আসজাদ মাহবুব।।
পৃথিবীতে প্রথাটি সূচিত হয় হযরত নূহ আ. এর আবির্ভাবের পূর্বে। যারা সূচনা করে তাদেরকে ‘কওমে নূহ’ বলা হয়। ইমাম বগভী রাহ. বর্ণনা করেন, ওয়াদ, সূয়া, ইয়াগুস, ইয়াউক ও নাসর এই পাঁচজন প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর নেক ও সৎকর্মপরায়ণ বান্দা ছিলেন। তাদের সময়কাল ছিল হযরত আদম আ. ও হযরত নূহ আ. এর আমলের মাঝামাঝি। ওই পাঁচ ব্যক্তির অনেক ভক্ত ও অনুসারী ছিল।
তাদের মৃত্যুর পর ভক্তরা সুদীর্ঘকাল পর্যন্ত তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আল্লাহর ইবাদত ও বিধি-বিধান পালনের প্রতি আনুগত্য অব্যাহত রাখে। কিছুদিন পর শয়তান তাদেরকে এই বলে প্ররোচিত করল, তোমরা যেসব মহাপুরুষদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে উপাসনা করো; যদি তাদের ভাষ্কর্য তৈরি করে সামনে রেখে নাও, তাহলে তোমাদের উপাসনা পূর্ণতা লাভ করবে এবং বিনয় ও একাগ্রতা অর্জিত হবে।
তারা শয়তানের ধোঁকা বুঝতে না পেরে মহাপুরুষদের প্রতিকৃতি তৈরি করে উপাসনালয়ে স্থাপন করল এবং তাদের স্মৃতি জাগরিত করে ইবাদতে বিশেষ পুলক অনুভব করতে লাগলো।
এমতাবস্থায় তাদের সবাই একে একে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে গেল এবং সম্পূর্ণ নতুন প্রজন্ম তাদের স্থলাভিষিক্ত হল। এবার শয়তান এসে তাদের কুমন্ত্রণা দিল, তোমাদের পূর্বপুরুষদের খোদা ও উপাস্য ভাষ্কর্যই ছিল। তাই তারা ওই পাঁচজনের ভাষ্কর্যকেই উপাসনা করতে লাগলো। এখান থেকেই মূর্তিপূজার সূচনা হয়। আল্লাহ এই মুশরিকদের পরবর্তীতে মহাপ্লাবনে ডুবিয়ে ধ্বংস করে দেন।
তাই বুঝে রাখুন, আজ যদি আপনি কারোও প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে তার ছবি ঘরে রাখেন, তাহলে পরবর্তী প্রজন্ম রাখবে তার ভাষ্কর্য। এরপর পরবর্তী প্রজন্ম তাকে মূর্তি নাম দিয়ে পূজা করতে শুরু করবে। আল্লাহ হেফাজতকারী।
তথ্যসূত্র-১.সুরা নুহ, আয়াত-২৩, ২.মাআরিফুল কুরআন বাংলা পৃ. ১৪০৮, ৩.তাফীরে কুরতুবী, খ.৯ পৃ.১৯৯, ৪.তাফসীর ফাতহুল কাদির খ.৫ পৃ.৩৭৩।
-এটি