শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
কাল যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় মজলিসে দাওয়াতুল হকের ইজতেমা শেখ হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন: মজলিস মহাসচিব ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ৩১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৬২৩০ মসজিদে নববীর আদলে হবে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ: ধর্ম উপদেষ্টা খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত নতুন নির্বাচন কমিশনকে বিগত কমিশন থেকে শিক্ষা নিতে হবে: মুফতী ফয়জুল করীম লালপুরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল ও বাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ জনতার চেয়ারম্যান সৈয়দ তালহাকে সুনামগঞ্জ ৩ আসনে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা কুরআন-হাদিসের ভিত্তিতেই হতে হবে সংস্কার: বায়তুল মোকাররমের খতিব ইসলামী সঙ্গীত সম্রাট আইনুদ্দীন আল আজাদ রহ.-এর বাবার ইন্তেকাল

মুসলিম জাতির সমকালিন সমস্যা: ঐক্যেই মুক্তি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি নাজমুল হুদা নোমানী।।

মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক: বনাম তার কুকর্ম ও তার সৃষ্টির উপাদান; কে, কারা, কিভাবে দায়ী। কামাল সেই অভিশপ্ত প্রেসিডেন্ট ১। যিনি তুর্কি ইসলামী খিলাফতেকে বিলুপ্ত, বাতিল ঘোষণা করেন ১৯২৪ সালে,এবং মুসলিম খলিফা ও তার অনুসারিদের বহিষ্কার করেন,এবং তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেন৷

২। ইসলামী আইন,আদালত ব্যবস্হাকে পরিপু্র্ণরুপে বিলুপ্ত করেন ১৯২৬ সালে৷ ৩। মিরাসি সম্পত্তিতে নারী- পুরুষের সমান অধিকারের আইন করেন৷ ৪। মসজিদে আরবী ভাষায় আযান নিষিদ্ধ করেন৷

৫। তুরস্কে মেয়েদের জন্য ফরয পর্দা (চেহারা, হাত, পা, ব্যতীত পুরা শরীর ঢাকা) নিষিদ্ধ করেন, যার দরুন কোন মেয়ে মাথা, গলা, ইত্যাদি ঢাকতে পারতো না। ৬। নিজের নাম হতে মুস্তফা শব্দ বাদ দিয়ে কামাল আতাতুর্ক হয়ে যান৷

৭। ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা উদযাপন নিষিদ্ধ করেন৷ ৮। জুমার দিনের পরিবর্তে রবিবারকে সাপ্তাহিক রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করেন৷

৯। দেশের ভাষা হিসেবে আরবী হরফ নিষিদ্ধ করেন,ল্যটিন হরফ চালু করেন৷ ১০। সরকারী পদ গ্রহণে আল্লাহর নামে কসম তথা শপথ বাতিল করে দেশ ও দেশের প্রেসিডেন্টের নামে শপথ চালু করেন৷

১১। শত শত, হাজার হাজার আলেম- উলামা, মুফতী- ফকিহকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন,যারা তার আদর্শ ও কর্ম পদ্ধতির বিরোধীতা করেছিল।

১২। মৃত্যুর আগে ওসিয়ত করেন,যেন কোন মুসলিম তার জানাযা নামায না পড়ে৷ ১৩। ১৯২৩ সালে কামাল আতাতুর্ক পার্লামেন্টের ভাষনে বলেন,আমরা এখন বিংশ শতাব্দীর শিল্প বিপ্লবের আধুনিক যুগে বসবাস করছি,তাই আমরা এমন কিতাবের আইনকে মানতে পারবো না,যে কিতাব " ত্বীন এবং যায়তুন" এর কথা বলে, তার উদ্দেশ্য হল কুরআনুল কারিম।

১৪। মুহাম্মাদ শব্দ দেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে,যেন কেহ নিজের বা তার সন্তানাদি,নাতিদের নাম "মুহাম্মাদ" না রাখতে পারে৷

১৫। সে কুরআন নিষিদ্ধ করে। ১৬। মসজিদে নামায নিষিদ্ধ করে ১৭। মসজিদকে জাদুঘর বানিয়ে ফেলে। ১৮। মাদরাসা বন্ধ করে দেয়। ১৯। সকল প্রকার ইসলামী শিক্ষা বন্ধ করে দেয়। ২০। টুপি,পাগড়িসহ সকল প্রকার ইসলামী লেবাস নিষিদ্ধ করে দেয়।

২১। দাড়ি নিষিদ্ধ করে। ২২। শাইখুল ইসলামের অফিসকে বেশ্যালয় বানিয়ে ফেলে। ২৩। হজ্ব নিষিদ্ধ করে। ২৪। রোযা নিষিদ্ধ করে। ২৫। কুরবানি বন্ধ করে দেয়।

কামালকে কে, কারা, কিভাবে তৈরি করেছে:

তাকে তৈরি করেছে ইউরোপ,আমেরিকা, ইহুদী, মুনাফিকরা। কামালকে ইসলামের বিরুদ্ধে বিগড়িয়ে দিয়েছে আরব জাতীয়তাবাদের ধারক আমির, শেখরা,কারণ তারা তুর্কি খেলাফত এবং তুর্কি জাতির বিরুদ্ধে যত অপকর্ম করত তার সবকিছুতেই ইসলামের নাম সাইনবোর্ড ব্যবহার করত৷

তাকে বিগডানোর পিছনে আরও ভুমিকা রেখেছে দেশ, যুগের চাহিদা সম্পর্কে অজ্ঞ, অসচেতন, স্হবির, গোড়া, জড়প্রকৃতির, জাহেল নিমে মোল্লা আলম- উলামা, তারাও উপরের আমির- শেখদের মত নিজেদের স্বার্থে জনগণের মধ্যে ধর্মীয় কোন্দল বাধিয়ে রাখত।

ধর্মীয় ব্যবসা চাঙ্গা রাখার জন্য মতবিরোধপুর্ণ পরস্সর বিরোধী ওয়াজ- মাসয়ালাই বেশি বেশি দিত,আর এক ধর্মীয় মতাদর্শের জনগণকে অন্য ধর্মীয় মতবাদের জনগণের বিরুদ্ধে উসকে দিত,নিজেরা আলেম হয়ে ওয়াজের স্টেজে বা জুমা,ঈদ,খানকার ইসলাহী বয়ান- তাফসিরে অন্য আলেমকে গালি দিত,গীবত করত,জনগণকে ওয়াজের নামে নিজ দলের বাইরের মুসলমানদের বদনাম- কুৎসা শোনাত, আর নাম ও সাইনবোর্ড ব্যবহার করত ইসলামের৷ইসলামের নাম ও সাইনবোর্ড ব্যবহার করে তারা নিজেদের সব সুবিধা জনগণ হতে বাগিয়ে নিত,কিন্ত দেশ- জাতির উন্নতি- প্রয়োজন- সুবিধার সময় হারাম- নাজায়েজ ফতোয়া দিয়ে জীবনের চলার পথ আটকে দিত,এসব ফতোয়াবাজি আর ধর্ম,অধর্মের চাদাবাজি- ভোগবাজিতে জনগণকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।

ধর্মের নামে এসব নিয়ে তথকথিত মোল্লাদের দেশ- জাতির জীবনবিচ্ছিন্ন ছোটখাট মাসয়ালা নিয়ে ফতোয়াবাজি, বাহাসবাজি, গলাবাজি, গালিবাজি, ফেরকাবাজি, দলবাজি, ফেতনাবাজির আদর্শ, চরিত্র, কর্মকান্ড তাকে ইসলামের প্রতি ঘৃনার সৃষ্টি করে দেয় এবং বিগড়িয়ে দেয়৷

আরব জাতীয়তাবাদের ধারক আরব্য জাহেল শায়খ - আলেমরা তুর্কি খেলাফত,তুর্কি জাতির বিরুদ্ধে ফতোয়াবাজি করে কামালকে বিগড়িয়ে দেয়৷

আর এসব কিছু হয়েছে ইসলাম ব্যতীত নিজস্ব ও দলীয় ব্যাখ্যার বেড়াজালে আটকে পড়া দলান্ধ আলেমদের দলীয় মতাদর্শ,মতবাদ কায়েমের জন্য ক্ষুধার্ত হিংস্র দানবের ন্যায় পরস্পরে লডাইয়ের কারণে৷

সুপ্রিয় পাঠক: আমি,আপনি,বাংলাদেশের ওয়ায়েজ- বক্তা,দায়ী,পীর,আলেম- উলামারা এদেশের সাধারণ শিক্ষিত জনগণকে ইসলামের দিকে না ডেকে নিজেদের দলীয় মতবাদের ইসলামের দিকে আহবান করে ফতোয়াবাজি,দলবাজি,বাহাসবাজি( যা জুয়াবাজিরই একটি অংশ) করে জনগণকেবিগড়িয়ে দিচ্ছিনাতো?

আমাদের বর্তমান ভুমিকা দেশ-জাতির জন্য কি হওয়া দরকার ছিল,আর কি ফেরকাবাজি-দলবাজির ভুমিকা আমরা পালন করে যাচ্ছি।

আল্লাহর নেযাম:

এক আলেম অন্য আলেমকে, এক মুসলিম অন্য মুসলিমের যখন প্রকাশ্যে গীবত করবে,বদনাম করবে,মুসলমানের ইজ্জত নিয়ে প্রকাশ্যে ছিনিমিন খলবে,কুৎসা রটাবে,হিংসা করবে, গালাগালি করবে, এক মুসলিমের উপর অন্য মুসলিমের ঈমান- ইসলামের যে হুকুক রয়েছে তা আদায় করবেনা বরং নষ্ট করবে।

ঐক্য-শান্তি- শৃংখলা- সংহতি বিনাশ করবে (এসবই শিরকের পর জঘন্য কবিরা গুনাহ, যার সাপ্লাই দেয় জাহেল দলান্ধ আলেম,ভক্ষন করে জাহেল আওয়ামরা) তখনই ঐ জাতির উপর থেকে আল্লাহ তার রহমত- বরকত- কল্যাণ উঠিয়ে নেন,এবং তাদের উপর বিভিন্ন রকমের আযাব- গযব- বালামুছিবত নাযিল করেন।

তাই করোনার এই মুহুর্তে সকল মুসলিমের উপর সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান ফরয দায়িত্ব হল, দল- মত- বর্ণ- ভাষা- পেশা নির্বিশেষে সকল মুসলিমকে ক্ষমা করে কালিমার ভিত্তিতে ঈমানী ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে বুকে জড়িয়ে নেয়া,এবং সকল ভেদাভেদ-মতপার্থক্য ভুলে এক কালিমার একজাতিতে আবদ্ধ হয়ে আল্লাহর দিকে রুজু করে জাতীহিসেবে মাফ চাওয়া ও তওবা করাতেই নাজাত ও মুক্তি৷

كمال مصطفى أتا تورك" (1) ألغى الخلافة الإسلامية في تركيا عام 1924 وأخرج الخليفة وأتباعه وصادر أموالهم.(2) ألغى الشريعة الإسلامية بالكامل في تركيا عام 1926. (3) جعل الميراث متساوي بين المرأة والرجل (4) منع الأذان في المساجد باللغة العربية . (5) منع الحجاب في تركيا .(6) مسح من اسمه اس

লেখক: প্রধান মুফতি, মাকাযুল ফিকহ আল ইসলামি বাংলাদেশ।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ