মাওলানা হাফেজ আহসান জামিল।।
রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করা জগন্যতম পাপ। মহান আল্লাহ বলেন... وما كان لنبي ان يغل ومن يغلل يات بما غل يوم القيامه
কোন নবীর পক্ষে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করা অসম্ভব। এবং যে ব্যক্তি আত্মসাৎ করবে, সে কিয়ামতের দিন আত্মসাৎকৃত বস্তু সাথে নিয়ে উপস্থিত হবে। ( সুরা আলে ইমরান)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেন, একবার এক সফরে রসুল সা. এর মালপত্রের পাহারায় কিরকিরা নামক এক ব্যক্তিকে রাখা হয়। সে মারা গেলে রাসুল সা. বলেন, সে জাহান্নামী। লোকেরা তাকে দেখতে গিয়ে দেখতে পেল, সে একটি আল খেল্লা বা বস্তু আত্মসাৎ করেছে।
হযরত যায়েদ বিন খালেদ জুহানী রা. বলেন, খাইবারের যুদ্ধে এক ব্যক্তি কোন দ্রব্য আত্মসাৎ করে, পরে সে মারা যাবার পর রাসুল সা. তার জানাযা পরেননি। তিনি বলেন তোমাদের এ সাথীটি আল্লাহর পত্রের সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, আমরা তার জিনিসপত্র তল্লাশি করে দুই দিরহাম মূল্যের একটি রেশমী বস্তু পেলাম। যা যুদ্ধে ইহুদিদের কাছ থেকে হস্তগত হয়েছিল।
ইমাম আহমদ রহ. বলেন আত্মসাৎকারী ও আত্মহত্যাকারী ব্যতিত রাসুল সা. আর কারো জানাজা পরা থেকে বিরত থেকেছেন বলে আমার জানা নেই। রাসুল সা. অন্য হাদীসে বলেন, সরকারের পক্ষে আদায়কৃত সম্পদের একটা সুই বা সুতাও যদি করো কাছে থাকে, তহলে তা জমা দিয়ে দিবে। আত্মসাৎ করা থেকে বিরত থাকবে, কেননা আত্মসাৎকারী কিয়ামতের দিন নিদারুণ অপমান ও লাঞ্চনার শিকারে পরিনত হবে।
ইবনুল লাতাবিয়া নামক এক সাহাবীকে একবার যাকাত সদকা আদায়ের কাজে নিয়োজিত করা হয়। তিনি কিছু সদকার বস্তু আদায় করে রাসুল সা. এর কাছে উপস্থিত করেন। আর তিনি কিছু বস্তুকে দেখিয়ে বলেন এটা আপনাদের, আর কিছু বস্তুকে দেখিয়ে বলেন এটা আমাকে উপটোকোন হিসেবে দেয়া হয়েছে। একথা শোনা মাত্র রাসুল সা. মসজিদের মিম্বারে আরোহন করে আল্লাহর প্রশংসা করে, এ ভাষণ দিলেন। আল্লাহর কসম তোমাদের কেউ যেন বিনা অধিকারে কোন বস্ত গ্রহন না করে। তহলে কিয়ামতের দিন সে এ বস্তুকে বহন করে উপস্থিত হবে। যে ব্যক্তি সে দিন নিজের গারে চিৎকার রত উট, গরু, বা ছাগল বহন করে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে, তাকে আমি চিনব না। এর পর হাত উচু করে বললেন হে আল্লাহ আমিকি তোমার নির্দেশ পৌছিয়ে দিয়েছি?
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, রাসুল সা. আদায় কারিকে বলেছিলেন, তুমি যদি সরকারি আদায়কারী হয়ে না যেতে এবং ঘরে বসে থাকতে তাহলে কি কেউ তোমাকে উপটৌকোন দিত? ( বুখারী ও মুসলিম)
রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ এর বিষয়ে হযরত আবু হুরাইরা রা. বর্ণনা করেন, একদিন রাসুল (সা.) ভাষন দানকালে তিনি সে ভাষনে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাৎ করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করে, এরপর বলেন আমি কিয়ামতের দিন তোমাদের কাউকে এমন অবস্তায় দেখতে চাইনা যে, তার গারের ওপর একটা উট থাকবে এবং সেটা ডাকতে থাকবে। তখন এ ব্যক্তি আমাকে বলবে আমি তোমাকে কোন সাহায্য করতে সক্ষম নই। তোমাকে আমি আগেই আল্লাহর বিধান জানিয়ে দিয়েছে।
কিয়ামতের দিন আমি তোমাদের কাউকে এমন অবস্থায় দেখতে চাই না, গারের ওপর একটা ঘোড়া উচ্চ শুরুে ডাকতে থাকবে, এ ব্যক্তি আমাকে বলবে হে রাসুল আমাকে উদ্ধার করুন। আমি বলব আমি তোমার কোন সাহায্য করতে সক্ষম নই। তোমাকে পৃর্বেই আল্লাহর বিধান জানিয়ে দিয়েছি , তোমাদের কাউকে আমি কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় দেখতে চাইনা যে,তার গারে একটা ছাগল থাকবে, আর সে ছাগল উচ্চ শুরু ডাকতে থাকবে। তখন এ ব্যক্তি আমাকে বলবে রাসুল আমাকে উদ্ধার করুন।
আমি বলব তোমাকে কোন সাহায্য করতে সক্ষম নই। আমি আগেই তোমাকে আল্লাহর বিধান জানিয়ে দিয়েছে। আমি তোমাদের কাউকে এমন অবস্থা দেখতে চাইনা যে, তার ঘাড়ে চিৎকার রত কোন প্রানি থাকবে,এ ব্যক্তি আমাকে বলবে হে রাসুল আমাকে উদ্ধার করুন। আমি বলব আমি তোমার কোন সাহায্য করতে সক্ষম নই। আমি তোমার কাছে আগেই আল্লাহর বিধান জানিয়ে দিয়েছে। আমি তোমাদের কাউকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থা দেখতে চাইনা ,যে গারের ওপর কাপড় চোপরের বস্তু থাকবে। এবং সে আমাকে বলবে হে রাসুল আমাকে উদ্ধার করুন।
কিন্তু আমি বলব আমি তোমাকে কোন সাহায্য করতে সক্ষম নই। আমি তোমার কাছে আগেই আল্লার বিধান জানিয়ে দিয়েছে। আমি তোমাদের কাউকে কিয়ামতের দিন এমন অবস্থায় দেখতে চাইনা যে, তার গারে নীরব বস্তু সোনা রুপা থকবে। এবং সে বলবে হে রাসুল আমাকে রক্ষা করুন। কিন্তু আমি বলব আমি তোমাকে কোন সাহায্য করতে অক্ষম। আমি আগেই তোমার কাছে আল্লাহর বিধান পৌছিয়ে দিয়েছি। ( মুসলিম)
-এটি