মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


তাহাজ্জুদের সালাতে যে দশটি আয়াত তেলাওয়াত করা উত্তম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: তাহাজ্জুদের সালাতে কোরআনের দশটি আয়াত তেলাওয়াত করার সওয়াব পৃথিবী এবং পৃতিবীতে যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম:‘ফুযালা ইবনু ‘উবাইদ এবং তামিমুদ্দারী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদের নামাজে দশটি আয়াত তেলাওয়াত করে তার জন্য এক কিন্তার সওয়াব, আর এক কিন্তার সওয়াব হলো পৃথিবী এবং পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম, কিয়ামতের দিন তোমর রব বলবে, কোরআনের প্রতিটি আয়াতের বদলে এক স্তর উপরে উঠো, এভাবে সর্বশেষ আয়াত তেলাওয়াত করা পর্যন্ত উপরে উঠতে থাকবে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাকে বলবেন, আমার নিয়ামত গ্রহন করার জন্য তোমার হাত উন্মোক্ত করো, বান্দা হাত উন্মোক্ত করে বলবে, হে আমার রব! তুমি তোমার দান সম্পর্কে ভালভাবে জানো, আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘এক হাতে স্থায়ী নিয়ামতসমূহ গ্রহণ করো আর অপর হাতে অন্যান্য নিয়ামতসমূহ গ্রহণ করো।’ (মু’জামুল কাবীর, হাদিস: ১২৫৩)

আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রিয় হাবিব সা.কে ইসলামের প্রথম যুগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেন দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার পূর্বে।

কুরআনের বিভিন্ন সুরায় এ নামাজের প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে। যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যেতে পারবেন, তাদের মধ্যে একশ্রেণি তাহাজ্জুদ গুজারি।

তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নাতে মুআক্কাদাহ। ইসলামের সূচনার যুগে এটি মহানবী সা. ও উম্মত সবার জন্য ফরজ ছিল। রাসূল সা.-এর মে’রাজের পর তা নফল হয়ে যায়। যেমন সূরা মুজ্জাম্মিলের শুরুতে আল্লাহ তা’আলা প্রিয় নবি সা.কে বিশেষভাবে রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘হে চাদর আবৃত, রাতের নামাজে দাঁড়াও কিছু অংশ ছাড়া। (সুরা মুজাম্মিল : ১-২)

আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি। আফজালুস সালাতি বা’দাল মাফরুদাতি সালাতুল লাইলি অর্থাৎ ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ।  (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ-হাদিস নং ১১৬৭/২)

রাসুল সা. বলেন,আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক রাত্রে দুনিয়ার আসমানে (যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়) নেমে আসেন যখন রাত্রের এক তৃতীয়াংশ বাকী থাকে । অতঃপর তিনি বলেন, তোমাদের কে আমাকে ডাকবে! আমি তার ডাকে সাড়া দিব । কে আমার কাছে কিছু চাইবে আমি তাকে তা দিব, কে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিব। (মুসলিম, মেশকাত ১০৯ পৃঃ)

রাসুলুল্লাহ সা্ল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন এবং সাহাবায়ে কেরাম (রা.) কে তা নিয়মিত আদায় করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন। পবিত্র কুরআনে তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য বিশেষভাবে তাকিদ করা হয়েছে।

যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যেতে পারবেন, তাদের মধ্যে একশ্রেণির লোক তারা, যারা যত্নের সঙ্গে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। কুরআনের বিভিন্ন সুরায় এ নামাজের প্রতি তাগিদ দেয়া হয়েছে। তাই প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পর সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ি, তাবে-তাবেয়িসহ সব যুগের ওলি ও দ্বীনদার তাহাজ্জুদ নামাজে রাত কাটিয়ে দিয়েছেন।

উপরুক্ত কুরআন ও হাদিসের বিশ্লেষণ করলে বুঝা যায় যে, নামাজগুলোর মধ্যে তাহাজ্জুদ অতি মর্যাদাপূর্ণ নামাজ।এই নামাজে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীরই পালন করা উচিত। এর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ সহজ হবে। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত তাহাজ্জুদ আদায় করার তাউফিক দিক। আমিন।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ