আওয়ার ইসলাম: মিয়ানমারের জনগণের ওপর একের পর এক খড়গ নামছে। এবার টুইটার ও ইনস্টাগ্রাম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে জান্তা সরকার। সামরিক সরকারের শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ঘোষণা মোতাবেক পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত মোবাইল অপারেট এবং ইন্টারন্টে পরিষেবা সরবরাহকারীদের টুইটার-ইনস্টাগ্রাম বন্ধ রাখতে বলেছে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে নরওয়েভিত্তিক টেলিকম প্রতিষ্ঠান টেলিনর। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ফেসবুক বন্ধ করে দেয় সামরিক সরকার।
মিয়ানমারের ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কঠোরতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি দেশটির যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়ে মিয়ানমারর সরকারের কঠোর অবস্থানে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টেলিনর।
একে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলছে নরওয়েভিত্তিক কোম্পানিটি। ক্ষোভ প্রকাশ করে টুইটারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিধিনিষেধ দিয়ে মানুষের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। ইন্টারনেট সেনা পুনরায় চালু করতে দেশটির শাসকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গত সোমবার ভোরে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি, আইনপ্রণেতা ও রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে নতুন নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করে আসছে সামরিক সরকার।
সু চিকে গ্রেফতার করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা নেওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে জনতা। রাজধানী নাইপিদো, ইয়াঙ্গুনসহ ছোট বড় অনেক শহরে নানাভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে সাধারণ মানুষ। চিকিৎসকদের পাশাপাশি জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ইয়াঙ্গুনের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে আন্দোলনে নতুন করে যোগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এক শিক্ষার্থী বলেন, কোন স্বৈরাশাসকের অধীনে আমরা থাকব না। আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকিতে ফেলে দিতে পারি না।'
যে কোনো সহিংসতা মোকাবিলায় রাস্তায় কঠোর অবস্থানে সেনা সদস্যরা। ভারী অস্ত্র নিয়ে পথে পথে টহল দিতে দেখা গেছে তাদের। কাউকে সন্দেহ হলে তল্লাশি করছে সেনারা। সামরিক শাসনের মেয়াদ এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর অতিরিক্ত ৬ মাস থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে জান্তা সরকার। এমন অবস্থায় মিয়ানমার সংকট জটিলের দিকেই যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
এমডব্লিউ/