তারেক সাঈদ
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার মধ্য দিয়ে বিদায় নিলো রমজান। গননা শুরু হলো শাওয়ালের। রমজানের পরে ফযিলতপূর্ণ মাসগুলোর মধ্যে শাওয়াল অন্যতম। রমজানের রোজার পর শাওয়ালের ছয়টি রোযা রাখা মুস্তাহাব। রাসূল সা. নিজেও এই ছয়টি রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও এর ফজিলত শুনাতেন।
হাদিসের মধ্যে এসেছে, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, যারা মাহে রমজানের ফরজ রোযা রাখবে,অতপর শাওয়ালের ছয় রোজা রাখবে তারা সারা বছর রোযা রাখার সওয়াব অর্জন করবে। -মুসলিম শরিফ
এ রোজার ফজিলত সম্পর্কে রাসুল সা. আরো ইরশাদ করেন,যারা পবিত্র রমজানের রোজা রাখার পর শাওয়ালের আরো ছয়টি রোজা রাখবে তারা সেই ব্যক্তির মত হয়ে যাবে যে ব্যক্তি সদ্য তার মায়ের পেট থেকে দুনিয়াতে আগমণ করেছে।
অর্থাৎ শিশু যেমন পুত-পবিত্র তথা নিষ্পাপ, তার কোন গোনাহ নেই, যারা শাওয়ালের ছয় রোযা রাখবে তারা ও সেই নিষ্পাপ শিশুর মত হয়ে যাবে। তিরমিজি শরিফ
হজরত উবাইদুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত.তিনি বলেন, একদিন রাসুল সা. কে জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তখন রাসুল সা. বললেন,তোমার উপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে,কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখ এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখ, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। তিরমিজি শরিফ
এ হাদিসে বলা হয়েছে যে, রমজানের রোজা রাখার পর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখলে সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যাবে। এ সওয়াব এভাবে যে, আল্লাহ তায়ালা কুরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, যে একটি সৎকর্ম করবে, সে তার দশগুণ পাবে এবং যে, একটি মন্দ কাজ করবে, সে তার সমান শাস্তিই পাবে। বস্তুতঃ তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না। সূরা আনআম-১৬০
এভাবে রমজানের ৩০ রোজা এবং শাওয়ালের ৬ রোজা মোট ৩৬ রোজা দশ দিয়ে গুণ দিলে ৩৬০ রোযার সমান হয়ে যায়, আর ৩৬০ দিনে এক বছর। সুতরাং ৩৬ টি রোজায় সারা রছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।
শাওয়ালের ছয় রোজা শাওয়াল মাসেই শুরু করে শেষ করতে হবে। ধারাবাহিকভাবে ছয় দিনে ছয় রোজা রাখা যায়, আবার মাঝে ফাঁক রেখে পৃথকভাবে ও রাখা যায়। উল্লেখ্য যে, শাওয়ালের ছয় রোজার সওয়াব তারা পাবে যার রমজানের রোজা সঠিকভাবে পালন করেছেন। কারণ রমজানের রোজা ফরজ, আর শাওয়ালের রোজা হল মুস্তাহাব। মুস্তাহাবের সওয়াব তখনই পাওয়া যায যখন ফরজ পালন করা হয়।
মাহে শাওয়ালের এ ছয়টি রোযা মাসের যে কোন দিন রাখা যায়। মাসের শুরুতে রাখা যায়,আবার মাসের মধ্যে বা মাসের শেষে যেকোন সময় তথা যেকোন দিন রোজা রাখা যায়। যার যার সুযোগ-সুবিধা মত।
শাওয়ালের ছয় রোজা ধারাবাহিকভাবে একত্রে রাখা যায়, আবার বিরতি দিয়েও রাখা যায়। যেভাবেই রাখা হোক তা আদায় হয়ে যাবে এবং নির্ধারিত ফজিলতও লাভ হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ২/২১৫, ফাতহুল মুলহিম ৩/১৮৭।
-এটি