কাউসার লাবীব।।
সাব-এডিটর
ফেস দ্যা পিপল নামের একটি ফেসবুক পেজে গত রোববার (২০ ডিসেম্বর) রাত ৯ টায় এক টকশো হয়। সাইফুর সাগরের সঞ্চালনায় টকশোতে অংশ নেন জৈনপুরের পীর মাওলানা ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ও ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। তাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে চলে ডিভাইড। এ ডিভাইডে ড. মাওলানা এনায়েতুল্লাহ আব্বাসীর প্রজ্ঞাপূর্ন জবাব সর্ব মহলে প্রশংসিত হচ্ছে। আলোচিত হচ্ছে শাহরিয়ার কবিরের লা-জাওয়াব মলিন চেহারা।
গত দুদিন ধরে ফেসবুক দুনিয়ার অন্যতম ইস্যু এ টকশো। এবার আলোচিত এ টকশো নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করলেন টকশোটির সঞ্চালক সাইফুর সাগর। তিনি ফেস দ্য পিপল-এর ফেসবুক পেইজে বলেন, আমি নাস্তিক নাকি আস্তিক সেটা বড়ো কথা নয়। আমি কোন আক্বিদার ফলোয়ার সেটাও বড়ো কথা নয়। এই লেখাটির অনুভব অন্য জায়গায়। আমার নিয়মিত টকশো ফেস দ্যা পিপল-এর গতকালকের এপিসোডটির আগের রাত এবং পরের রাত আমি ভালো ভাবে ঘুমোতে পারিনি। কারণ, বাংলার মানুষ বিশেষ করে মুসলিম ধর্মালম্বী সাধারণ মানুষের দ্বীনি কথা শুনবার তৃষ্ণার্ত হাহাকার দেখে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিলো আমার মনে।
তিনি বলেন, ধর্মের প্রতি মানুষের অকুন্ঠ ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ এতটাই অমূল্য ও অবর্ণিও যে আমাকে উত্তেজনা ঘুমোতে দেয়নি। আমি কয়েকশো টকশো আয়োজন করেছি আজ অবধি। অনলাইন বেজড টকশো আমার হাতেই শুরু বাংলাদেশে। প্রায় সকল রাজনৈতিক দলের সর্বোচ্চ নেতৃবৃন্দ আমার অতিথি হয়ে এসেছেন। কিন্তু কোনো অতিথির অনুষ্ঠান আমাকে এতোটা উত্তেজিত করেনি; যতোটা জনাব এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী ও জনাব শাহরিয়ার কবিরের অনুষ্ঠানে অনুভূত হয়েছে।
আরো বলেন, কদিন আগে প্রিয় সিনিয়র সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খাঁন সাহেবের সাথেও ড.এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীর ডিবেট করেছিলাম। সেই শোটি প্রায় ৮০লক্ষ মানুষ দেখেছে আমার নিজস্ব পরিসংখ্যানে। আব্বাসী হুজুর আর শাহরিয়ার কবিরের গতকালকের অনুষ্ঠানটির রিয়াল টাইম ভিউয়ার্স ছিলো প্রায় ২৩ হাজারের মতো যা দেশের ইতিহাসে এ যাবৎ কালের সর্বোচ্চ সংখ্যা। কোনো টকশো এতো মানুষ একসাথে দেখেনি।
আমাদের টকশো ফেসবুক পেজে অনুষ্ঠানটির ঘোষণাপত্র যখন প্রকাশ করি; তখন থেকেই হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসুল্লি আমার সাথে যোগাযোগ করা শুরু করেছিল। সবার একটাই অনুরোধ ছিলো যেনো নিরোপেক্ষতা বজায় রাখি। এমন শঙ্কা হতোনা যদি আমাদের দেশের গণমাধ্যম নিজেদের জায়গায় সঠিক এবং অবিচল থাকতো। আমি কোনো কুলেই এক্সট্রিমিজমে পছন্দ করিনা। আমার সাথে অন্যদের বিশাল ফারাক। কারণ, আমি সাদাকে সাদা বলি আর কালোকে কালো বলি। মাঝখানে কোনো কালারকে আমি বিলং করি না।
ঘৃণা ভরা নষ্ট এই সমাজে যেখানে কেউ কারো নাম নিতেও কৃপণতা বোধ করে; সেখানে কোনো বিনিময় আর কোনো লোভ ছাড়া একজন আলেমের প্রতি লক্ষ মানুষের আনকন্ডিশনাল যে ভালোবাসা দেখলাম তা আমাকে যারপরনাই অভিভূত করেছে।
নিজেদের মধ্যে প্রতিহিংসা ভুলে প্রায় সকল আলেমরাই অনুষ্ঠানটিকে নিজেরা অবলোকন করেছে এবং নিজেদের সামাজিক মাধ্যমে মাওলানা আব্বাসী হুজুরকে প্রজ্ঞাবান বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আমাকেও শত শত মানুষ ধন্যবাদ জানিয়েছে নিরপেক্ষ উপস্থাপনার জন্য। আমিও সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই ধরণের অনুষ্ঠান চলতে থাকবে যতদিন অবধি সত্য প্রতিষ্ঠিত না হবে। হোক সেটা কালো নয় সাদা।
-এএ/আব্দুল্লাহ আফফান