শাহীন রহমান।।
শূণ্যে উড়ার শখ মানুষের বহু আগে থেকেই। চেষ্টাও করছে বহুবার। কিন্তু সফলতার মুখ দেখতে পায় নি। মানুষ থেমে থাকে না। প্রচেষ্টা চালিয়ে যায় নিরন্তর। তাই শূণ্যে উড়ার প্রচেষ্টাও থেমে থাকে নি। সময়ের পরিবর্তনে এ অধ্যায়ে সফলতার নাগাল পায় তুর্কি মুসলিম বিজ্ঞানী হেজার আহমেত সেলেবি। ১৭ শতকের অভিযাত্রী এভলিয়া সেলেবির দীর্ঘ গবেষণা এ দাবি নিশ্চিত করে বলে জানিয়েছে তুর্কি দৈনিক ‘সাবা’।
এভলিয়া সেলেবির মতে হেজারফেন আহমত সেলেবি বিশ্বে সর্বপ্রথম ব্যক্তি যিনি কোন উড়োজাহাজ বা যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই শূন্যে উড্ডয়ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ঐতিহাসিক এ উড্ডয়ন কার্যক্রম। উড্ডয়নের জন্য আহমত সেলবি প্রথমে গালাতা টাওয়ারের শীর্ষে আহরোণ করেন এবং সেখান থেকে বাতাসের গতিবেগ ব্যবহার করে এক বিশেষ পদ্ধতিতে বসফরাসের ওপর দিয়ে উড়ে যান। উড্ডয়ন শেষে তিনি উসকুদায়ে অবতারণ করেন। এজন্য ইতিহাসে তাকে উড়ন্ত মানুষের অগ্রদুত হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
তৎকালীন সুলতান চতুর্থ মুরাদ পাশা নিজ ভবন থেকে এই দৃশ্য উপভোগ করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোনোএক বিষয়ে অসন্তোষ হয়ে সুলতান ইতিহাসের অনন্য এ সম্পদকে একবস্তা স্বর্নমুদ্রা দিয়ে আলজেরিয়ায় নির্বাসনে পাঠিয়ে দেন৷ সুলতানের এ কাজে নিহিত কী উদ্দেশ্য ছিল তা বুঝতে সক্ষম হয় নি তৎকালীন কেউ।
এভালিয়া সেলেবির গবেষণায় জানা যায়, এর ঠিক এক বছর পর হেজারফেন আহমদ সেলেবির ভাই লাগারি হাসান সেলেবি বিশ্বে সর্বপ্রথম সফল রকেট ফ্লাইটে আরোহণ করেছিলেন। তিনি সারাইবার্নু থেকে গানপাউডার ব্যবহার করে বিশেষ পদ্ধতিতে সাত ডানা বিশিষ্ট রকেটটি উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন । তবে আহমেত সেলেবির মতো লাগারি সেলেবির ভাগ্য এত খারাপ ছিলো না। তার এই সফলতার জন্য সুলতান তাকে অনেক সোনারুপা উপহার দিয়েছিলেন এবং অটোমান সেনাবাহিনীতে উচ্চ পদমর্যাদার চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন।
তুরস্কের উড্ডয়ন ইতিহাসে আরেকটি নতুন মাত্রা যোগ হয় ১৯৩৭ সালে। মোস্তফা কামাল আতার্তুক দত্তক নিয়েছিলেন এক এতিম শিশুকে। নাম তার সাবিহা গোকসেন। তিনি ১৯৩৭ সালে মাত্র ২৩ বছর বয়সে বিশ্বের প্রথম মহিলা ফাইটার পাইলট হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
-কেএল