খালিদ হাসান
ঝিনাইদহ থেকে>
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমা লের সীমান্তবর্তী জেলা ঝিনাইদহের শষ্যভারে ভরপুর কালীগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলার গ্রামীণ মেঠো পথের দু’ধারে এখন সারি সারি সরিষা খেত। মাঠের পর মাঠ দিগন্ত জুড়ে ছড়িয়ে আছে সরিষা ফুলের হলুদ আভা। এ দৃশ্য দেখে যেমন দু-চোখ জুড়িয়ে যায়, তেমনি এটা কৃষকের সারা বছরের পরিশ্রমের প্রমাণ দেয়। সরিষার এমন ফলন হাসি ফুটিয়েছে কৃষকের মুখেও।
অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বাড়তি ফসল হিসেব সরিষা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ অ লে। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও এ অ লে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সরিষা খেত থেকে মৌ চাষ করে মধু আহরণের মাধ্যমে বাড়তি আয়ের পাশাপাশি ফসল ফলাতে সহায়তা পাচ্ছে কৃষক।
আমন ঘরে তোলার পর বেশ কিছু সময় ফাঁকা পড়ে থাকে জমি। কৃষক তো আর বসে থাকতে পারে না। কারণ ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাদের। তাই আমন ঘরে তোলার পরপরই তারা নেমে পড়েন সেই ফাঁকা জমিতে। রবি মৌসুমে বিভিন্ন জাতের ফসল লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
এরমধ্যে অন্যতম একটি ফসল হলো সরিষা। অমন ধান ঘরে তোলারপর জমিতে বারি-১৪ সরিষা ছিটায়ে দিতে হয়। কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া, সুন্দরপুর, আলাইপুর, রঘুনাথপুর, বারবাজার ষাটবাড়িয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামের কৃষকরা এই সরিষা চাষ করে থাকেন। এসব এলাকার বেশির ভাগ কৃষকই এবার তাদের জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা লাগিয়েছেন।
ষাটবাড়িয়া গ্রামের কৃষক কবিরুল ইসলাম নান্নু জানান, বর্তমান সময়ে তাদের মতো কৃষকদের অনেক ফসল চাষ করে লোকসান গুণতে হচ্ছে। সেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে তাদের সব সময় বাড়তি আয়ের চিন্তা করতে হয়। সেই ভাবনা থেকে এবার তিনি প্রায় ২ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা লাগিয়েছেন আসা করছেন ফলন ও ভালো পাবেন। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৭ মন সরিষা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।
আলাইপুর গ্রামের কৃষক আলিমুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। গড়ে বিঘাপ্রতি ফলন হবে প্রায় ৬ থেকে মণ হারে। এছাড়া বর্তমানে অন্য ফসলের চেয়ে সরিষার বাজারদর ভাল। জানা গেছে, এবার শীতের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এছাড়া সরিষা চাষে খুব একটা ব্যয়ও করতে হয় না। সরিষার জমিতে খুব বেশি চাষ দিতে হয় না।
সার, বীজ, চাষ, সেচ, কীটনাশক, শ্রমিকসহ প্রতিবিঘা জমির বিপরীতে বড়জোড় ৬ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ সরিষা রকমভেদে ২৩শ থেকে ২৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে গড়ে ৭ মণ হারে সরিষা পেলেও বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী সব খরচ বাদে তাদের ভালই লাভ হবে। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিকদার মোহায়মেন আক্তার জানান, প্রতিবছর এই সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বারি-১৪ জাতের সরিষাতে লাভ বেশি। এবছর কালীগঞ্জ উপজেলাতে ৭শ ৫০ হেক্টর জমিতে বারি -১৪ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। কৃষি অফিস কতৃক ৬শ জন কৃষককে বীজ ও সার প্রদান করা হয় তত্বমধ্যে ৩৫টি প্রদর্শনী প্লট আছে ৩৫জন কৃষকের ৩৫ বিঘা জমিতে।
-এটি