আবদুল্লাহ তামিম।। বাংলাদেশের চলমান সংকটময় পরিস্থিতি নিরসন ও কওমি মাদ্রাসা খোলা রাখার বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় উলামায়ে কেরাম৷
আজ সোমবার সন্ধ্যায় তেজগাঁও রেলওয়ে জামিয়া ইসলামিয়ায় এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশের চলমান করোনাকালীন সংকটময় পরিস্থিতি নিরসন ও কওমি মাদরাসা খোলা রাখার বিষয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে কিভাবে মাদরাসা খোলা রাখা যায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের বিষয়ে আল্লামা ড. মুশতাক আহমাদ আওয়ার ইসলামকে বলেন, চলমান এ সর্বাত্মক লকডাউনে মাদরাসাগুলো কিভাবে খোলা রাখা যায় আমরা সরকারের কাছে আবেদন করবো। আমাদের মাদরাসাগুলো খোলা রাখার অনুমতি সাথে সাথে দেশের অন্যান্য মাদরাসাগুলো মাহে রমজানে কিভাবে খোলা রাখা যায় সে আবেদন করবো। আমরা আশাবাদি আগেরবারের মত সরকার আমাদের আবেদনটির গুরুত্ব বুঝে মাদরাসাগুলো খোলা রাখার অনুমতি দিবেন।
এ বৈঠকটির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ইদারাতুল উলূম ঢাকার মুহতামিম ও জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের মহাসচিব মুফতি মুহাম্মদ আলী, জামিয়া শায়েখ জাকারিয়া কাঁচকুড়ার মুহতামিম, তেজগাঁও রেলওয়ে জামিয়া ইসলামিয়ার শাইখুল হাদিস, পীরে কামেল আল্লামা ড. মুশতাক আহমাদ, দারুল উলুম বনশ্রী মাদরাসার মুহতামিম মুফতি ইয়াহিয়া মাহমুদ, আল্লামা মুজিবুর রহমান ফয়জী। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ বিভিন্ন মাদরাসার মুহতামিম ও পরিচালকগণ।
এদিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির অবনতির কারণে আগামী ১৪ এপ্রিল সকাল ৬টা থেকে ২১ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আজ সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
বিধিনিষেধগুলো হলো-
ক. সব সরকারি, আধাসরকারি, সায়ত্ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিস, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল বন্দর এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিসগুলো এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।
খ. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
গ. সব ধরনের পরিবহন (সড়ক, নৌ, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা ও জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
ঘ. শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে। তবে, শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া নিশ্চিত করতে হবে।
ঙ. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-কৃষি উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমুহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
চ. অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ঔষধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। তবে টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।
ছ. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁ দুপুর ১২:০০টা থেকে সন্ধ্যা ৭:০০টা এবং রাত ১২:০০টা থেকে ভোর ০৬:০০টা পর্যন্ত কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরররাহ (Takeaway/Online) করা যাবে। শপিংমলসহ অন্যান্য দোকানসমূহ বন্ধ থাকবে।
জ. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯:০০টা থেকে বিকাল ৩:০০টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
ঝ. বোরো ধান কাটার জরুরি প্রয়োজনে কৃষি শ্রমিক পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন সমন্বয় করবে।
ঞ. সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে;
ট. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।
ঠ. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জুম্মা ও তারাবি নামাজের জমায়েত বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করবে; এবং
ড. উপযুক্ত নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রয়োজনে সম্পূরক নির্দেশনা জারি করতে পারবে।
-এটি