সাজ্জাদ হুসাইন: এবার ফ্রান্স বিরোধী ক্যাম্পেইনে অংশ নিয়েছে দেওবন্দের মহিলা মাদরাসা ছাত্রীরা। ফ্রান্স বিরোধী ক্যাম্পেইনের শিরোনাম ছিলো ‘রহমতের নবী’।
গত শুক্রবার (৬নভম্বের) দেওবন্দের মাদরাসায়ে আয়েশা সিদ্দিকা রা. এর ছাত্রী, স্নাতক শিক্ষার্থীবৃন্দরা এ ক্যাম্পেইন ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় মাদরাসার শিক্ষাসচিব মাওলানা নাজিম আল ওয়াজদি উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, ‘রাসূল সা. এর সুউচ্চ ব্যক্তিত্ব সকল মুসলমানের কাছে সর্বাধিক শ্রদ্ধেয়, সবচাইতে পবিত্র। তাঁর পবিত্র জীবনাদর্শ মানব সভ্যতার মুক্তির সোপান। তাঁর উন্নত চরিত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমেই পৃথিবীতে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও সভ্য সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণাঢ্য জীবনচরিত সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া, মুসলমানদের ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব। যখনই কোনো মহলের পক্ষ থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সার্বজনীন জীবনাচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালানো হয় তখন এই দায়িত্বের মাত্রাটা আরো বেড়ে যায়।’
নবী অবমাননার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মাওলানা নাদিম বলেন, ‘মিথ্যুক মুসাইলামা থেকে শুরু করে ফ্রান্সের শিক্ষক হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত, যুগে যুগে যারাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সত্তার প্রতি কলঙ্ক লেপনের দুঃসাহস দেখিয়েছে, তাদের প্রত্যেকেই আপন আপন পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে।’
সম্প্রতি ফ্রান্সের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি ফ্রান্স প্রশাসনের নজরে আসার পর পরই তাদের কর্তব্য ছিল, বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া। রাষ্ট্রীয়ভাবে বাক-স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা বিষয়ক আইন প্রণয়ন করা। কিন্তু তারা তা করেনি বরং নবী অবমাননার বিষয়টিকে বাক-স্বাধীনতার অধিকার গণ্য করে কুলাঙ্গার শিক্ষক নির্মিত ব্যঙ্গাত্মক কার্টুনগুলো রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়। যার দরুন গোটা মুসলিম বিশ্ব বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। শুরু হয় বিক্ষোভ-সমাবেশ, মিটিং-মিছিল প্রতিবাদী কার্যক্রম।’
পাশাপাশি তিনি ভারত প্রশাসনকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক ফ্রান্সের স্বপক্ষে দেয়া বিবৃতি ফিরিয়ে নেয়ার মধ্য দিয়ে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতির মূল্যায়ন করার প্রতি আহ্বান জানান।
মাদরাসায় আয়েশা সিদ্দিকা কাসেমুল উলুম এর প্রিন্সিপাল, রহমতের নবী শীর্ষক ফ্রান্স বিরোধী ক্যাম্পেইনের পৃষ্ঠপোষক, মুহতারামা ইফফাত নাদিম ক্যাম্পেইনের কর্মপন্থা সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের এ দশ দিনব্যাপী ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য হলো, ব্যাপক আকারে রাসূল সাল্লাল্লাহু সালামের হাদিস এর প্রচার-প্রসার ঘটানো। দৈনিক আমাদের এই প্লাটফর্ম এর পক্ষ থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিভিন্ন হাদিস উর্দু ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় প্রচার করা হবে।’
ফ্রান্সের পণ্য বয়কট এর আহ্বান জানিয়ে ইফফাত নাদিম বলেন , ‘যেহেতু ফ্রান্সে সরকারি মদদে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শানে অবমাননা করা হয়েছে, সুতরাং আমাদের ক্যাম্পেইনে ফরাসি পণ্য বয়কট এর পাশাপাশি এর বিপরীতে ভারত তৈরি পণ্যের পরিচিতি তুলে ধরা হবে।
তিনি আরও যুক্ত করেন, ‘মাদরাসার স্নাতক শিক্ষার্থীবৃন্দ কর্তৃক লিখিত বিভিন্ন হাদিস সম্বলিত প্রবন্ধ-নিবন্ধ সব ধরনের যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করা হবে। হাদিসের ব্যাপক প্রচারণার স্বার্থে সারাদেশের সকল স্নাতক শিক্ষার্থীদের পোস্টার ব্যানার তৈরি করনসহ নিজ নিজ পাড়া মহল্লায় মতবিনিময় সভা করার প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।’
এমডব্লিউ/