আওয়ার ইসলাম: করোনা মহামারীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনটা ছিল বিভিন্ন কারণে গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনকে ঘিরে চ্যালেঞ্জও ছিল বহুমুখী। বৈরি পরিস্থিতিতে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচারের ক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্ব দেখানোর জন্যে প্রবাসের খ্যাতিমান পাঁচ সাংবাদিককে ‘ইউএস প্রেসিডেন্সিয়াল ইলেকশন অ্যাওয়ার্ড’ দিয়েছে নিউইয়র্কের জনপ্রিয় রেডিও চ্যানেল এফএম-৭৮৬।
পুরস্কার প্রাপ্ত সাংবাদিকরা হলেন- সাপ্তাহিক পরিচয়ের সম্পাদক নাজমুল আহসান, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার আবাসিক সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী, সময় টিভি ও যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি এবং এনআরবি কানেক্টের এক্সিকিউটিভ এডিটর হাসানুজ্জামান সাকী, একাত্তর টিভি ও কালের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি শামীম আল আমিন এবং আওয়াজ বিডির সম্পাদক শাহ জে আহমেদ।
করোনা মহামারীর কারণে অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি অনলাইনে করা হয়। সরাসরি সম্প্রচারিত এ অনুষ্ঠানে অনার গেস্ট হিসেবে ছিলেন ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রধান রোকেয়া হায়দার এবং ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার ফরিদ হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফএম-৭৮৬’র সম্পাদক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
জাহান অরণ্যের সঞ্চালনায় একঘণ্টার আয়োজনটি শুরু হয় বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে। বর্তমান পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বে করোনা মহামারিতে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে, অনেকে সংক্রমিত হয়ে লড়ছেন। অনুষ্ঠানে সহমর্মিতা জানানো হয় তাদের প্রতিও।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক রোকেয়া হায়দার পুরস্কার পাওয়া পাঁচ সাংবাদিককে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এটি অসাধারণ একটি উদ্যোগ। এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকদেরকে তাদের কাজের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের প্রতি সবার দৃষ্টি থাকে। তারওপর এবারের নির্বাচনটি ছিল ঘটনাবহুল। তিনি আরও বলেন, এই নির্বাচনের প্রক্রিয়া বুঝে, সেটা সবার জন্যে পরিবেশন সহজ কাজ নয়। এই কাজটি কৃতিত্বের সাথে করার জন্যে তিনি পাঁচ সাংবাদিককে ধন্যবাদ জানান। সেই সাথে ভবিষ্যতে পুরস্কারপ্রাপ্ত তালিকায় নারী সাংবাদিকদেরও দেখা যাবে, এমন প্রত্যাশার কথাও তুলে ধরেন রোকেয়া হায়দার।
সাংবাদিক ফরিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মহান বিজয়ের দিনে প্রবাসে সাংবাদিকদের কৃতিত্বের জন্যে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ ভিন্নমাত্রা যুক্ত করেছে। তিনি বলেন, বাংলা ভাষায় বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকতা করছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। এতে করে পেশার মান ও উৎকর্ষ বাড়ছে। ভবিষ্যতেও এমন উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়ার আহবান তিনি।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান রেডিও চ্যানেল এফএম-৭৮৬’র সম্পাদক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, খুব ইচ্ছা ছিল অসংখ্য মানুষের উপস্থিতিতে কৃতি সাংবাদিকদেরকে সম্মানিত করার। কিন্তু করোনার কারণে সেটা সম্ভব হলো না। তবে পরিস্থিতি ভালো হলে নিউইয়র্কে একটি বড় অনুষ্ঠান করে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
ভিডিও প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে বিজয়ী পাঁচ সাংবাদিকদের জীবনকর্ম তুলে ধরা হয়। এছাড়া নিজেদের অনুভূতিও প্রকাশ করেন বিজয়ীরা।
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে নাজমুল আহসান বলেন, একজন গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আমার কাজ হলো কমিউনিটিকে সচেতন করা। গত ৩০ বছর ধরে আমি সেটাই করে যাওয়ার চেষ্টা করছি। কতটুকু করতে পেরেছি সেই মূল্যায়নের ভার পাঠকদের হাতে। তবে আজকের এই স্বীকৃতির জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
ইব্রাহীম চৌধুরী বলেন, আমি হয়তো এই প্রশংসার যোগ্য নই। কথাটা এই কারণে বললাম যে, আমার সঙ্গে অন্যান্য যারা কাজ করেন, তারা অনেক পরিশ্রম করেন। তাদের হয়ে শুধু সম্মানটা গ্রহণ করছি আমি। মূলত এটা তাদেরই প্রাপ্য। তাদের সবার পক্ষ থেকে এফএম-৭৮৬’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
হাসানুজ্জামান সাকী বলেন, ধন্যবাদ জানাই এফএম ৭৮৬-কে, এর পরিচারক ও সকল কলকুশলীকে। আমার জন্য এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাভার করাটা ছিল অনেক বেশি ঘটনাবহুল। এমনকি এটা করতে গিয়ে আমি হামলারও শিকার হয়েছি। তারপরও চেষ্টা করেছি বস্তুনিষ্ঠ তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার।
শামীম আল আমিন বলেন, যখন আমরা কথা বলছি, তখন বাংলাদেশে শুরু হয়ে গেছে মহান বিজয় দিবসের উদযাপন। এমন একটি দিনে এফএম-৭৮৬ যে সম্মান আজ আমাকে দিয়েছে, সেটা কৃতজ্ঞচিত্তে গ্রহণ করলাম। এই স্বীকৃতি আমাকে ভবিষ্যতের পথ চলার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা জোগাবে।
শাহ জে আহমেদ বলেন, যারা অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন, আমি তাদের মধ্যে কনিষ্টতম। এখনো শিখছি। সত্যি কথা বলতে কি, আমি এই অ্যাওয়ার্ডের যোগ্য নই। আয়োজকদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।
-কেএল