্রি গর্জেস’। চীন চাইছে দেশের জলবিদ্যুতের উৎপাদন কম করে ৩ গুণ বাড়াতে। জলবিদ্যুতের উৎপাদন খরচ সবচেয়ে কম বলে। তাতে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো বায়ুদূষণ হয় না বলেও। ৬০ গিগাওয়াটের বাঁধের জন্য বেইজিং বেছে নিয়েছে তিব্বতের মেডগ কাউন্টির একটি সুবিশাল এলাকা।
নিজেদের দেশ পাল্টা বাঁধের পরিকল্পনা নিলেও ভারতের বিশেষজ্ঞরা বলছে, তিব্বতে চীনের বাঁধটি যে এলাকায় গড়া হবে তা হিমালয় পর্বতমালার অন্তর্ভুক্ত। সেখান থেকেই ব্রহ্মপুত্র নদের উৎপত্তি। নদের প্রবাহ যদি তিব্বতে চীনের প্রস্তাবিত বাঁধের এলাকা শেষ হয়ে যাওয়ার পর হিমালয় ছেড়ে বেরিয়ে আসত তা হলেও ততটা চিন্তার কারণ ছিল না ভারতের।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ব্রহ্ম চেলানি একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘‘এই বাঁধ ব্রহ্মপুত্র নদের জলপ্রবাহ নিচের দিকে (ভারতের দিকে) নামার প্রতিবন্ধক হয়ে উঠবে। লাগোয়া ভূকম্পপ্রবণ এলাকায় ভূমিকম্পের আশঙ্কা তীব্রতর করে তুলবে। সুবিশাল ওই বাঁধ বানানো হলে বহু স্থানীয় বাসিন্দা আশ্রয়হীন হবেন।’’
ব্রহ্মপুত্রের নিম্ন অববাহিকায় ভারতের পাল্টা বাঁধ বানানোর পরিকল্পনারও সমালোচনা করে তিনি জানান, তাতে সমস্যা আরও বাড়বে বই কমবে না।
হিমালয়ের পাদদেশে যেখানে প্রাচীন ইয়ারলং সভ্যতায় প্রথম তিব্বতি সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সেখানেই বসছে চীনের বাঁধ। এর প্রতিক্রিয়ায় অরুণাচল প্রদেশে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ১০ গিগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা করে ভারত।।
স্বশাসিত তিব্বত অঞ্চলের উৎসস্থল থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে ইয়ারলাং জ্যাংবো নদী, অরুণাচলে পৌঁছে যার নাম হয়েছে সিয়াং। আসামে প্রবেশ করার পর এই সিয়াংই পরিচিত হয় ব্রহ্মপুত্র নামে এবং যা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এনটি